দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সংগীত জগতের কিংবদন্তি আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল আজ (মঙ্গলবার) ভােরে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নিইলাহি ওয়া…রাজেউন)। মরহুমের মরদেহ কাল শহীদ মিনারে নেওয়া হবে।
বাংলা সংগীত জগতের এক কিংবদন্তি আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল না ফেরার দেশে চলে গেলেন। আজ মঙ্গলবার (২২ জানুয়ারি) ভোর ৪.১৫ মিনিটে তিনি হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান। ইমতিয়াজ বুলবুলের ছেলে সামির আহমেদ এই তথ্যটি সংবাদ মাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।
বুলবুলের ব্যক্তিগত সহকারী রোজেন সংবাদ মাধ্যমকে জানান, “স্যার ভোর সোয়া ৪টার দিকে বাসাতেই মারা যান। তিনি নিজেই আমাকে ফোন দিয়ে জানান, ‘তাড়াতাড়ি বাসায় আসো, আমার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে।’
তারপর ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে আমি স্যারের বাসায় চলে যাই। তবে কোনো পালস পাইনি। পরে তাঁকে রাজধানীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাই। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসকরা তাকে সাড়ে ৫টার দিকে মৃত ঘোষণা করেন। স্যারের সঙ্গে আমি কোনো কথাই বলার সুযোগ পাইনি।”
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, আজ (২২ জানুয়ারি) রাজধানীর একটি হাসপাতালের মর্গে রাখা হবে শিল্পী আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের মরদেহ। আগামীকাল (বুধবার) সকাল ১১টায় তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে। সেখানেই তাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হবে। এরপর সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে সর্বস্তরের জনগণ আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলকে শেষ শ্রদ্ধা জানাবেন। তবে তাঁর জানাজার বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
সংগীত জগতের এই কিংবদন্তি আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল জন্মগ্রহণ করেন ১৯৫৭ সালের ১ জানুয়ারি। তিনি একাধারে গীতিকার, সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালকও ছিলেন। সত্তর দশকের শেষ লগ্ন হতে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পসহ সংগীত শিল্পে তিনি সক্রিয় ছিলেন।
আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল বেশ কয়েকটি রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মান পেয়েছেন। যার মধ্যে একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং রাষ্ট্রপতির পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন এই নক্ষত্র মানুষটি। ১৯৭১ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের মাঝামাঝি বুলবুলের হার্টে ৮টি ব্লক ধরা পড়ে। বুলবুলের শারীরিক অবস্থার কথা জানতে পেরে চিকিৎসার দায়িত্ব নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালকের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদলও বুলবুলকে দেখতে যান।
প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব নেওয়ার পর হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয় বুলবুলকে। সেখানে শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসকরা বুলবুলের বাইপাস সার্জারি না করে শরীরে রিং পরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তারপর চিকিৎসা শেষে মোটামুটিভাবে সুস্থ হয়েই বাসায় ফিরেন বুলবুল।