দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রযুক্তি পণ্য রফতানি করে লাগামহীন মুনাফা অর্জনের পর চীন বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাড়িয়েছে। চীনে এমন একটি সেতু নির্মিত হয়েছে যা দিয়ে বানানো যাবে ৬০টি আইফেল টাওয়ার!
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, হংকং, ম্যাকাও ও মেনল্যান্ড চীনকে সংযুক্ত করে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র-সেতু বানিয়েছে চীন। এই সেতু বানাতে কত টন ইস্পাত লেগেছে তা শুনলে চোখ কপালে উঠার মতো অবস্থা হবে। তাহলে কী বিশেষত্ব রয়েছে এই সেতুর? কতোটাই বা এর দৈর্ঘ? সেটি কী আপনি জানতে চান? সত্যিই আজ জেনে নিন এমন একটি তথ্য।
চীন থেকে এবার খুব কম সময়ে সরাসরি চলে যাওয়া যাবে হংকং বা ম্যাকাও। এর মাধ্যম হলো সমুদ্র-সেতু। সেতুটির দৈর্ঘ প্রায় ৫৫ কিলোমিটার বা ৩৪ মাইল!
চীনের সরকারি সংবাদ মাধ্যমের এক খবরে বলা হয়, সেতুটি বানাতে প্রায় ৯ বছর সময় লেগেছে। প্রায় ৪ লক্ষ ২০ হাজার টন ইস্পাত দিয়ে বানানো সেতুটি নাকি কোনও রকম মেরামত বা সংস্কার ছাড়াই আগামী অন্ততপক্ষে ১২০ বছর ব্যবহার করা যাবে!
এই সেতুটি হংকং হতে দক্ষিণ চীনের ঝুহাই শহরকে সংযুক্ত করেছে। সেতু পেরিয়ে খুব কম সময়ের মধ্যেই পৌঁছে যাওয়া যাবে ম্যাকাও শহরে। এই সেতুটি ব্যবহার করে খুব কম সময়ের মধ্যে পার হওয়া যাবে পার্ল নদীর মোহনা।
প্রকল্পটির মুখ্য ইঞ্জিনিয়ার জাও ইয়ংগ্লিন এই বিষয়ে বলেছেন যে, সেতুটি বানাতে যতো ইস্পাত লেগেছে তা আইফেল টাওয়ারেরও ৬০ গুণ বেশি। অর্থাৎ ৬০টি আইফেল টাওয়ার বানানো যাবে। আমেরিকা, ব্রিটেন, সুইজারল্যান্ড, জাপান ও নেদারল্যান্ডসসহ ১৪টি দেশের দক্ষ কারিগরদের নিরলস প্রচেষ্টায় সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে।
সমুদ্রের নীচে ৬ দশমিক ৭ কিলোমিটার টানেল তৈরি করতে গিয়ে রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছিল বলে জানিয়েছেন জাও ইয়ংগ্লিন। তিনি আরও বলেছেন, ৮০ হাজার টন পাইপ একের পর এক জুড়ে সর্বাধুনিক ‘ওয়াটারটাইট টেকনোলজি’ ব্যবহারের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে এই সেতুটি।
এই বিশাল সেতুটি বানাতে খরচ হয়েছে প্রায় ১০ হাজার কোটি ইউয়ান। প্রতিদিন আনুমানিক ৪০ হাজারেরও বেশি গাড়ি যাতায়াত করতে পারবে এই সেতুটির উপর দিয়ে।
২০১৭ সালেই সেতুটি উদ্বোধনের কথা থাকলেও নানা কারণে সেটি আর হয়ে ওঠেনি। কবে সেতুটি জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হবে সেই বিষয়ে এখনও নিশ্চিত করে কিছু বলা হচ্ছে না।
এই বিশাল সেতুটি তৈরির সময় ১৯ জন কর্মীর মৃত্যু হয়। নিরাপত্তা নিয়েও উঠেছিল নানা প্রশ্ন। চীনের সরকারি গণমাধ্যম সূত্রে বলা হয়, সমুদ্র সেতুটির পরিকাঠামো ও নিরাপত্তার দিকটি বর্তমানে খতিয়ে দেখার কাজ অব্যাহত রয়েছে। পুরোপুরি সবুজ সঙ্কেত পাওয়ার পর সেতুটির উদ্বোধন করা হবে বলে জানানো হয়েছে।