মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) প্রতিনিধি ॥ শ্রেণীকক্ষের অভাবে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার সোনাখালী মুন্সী আবদুল কাদের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের খোলা আকাশের নিচে পাঠদান করতে হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, সূর্যের কড়া রোদের মধ্যে খোলা আকাশের নিচে বিদ্যালয়ের দক্ষিণ দিকের পুকুরের শাণ বাঁধানো ঘাটে পাঠদান চলছে। রোদের তীব্রতার মধ্যে সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের ইসলাম শিক্ষা পড়াচ্ছেন শিক্ষক। সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র মো. ইব্রাহিম ফরাজি বলেন, রোদের মধ্যে ক্লাস করতে খুব কষ্ট হয়। আবার বৃষ্টি এলে বিদ্যালয়ের বারান্দায় দাঁড়িয়ে ক্লাস করতে হচ্ছে। একই শ্রেণীর ছাত্র রিয়াজুল ইসলাম জানান, প্রতিদিন ঘাটে বসে তাদের সাধারণ বিজ্ঞান ও ইসলাম শিক্ষা করতে হয়। হাতে বই-খাতা নিয়ে ঘাটে ক্লাস করা খুবই কষ্টকর। লিখতে হয় খাতা হাতের ওপর রেখে!
নবম শ্রেণীর ছাত্রী অন্তরা রানী বলেন, গ্রীষ্মের সময় খোলা আকাশের নিচে আর বর্ষায় সামিয়ানা টানিয়ে ক্লাস করতে হয়। বিদ্যালয়ে ভর্তির পর থেকে আমি এ সমস্যা দেখে আসছি।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭৬ সালে এ বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। বর্তমানে ৬৭২ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। শিক্ষক রয়েছেন ১৫ জন। এবছর এসএসসি পরীক্ষায় একটি গোল্ডেনসহ তিনটি জিপিএ ৫ পেয়েছে। পাসের হার ৯০ শতাংশ। জেএসসি পরীক্ষায় ১২০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ১১২ জন। গত পাঁচ বছরে জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষায় ট্যালেন্টপুলসহ গড়ে চার-পাঁচটি বৃত্তি লাভ করার খ্যাতিও রয়েছে বিদ্যালয়টির।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল লতিফ সিকদার বলেন, শ্রেণীকক্ষের সংকটের কারণে বাধ্য হয়ে খোলা আকাশের নিচে পাঠদান করতে হচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীদের। বিদ্যালয়ের আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে সরকারি সহয়তা ছাড়া ভৌত অবকাঠামোর সমস্যা সমাধান করা সম্ভব নয়। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি তোতাম্বর হোসেন বলেন, ‘নতুন ভবন নির্মাণের তালিকায় একবার আমাদের বিদ্যালয়ের নাম ছিল। পরে অজ্ঞাত কারণে ওই তালিকা থেকে নামটি বাদ পড়ে।’ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সেলিম মিয়া জানান, সোনাখালী মুন্সী আবদুল কাদের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি। জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল সন্তোষজনক। তবে শ্রেণীকক্ষের সংকটের কারণে সেখানে খোলা আকাশের নিচে ও সামিয়ানা টানিয়ে পাঠদান করতে হচ্ছে। বিদ্যালয়টির ভৌত অবকাঠামোর সুবিধা দেয়ার ব্যাপারে সরকারি বরাদ্দ অগ্রাধিকার দেয়া হবে।
্এই যদি অবস্থা হয় তাহলে “শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড” এই কথাটির তাৎপর্য রইলো কোথায়?