দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিশ্ব স্বাস্থ সংস্থা বা World Health Organization (WHO) বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আবির্ভুত নতুন নতুন রোগগুলোকে বিচার বিশ্লেষণ করে আন্তর্জাতিক রোগের তালিকায় স্থান দিয়ে থাকে। সেই তালিকায় এবার স্থান পেতে চলেছে গেমিং ডিজঅর্ডার। বিশেষজ্ঞরা ইলেক্ট্রনিক গেমসের মধ্যে আসক্তির ঝুঁকি শনাক্ত করায় ‘গেমিং ডিজঅর্ডার’ নামে এ রোগ WHO এর ইন্টারন্যাশনাল ক্লাসিফিকেশন অব ডিজিজ এর (রোগের আন্তর্জাতিক স্বীকৃত শ্রেণীবিন্যাস, আইসিডি) ১১তম সংস্করণে স্থান পেতে চলেছে।
চলতি মাসেই আইসিডির ১১তম সংস্করণ প্রকাশ হবে। সম্প্রতি WHO এর মুখপাত্র তারিক জাসারেভিক জেনেভায় অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে বিষয়টি উপস্থাপন করেন । WHO এর বিশেষজ্ঞদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, ‘গেমিং ডিজঅর্ডার’ হল, “ডিজিটাল অথবা ভিডিও গেমিং প্লাটফর্মের একটি বিশেষ আচরণগত বৈশিষ্ট্য, যা মানুষের অন্যান্য কর্মকাণ্ডের তুলনায় ভিডিও গেমিংকে বেশি প্রাধান্য দেয়। এর আরেকটি লক্ষণ হিসেবে বলা যায়, নেতিবাচক পরিণতি ঘটার পরেও গেমস খেলা চালিয়ে যাওয়া বা গেমস খেলার পরিমাণ বেড়ে যাওয়া।” তাদের ভাষ্যমতে, “কোন ব্যক্তি যদি এক বছর ধরে গেমসের প্রতি অস্বাভাবিক আকর্ষণবোধ করেন, তবে তিনি এই ‘গেমিং ডিজঅর্ডারে’ আক্রান্ত বলে মনে করা হবে।”
লন্ডনের নাইটিংগেল হাসপাতালের টেকনোলজি এডিকশন স্পেশালিস্ট ড: রিচার্ড গ্রাহাম বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। বর্তমানে শুধু শিশুরায় নয় প্রাপ্ত বয়ষ্ক ব্যক্তিরাও ভিডিও গেমের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েছে। শিশুরা ভিডিও গেমের প্রতি আসক্ত হওয়ায় তারা ঘর থেকে বের হতে চাই না।, শারীরিক ব্যায়াম, খোলা পরিবেশে খেলাধুলা করা, পড়াশোনা এমনকি সময় মত খাওয়া দাওয়ার প্রতিও তাদের অনিহা সৃষ্টি হয়। যা পরবর্তীতে বড় ধরনের সমস্যার সৃষ্টি করে। গেমিং ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত ব্যক্তিরা পরাজিত হলে এমন সব আচরণ শুরু করে যার প্রভাব তার আশেপাশের ব্যক্তিদের উপরও পড়ে।
বিশ্বের অনেক দেশই গেমিং এর আসক্তি নিয়ে চিন্তিত। ইতিমধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার এমন আইন করেছে যাতে ১৬ বছরের কম বয়সী শিশুরা মধ্যরাত হতে ভোর ছটা পর্যন্ত অনলাইন গেম খেলতেই না পারে। এছাড়া জাপানে কেউ যদি একটি নির্দিষ্ট সময়ের বেশি গেম খেলে তাকে সতর্কবার্তা পাঠানো হয়। চীনে সেখানকার সবচেয়ে বড় ইন্টারনেট প্রতিষ্ঠান টেনসেন্ট শিশুরা কতক্ষণ গেম খেলতে পারে তার সময় বেঁধে দিয়েছে।