্ঈশ্বরদী প্রতিনিধি ॥ মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন ও স্থানীয় অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে কিংবা রাজনৈতিক প্রভাবের জোরে ্ঈশ্বরদীতে রেলওয়ের জায়গা অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে এক শ্রেণীর লোক। কিন্তু দেখার কেও নেই। দীর্ঘদিন ধরেই এইসব জায়গা বেদখল হয়ে আছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিম জোনের একটি বড় জংশন ঈশ্বরদী। একদিকে ঈশ্বরদী থেকে গেছে খুলনা-গোয়ালন্দ ঘাট। অপরদিকে রাজশাহী-রহনপুর, জয়পুরহাট-হিলি হয়ে সৈয়দপুর-পাবর্তীপুর পর্যন্ত। আবার আরেকটি রেলপথ গেছে সিরাজগঞ্জ হয়ে টাঙ্গাইল-জয়দেবপুর ও ঢাকার কমলাপুর রেল স্টেশনে। ঈশ্বরদী পশ্চিম জোনের একটি গুরুত্বপূর্ণ জংশন হওয়ার কারণে এখানে গড়ে উঠেছে রেলের স্টাফ কোয়ার্টার। এখানে রয়েছে রেলওয়ের গুরুত্বপূর্ণ একটি ওয়ার্কশপ-লোকো সেড। এখানে স্টাফ কোয়ার্টার হওয়ার কারণে রেলওয়ের বহু জায়গা রয়েছে। সাধারণ রেল লাইনের দু’পাশে জায়গা থাকে। কিন্তু এখানে ব্যাপকভাবে স্টেশনের আশে-পাশে রেলের জায়গা পরিত্যাক্ত রয়েছে। আর এই সুযোগে কেও লিজ নিয়ে আবার কেওবা অবৈধভাবে প্রভাব খাটিয়ে রেলের জায়গা দখল করে রেখেছে। এ প্রক্রিয়া চলছে দীর্ঘদিন ধরেই। আজ পর্যন্ত রেলের বেদখল হয়ে যাওয়া এসব জায়গা উদ্ধারের কোন উদ্যোগ চোখে পড়েনি। চার মাস আগে ক্ষমতা নিয়ে রেল মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেন বলেছিলেন, রেলের বেদখল জায়গা উদ্ধার করা হবে। কিন্তু এই চার মাসের ব্যবধানে মন্ত্রীর পদত্যাগের কারণে সে পথও রুদ্ধ হয়ে গেলো।
রেলওয়ের জমিতে প্রতিযোগিতা করে গড়ে উঠছে স্থাপনা, মার্কেট, কৃষি খামার ইত্যাদি। বেহাত হয়ে যাচ্ছে কোটি কোটি টাকা মূল্যের শত শত একর জমি। আর এ কারণে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে রেলপথ। যে কোন মুহূর্তে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনাও।
পরিদর্শনকালে রেলওয়ের জমিতে গড়ে ওঠা এসব স্থাপনার অনেক মালিক দাবি করেছেন, তারা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লিজ নিয়ে এসব মার্কেট, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিগত স্থাপনা তৈরি করেছেন। ওখানে গড়ে ওঠা স্থাপনার এক মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই রেলওয়ের স্থানীয় ও ঊর্ধ্বতন অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে রেলওয়ের জমি দখল ও স্থাপনা তৈরির খেলা চলছে। মোটা অংকের ঘুষ দিলে রেলওয়ের যে কোন জমির লিজদার হওয়া যায়।
যদি এই অবস্থা হয় তাহলে রেলওয়ের বেদখলকৃত জমি উদ্ধারের কি হবে? কে করবে রেলওয়েকে অবৈধ দখলদারমুক্ত? এই প্রশ্ন এখন সকলের। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে বেদখলকৃত জমি উদ্ধারে ব্যবস্থা নেবেন এটাই আমাদের প্রত্যাশা।