দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দুনিয়াটা বড়ই আজব। কে কখন কিভাবে কোন অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হন তা বোঝা মুশকিল। একজন ছাত্র। পড়ালেখার জন্য নাকি মাদকের মতো ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত! ঘটনাটি যুক্তরাজ্যের।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হ্যারি কাগজে কলমে অন্য আর দশজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর মতোই সাধারণ শিক্ষার্থী। যুক্তরাজ্যের অন্যান্য অনেক শিক্ষার্থীর মতো তিনি স্টুডেন্ট লোনও নিয়েছেন এবং সময় মতো সেই লোন পরিশোধের লক্ষ্যে তার নানা পরিকল্পনাও রয়েছে।
কিন্তু অবাক করার মতো বিষয় হলো, প্রতিদিন সন্ধ্যায় গড়ে ২০ জনের মতো গ্রাহককে মাদকদ্রব্য সরবরাহ করেন হ্যারি!
এই বিষয়ে বিবিসি বাংলাকে হ্যারি বলেছেন, অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়েই ব্যাপকভাবে মাদকের চল বিদ্যমান।কারও না কারও কাছ থেকে শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দের মাদক দ্রব্য সংগ্রহ করে থাকেন, তাই সেই কেও না কেও যদি আমি হই তাহলে ক্ষতি কী?
গতবছরের ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের অপরাধ গবেষণার তথ্য মতে, ১৬ হতে ২৪ বছর বয়সী প্রায় ১২ লাখ মানুষ বেআইনি মাদক গ্রহণ করে থাকে।
হ্যারি আরও জানান, আপনি যখন শিক্ষার্থী, তখন আপনার আশেপাশের প্রায় সবাইকেই দেখবেন কোনো না কোনো মাদকদ্রব্য গ্রহণ করছেই। তাই এই বাজারটা ধরতে পারা খুবই সহজ। হ্যারি`র এই পার্ট টাইম ব্যবসার প্রধান সমস্যা হলো এটি সম্পূর্ণ অবৈধ ব্যবসা।
বেআইনিভাবে কোকেন, এমডিএমএ বা ম্যাজিক মাশরুমের মতো ক্লাস এ মাদক সরবরাহ করার অপরাধে যুক্তরাজ্যে বিশাল অঙ্কের অর্থ জরিমানা বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের মাতো শাস্তিও হতে পারে। কেটামিনের মতো ক্লাস বি মাদকের ব্যবসার জন্য শাস্তি হতে পারে সর্বোচ্চ ১৪ বছরের কারাদণ্ড।
এই ঝুঁকি সম্পর্কে অবগত রয়েছে হ্যারি। তার ইচ্ছা হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের পাট চুকিয়ে ফেলার পাশাপাশি এই কাজও থামিয়ে দেবেন তিনি। হ্যারি মনে করেন যে, বয়সের সঙ্গে সঙ্গে মাদককে দূরে সরিয়ে জীবন গঠনের দিকেই মনোযোগ দেওয়া উচিত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে মাদক বিক্রি করলেও এর বাইরে আপাতত কোথাও মাদক সরবরাহের পরিকল্পনা নেই হ্যারি`র। তিনি জানিয়েছেন, নিজে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হওয়ায় অন্যান্য শিক্ষার্থীরাও তার কাছ থেকে মাদক কিনতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে থাকেন। অন্যান্য মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে লেনদেন করার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা যে ধরণের ঝুঁকি নিয়ে থাকে, তার ক্ষেত্রে তেমনটা মনে করে না শিক্ষার্থীরা।
শুরুতে অবশ্য হ্যারি মাদক সেবনকারী ছিল। নিজের ব্যবহারের মাদক বন্ধুদের কাছে মাঝেমধ্যে বিক্রি করতেন হ্যারি। আর বেশিদিন মাদক বিক্রেতা হিসেবে থাকতেও চান না হ্যারি। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার খরচ বহন করার জন্যই মূলত এই পথ বেছে নিয়েছেন হ্যারি!