দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বর্তমান সময়ে ক্ষমতা এমন এক পর্যায়ে গেছে যে, নিজ স্বার্থের জন্য বর্তমান সময়ের অনেক রাজনীতিকরা দেশের স্বার্থও যেনো বিসর্জন দিতে পারেন। কিন্তু এক সময় ছিলো যখন রাজনীতিকরা সবকিছু বিসর্জন দিতেন। যেমন চার টাকার জন্য মাহাত্মা গান্ধী নিজ স্ত্রীকেও ছাড় দেননি!
এনডিটিভি’র এক খবরে বলা হয়েছে, আশ্রমের জন্য দান করা ৪ টাকা জমা না দিয়ে নাকি নিজের কাছে রেখে দিয়েছিলেন মহাত্মা গান্ধীর স্ত্রী কস্তুরবা গান্ধী। সে কারণে নিজ স্ত্রীকে বিষোদগার করেছিলেন গান্ধী!
এই ঘটনাটি জানা যায় নবজীবন পত্রিকার ১৯২৯ সালের একটি প্রবন্ধ হতে। তাতে আমেদাবাদের আশ্রমের কয়েকজন আবাসিকের সমালোচনায় সরব হয়েছিলেন মহাত্মা গান্ধী। সেই তালিকায় নাম ছিলো তাঁর স্ত্রী কস্তুরবা গান্ধীও।
এই ঘটনাটি এমন যে সত্যের প্রতি তাঁর দায়বদ্ধতাকে প্রমাণ করেছেন। এই প্রবন্ধে স্ত্রী সম্পর্কে মহাত্মা বেশ কয়েকটি বিষয় প্রকাশ্যে এনেছিলেন। বলেছেন, তাঁর সংসার জীবনের প্রতি মোহের নানা কথা। ওই প্রবন্ধের এক স্থানে মহাত্মা কয়েকটি ঘটনার কথা উল্লেখ করেন। স্ত্রীর সেই সব আচরণ দেখে তখন তাঁর মনে হয়েছিল সেগুলি আশ্রমের আইন বিরুদ্ধ। সেরকমই কয়েকটি ঘটনার বিবরণ দেওয়া রয়েছে ওই প্রবন্ধে।
আজীবন অহিংসার বাণী প্রচার করে আসা মহাত্মা লিখেছেন যে, ‘দু’এক বছর আগে তিনি (কস্তুরবা) নিজের কাছে এক হাজার টাকা রাখেন। সেই সব টাকা বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে তাঁর কাছে এসেছিল। তবে আশ্রমের নিয়মানুযায়ী কোনো কিছুই নিজের কাছে রেখে দেওয়া যায় না।
এমনকি যেটা শুধু তাঁর জন্য এসেছে সেটাও নিজের কাছে রাখার কোনো নিয়ম নেই। তাহলে নিজের কাছে টাকা রেখে দেওয়া আইনবিরুদ্ধ কাজ। স্ত্রীর কাছে যে টাকা রাখা রয়েছে সে খবর মহাত্মা গান্ধী জানতে পারেন অদ্ভুতভাবে।
জানা যায়, আশ্রমে নাকি একদিন চোর আসে। চোর কিছুই নিতে পারেনি তবে তার জন্যই প্রকাশ্যে চলে আসে ঘটনাটি। তাই চোর আসার ঘটনাটা তাঁর কাছে সৌভাগ্যের বলে মনে হয়েছিল। অন্য একটি ঘটনার কথা রয়েছে তাঁর লেখায়। সেই ঘটনাও টাকা সংক্রান্ত। একবার আশ্রমে আসা এক ব্যক্তি কস্তুরবা গান্ধীকে চার টাকা দেন। দামে পাওয়া সেই চার টাকা আশ্রম অফিসে জমা না দিয়ে নিজের কাছেই রেখে দেন কস্তুরবা। স্ত্রীর এই আচরণ মহাত্মার কাছে প্রকৃতপক্ষে চুরিরই নামান্তর।
অপরদিকে ওই প্রবন্ধে গান্ধীজী শুধুই যে স্ত্রী কস্তুরবার সমালোচনা করেছেন তা কিন্তু নয়, এক জায়গায় লিখেছেন তাঁর আত্মত্যাগের কথাও।
তবে গোটা ব্যাপারটাতে অস্বাভাবিক কিছু দেখছেন না গান্ধীবাদী ভারতের বয়ষ্ক ব্যক্তি আয়াপ্পান পিল্লাই। জীবনে ১০৬টি বসন্ত পেরিয়ে আসা এই স্বাধীনতা সংগ্রামী ব্যক্তিত্ব ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বলেছেন যে, প্রকৃতপক্ষে গান্ধী ছিলেন সত্যের অবতার।