দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর প্রত্যাখ্যান সত্ত্বেও কলম্বিয়ার ভেনিজুয়েলা সীমান্তবর্তী শহর কাকাতায় পৌঁছেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ত্রাণবাহী লরি।
ভেনিজুয়েলার স্বঘোষিত প্রেসিডেন্ট জুয়ান গুইদোর অনুরোধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভেনিজুয়েলায় ত্রাণ পাঠালেও ওই সব ত্রাণ নিজেদের সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি অভিহিত করে সীমান্তেই আটকে দিয়েছে ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সমর্থিত সেনাবাহিনী।
গত পরশু (বৃহস্পতিবার) পৌঁছানো ওই লরিগুলোতে খাবার এবং ওষুধ রয়েছে। কলম্বিয়ান পুলিশ মোটরসাইকেলে করে সেগুলোকে নিরাপত্তা দিয়ে ভেনিজুয়েলা পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছিলো।
তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই সহায়তাকে ‘অপমানের চেষ্টা’ আখ্যা দিয়ে ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো বলেছেন, ভেনিজুয়েলার মানুষ এতোটা ভিক্ষুক নয়।
স্থানীয় ত্রাণ সংস্থা এবং সংশ্লিষ্টদের সূত্রে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বলেছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওই ত্রাণ এখন কীভাবে ভেনিজুয়েলায় পৌঁছাবে, আদৌ পৌঁছাবে কিনা তাও নিশ্চিত নয়।
তবে নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ ও অর্থনৈতিক সংকটে মাদুরোর ওপর চরমভাবে ক্ষুব্ধ ভেনিজুয়েলার জনগণ। সে জন্য গত ৪ বছর ধরেই তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ করে আসছে দেশটির জনগণ।
এদিকে চলমান এই সরকারবিরোধী বিক্ষোভকে পুঁজি করে গত ২৩ জানুয়ারি নিজেকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন দেশটির বিরোধীদলীয় নেতা জুয়ান গুইদো।
২৮ জানুয়ারি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভেনিজুয়েলার রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন তেল এবং গ্যাস কোম্পানি পিডিভিএসএর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন।
চরম রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে এখন গৃহযুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে ভেনিজুয়েলা। সেই সঙ্গে রয়েছে মার্কিন আগ্রাসনের ভয়ও।
অপরদিকে সন্ত্রাস, অপরাধ ও দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র তো রয়েছেই সক্রিয়। নিজ বাসভূমিতে ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত দেখে দেশ ছাড়ছে দেশটির লাখ লাখ নাগরিক। একটু ভালোভাবে বাঁচার জন্য সীমান্ত পার হয়ে আশ্রয় নিচ্ছে প্রতিবেশী দেশ কলম্বিয়ায়।
উল্লেখ্য, ৪ বছর পূর্বে দেশটিতে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংকটের শুরুর পর হতে এখন পর্যন্ত অন্তত প্রায় ৩০ লাখ অধিবাসী দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। সেই হিসেবে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৫ হাজার মানুষ ভেনিজুয়েলা ছাড়ছে।
প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর বিরুদ্ধে পূর্বে চলমান বিক্ষোভকে পুঁজি করে গত ২৩ জানুয়ারি হঠাৎই নিজেকে দেশের অন্তর্বর্তীকালিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা করেন দেশটির বিরোধীদলীয় নেতা হুয়ান গুইদো।
কানাডা এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ সঙ্গে সঙ্গেই তাকে স্বীকৃতি দেয় আরও বেশ কয়েকটি দেশ। নতুন করে এই সংকট শুরু হওয়ায় আবারও দেশছাড়ার ঢল নেমেছে ভেনিজুয়েলাতে।