দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গ্রিনল্যান্ডে অত্যন্ত পুরু বরফের চাদরের নিচে লুকিয়ে থাকা আরও একটি সুবিশাল গর্তের (ক্রেটার) হদিস পাওয়া গেছে। এই গর্তটিও প্রায় ২২ দশমিক ৭ মাইল চওড়া।
শুধু এই সুবিশাল গর্তই নয়, নাসার বিজ্ঞানীরা গত বছরের নভেম্বরে এমন একটি বিশালাকার গর্তের হদিস পেয়েছিলেন। সেই গর্তটির আকার ছিল প্রায় প্যারিস শহরের সমান! হিয়াওয়াথা গ্লেসিয়ারের নিচে লুকিয়ে থাকা সেই গর্ত হতে ১১৪ মাইল দূরে এবার আরও একটি বিশাল গর্তের খোঁজ পাওয়া গেছে। এই গর্তটির চেহারা আগের থেকেও অনেক বড়। এই গর্তটিও প্রায় ২২ দশমিক ৭ মাইল চওড়া। আগের গর্তটি ছিল ১৯ মাইল চওড়া।
এই আবিষ্কারের খবরটি বেরিয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘জিওফিজিক্যাল রিসার্চ লেটার’-এর সাম্প্রতিক সংখ্যায়। পৃথিবীর বুকে আজ পর্যন্ত এই ধরনের যতোগুলো গর্তের খোঁজ পাওয়া গেছে, তারমধ্যে চেহারার দিক দিয়ে এই গর্তটি রয়েছে তালিকার একেবারে ২২ নম্বরে।
বিজ্ঞানীরা মনে করছেন যে, পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়া দৈত্যাকার উল্কার জন্যই মূলত এই গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। আজ হতে প্রায় ৮০ হাজার বছর পূর্বে এই গর্তের সৃষ্টি হয়েছিল বলে ধারণা বিজ্ঞানীদের।
নাসার গডার্ড স্পেস ফ্লাইট সেন্টারের গ্লেসিয়োলজিস্ট জো ম্যাকগ্রেগর সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, আমরা বিভিন্ন উপায়ে পৃথিবীকে পর্যবেক্ষণ করি। পৃথিবী সৃষ্টির এতো বছর পরেও এই ধরনের গর্তের খোঁজ পেয়ে আমরা উল্লসিত।
গত নভেম্বরে হিয়াওয়াথা গ্লেসিয়ারের নিচে বিশালাকার গর্তের আবিষ্কারের পূর্বে বিজ্ঞানীরা মনে করতেন গ্রিনল্যান্ড ও আন্টার্কটিকা এলাকায় বহু দূর অতীতের ঘটনার তথ্যপ্রমাণ পাওয়া কার্যত অসম্ভব ব্যাপার। কারণ হলো সেগুলো অত্যন্ত পুরু বরফের চাদরের তলায় ঢাকা পড়ে গেছে।
বরফের নিচে ডুবে থাকা গ্রিনল্যান্ড দেখতে আসলে কেমন? তা জানার জন্য মানচিত্র বানাতে গিয়ে গ্রিনল্যান্ড অঞ্চলে প্রথম গর্ত কিংবা ক্রেটারের সন্ধান পান বিজ্ঞানীরা।
তারপরই ওই অঞ্চল নিয়ে আরও উৎসাহিত হন বিজ্ঞানীরা। তারপর সর্বাধুনিক ও অত্যন্ত শক্তিশালী (হাই রেজোলিউশন) স্পেকট্রো-রেডিয়োমিটার যন্ত্রের সাহায্যে অনুসন্ধান চালান। আর তখন অনুসন্ধান চালাতে গিয়ে হিয়াওয়াথা গ্লেসিয়ারের হতে উত্তর-পূর্বে ১১৪ মাইল কিংবা ১৮৩ কিলোমিটার দূরে আরও একটি গোলাকার গভীর এলাকার সন্ধান পান বিজ্ঞানীরা। সেই এলাকা ঢুঁড়তে গিয়েই খোঁজ পাওয়া যায গ্রিনল্যান্ডে বরফের নিচে লুকিয়ে থাকা দ্বিতীয় এই গর্তটির।