দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ট্রাম্প-কিম সিঙ্গাপুরের বৈঠক নিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে নানা বিশ্লেষণ পাওয়া যাচ্ছে। ট্রাম্প-কিম বৈঠকে আসলে জিতলেন কে? কে কতোখানি এগিয়ে গেলেন তার বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।
সিঙ্গাপুরে কিম জং উনের সঙ্গে ঐতিহাসিক আলোচনা ও চুক্তি স্বাক্ষরের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, বৈঠক এতোটাই ভালো হয়েছে যা কেওই আশা করেননি। তবে অনেক বিশ্লেষক দেড় পৃষ্ঠার স্বাক্ষরিত দলিলটিকে `অস্পষ্ট ও সারবস্তুহীন` বলেও আখ্যায়িত করেছেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, উত্তর কোরিয়া একটি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা কেন্দ্র ধ্বংস করতে রাজি হয়েছে।
এই বিষয়ে বিবিসির বিশ্লেষক লরা বিকার বলেছেন, আমাদের বলা হয়েছে এটা হবে। তাই হয়তো আমাদের কেবলমাত্র `দেখা যাক কি হয়` বলে অপেক্ষা করতে হবে – যেমনটি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রায়ই বলে থাকেন।
উত্তর কোরিয়ার নেতার নিকট হতে পূর্ণাঙ্গভাবে পরমাণু অস্ত্র মুক্ত করার একটি প্রতিশ্রুতি পেয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।’
লরা বিকার বলেছেন যে, ‘এখানে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শব্দের অনুপস্থিতি লক্ষ করা যাচ্ছে। একটি হলো `রিভার্সিবল` – অর্থাৎ এমনভাবে পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত হতে হবে যাতে উত্তর কোরিয়াকে তারা ভবিষ্যতে আর পারমাণবিক সক্ষমতা ফিরে পেতে না পারে। আরেকটি হলো `ভেরিফায়েবল` – অর্থাৎ তথ্য-প্রমাণ যাচাই করার মাধ্যমে নিশ্চিত হতে হবে যে হ্যাঁ সত্যিই এটা হয়েছে। আমেরিকা এটা পাওয়ার জন্যই চাপ দিচ্ছিল। তবে দেড় পৃষ্ঠার দলিলে এই কথাটি নেই।’
ডোনাল্ড ট্রাম্প সংবাদ সম্মেলনে দলিলপত্রে নেই এমন কিছু খুঁটিনাটি প্রকাশ করে বলেছেন, পরমাণু অস্ত্র ত্যাগের ব্যাপারটি যেনো যাচাই করা যায়, কিম জং উন তাতে রাজী হয়েছেন।
হয়তো ভবিষ্যতে কোনও এক দিন ডোনাল্ড ট্রাম্প যে পরমাণু অস্ত্রমুক্ত উত্তর কোরিয়া চাইছেন – তা হয়তো পাবেন। তবে এখনও তা তিনি পাননি – বলছেন বিবিসির লরা বিকার।
কিম জং উন ট্রাম্পকে বলেছেন, তার হাতে যে যুদ্ধবন্দীদের মৃতদেহ রয়েছে তা ফেরত দেবেন। তাদের আত্মীয়স্বজন যারা যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেন তার জন্য এটি অবশ্য কিছুটা স্বস্তির খবর বটে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, তিনি আর ওই এলাকায় দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে সামরিক মহড়া চালাবেন না। এই মহড়াগুলোকেই মূলত কিম জং উন বলতেন উস্কানিমূলক। এখন ট্রাম্পও তাই বলছেন, আরও বলছেন যে, এগুলো খুব ব্যয়বহুলও বটে।
কোনও কোনও বিশ্লেষক এই অঙ্গীকারকে `মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ছাড় দেওয়ার শামিল` বলেও আখ্যায়িত করেছেন।
অবশ্য ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার ওপর হতে নিষেধাজ্ঞা এখনও পুরোপুরি উঠে যাচ্ছে না। কিম প্রতিশ্রুতি রক্ষা করছেন বলে দেখা গেলে পরে সেটি তুলে নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেছেন, তিনি কোনও রকম ছাড় দেননি।
তাই এখানে কে `উইন-উইন` হলো – অর্থাৎ দু`পক্ষই কি জিতেছেন? নাকি শুধুই জিতেছেন কিম জং উন? সে প্রশ্ন সবার মনেই ঘুরপাক খাচ্ছে!