দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিশ্বের এই প্রথম নরওয়েতেই চালু হয়েছে ইলেকট্রিক ব্যাটারি চালিত বিমান, ফেরি সহ অন্যান্য যানবহন। নরওয়ে সরকার তাদের পুরো পরিবহন ব্যবস্থাকে বৈদ্যুতিক জ্বালানি নির্ভর ব্যবস্থায় রূপান্তরের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা সহ নানা সুবিধার কথা মাথায় রেখেই ২০২৫ সাল নাগাদ দেশটিতে বৈদ্যুতিক ব্যাটারি চালিত গাড়ি ছাড়া আর সব গাড়ি নিষিদ্ধ করা হচ্ছে।
বিমান, ফেরি, সহ সমস্ত পরিবহন এখন থেকে ইলেকট্রিক ব্যাটারিতেই চলবে। ইতিমধ্যে কিছু বিমান, ফেরি সহ কিছু যানবহন ইলেকট্রিক ব্যাটারিতে চলাচল শুরু করেছে। ২০৪০ সাল নাগাদ নরওয়ের সব স্বল্প দূরত্বের প্লেন ইলেকট্রিক ব্যাটারি দিয়ে চালানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। কিভাবে ইলেকট্রিক ব্যাটারি চালিত বিমান আকাশে উড়ে তা দেখার জন্য অসলো বিমান বন্দরের এক হ্যাঙ্গারে জড়ো হয়েছিলেন কিছু সাংবাদিক। আকারে ছোট এই বিমানটির ভেতর একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ ঢোকা এবং সীটে বসাটা যেন রীতিমত একটা লড়াই। নিজেকে অনেকটা ভাঁজ করে এর সীটে বসতে হয়। কিছুটা বাচ্চাদের পার্কের কোন রাইডে চড়ার মতো ব্যাপার। অথচ এটিই বিশ্বের সবচেয়ে অত্যাধুনিক বিমানগুলোর মধ্যে একটি।
এই বিমানটির ইঞ্জিনের শব্দ অন্য বিমানের মতো নয়। মনে হবে যেন কোন বড় ফ্যান ঘুরছে। আর এর ইঞ্জিন থেকে কোন ধোঁয়া বের হয় না। নরওয়ে সরকার মূলত ২০০ হতে ৩০০ কিলোমিটারের পথ পাড়ি দেয় এমন স্বল্প দূরত্বের ফ্লাইটগুলো ইলেকট্রিক ব্যাটারি চালিত বিমান দিয়ে পরিচালনার কথা ভাবছে। পরবর্তীতে আরো ব্যাপক পরিসরে তারা বিমান পরিচালনার জন্য কাজ করবে বলে জানান ইলেকট্রিক প্লেনের উদ্ভাবক টিনা টিমোজোয়েকি।
ইতোমধ্যে পশ্চিম নরওয়েতে ইলেকট্রিক ব্যাটারি চালিত ফেরি চলাচল শুরু হয়ে গেছে । এই ফেরিটিতে শব্দ বলতে গেলে শোনাই যায় না। যারা সাধারণত ফেরিতে চড়ে অভ্যস্ত তারা প্রথমে এই ফেরিতে উঠলে বুঝতেই পারবে না ফেরি চলছে কি না। স্টাইন ইয়োহানসন এরকম একটি ফেরির ক্যাপ্টেন। তিনি একটা মজার অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করেন। “কয়েক মাস আগে আমি আমাদের একটি পুরোনো ফেরিতে ওভারটাইম করতে যাই। সেই ফেরিটি ছিল ডিজেল ইঞ্জিন চালিত। এক সপ্তাহ আমি সেই জাহাজে ছিলাম। তারপর আমি এখানে এসে এই ব্যাটারি চালিত ফেরি চালাতে শুরু করলাম। তো শুরুতে আমার মনে হলো, আমি বোধহয় আমার ফেরির ইঞ্জিন স্টার্ট দিতে ভুলে গেছি। কারণ এই ফেরির ইঞ্জিন শব্দ এত কম করে। আমি আসলে ইঞ্জিন স্টার্ট দিতে ভুলিনি। আমি ভুলে গিয়েছিলাম যে এই ইঞ্জিনে আসলে প্রায় কোন শব্দই হয় না আর এই ইঞ্জিন থেকে কোন ধোঁয়াও বের হয় না।”
এছাড়া নরওয়েতে ইলেকট্রিক ব্যাটারি চালিত অনেক কার চলতে শুরু করেছে। বার্গেনের রাস্তায় উনিস ফেয়ারেন নামের একজন ব্যক্তি একটি ইলেকট্রিক কার চালান। নরওয়ের সরকার এই ইলেকট্রিক কার চালানোর জন্য তাকে বেশ ভালোই ভর্তুকি দেয়। তার সাধারণ যাতায়াত বিশেষ করে বাচ্চাদের স্কুলে আনা নেয়া কাজে তিনি এই কার ব্যবহার করেন। “এটি দামে সস্তা, এটির চালানোর এবং মেরামত করার খরচও বেশ কম। বিদ্যুৎ শক্তিকে পরিবহন খাতে কিভাবে কাজে লাগাতে হয় নরওয়ে তা বিশ্ববাসীকে দেখিয়ে দিয়েছে।