দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মহিলাদের হাঁটু ব্যথা একটি বড় সমস্যা। এই হাঁটু ব্যথার কারণে ওঠা-বসা হতে শুরু করে কাজ-কর্মে চরম সমস্যায় পড়তে হয়। আজকে মহিলাদের হাঁটু ব্যথা ও এর প্রতিকার কিভাবে করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা করা হবে।
চল্লিশের ঊর্ধ্বে অনেকের হাঁটু ব্যথা হতে দেখা যায়। বিশেষ করে সকালে টয়লেটে বসলে অথবা হাঁটু ভেঙে নামাজ পড়ার সময়। এদের বেশির ভাগই মহিলা, বিশেষ করে মাসিক বন্ধ হওয়ার পরপরই হাঁটু ব্যথা শুরু হয়। এ সময় হাড় ক্ষয়জনিত সমস্যাও দেখা দিতে পারে। এর মূল কারণ হচ্ছে অস্টিওআর্থ্রাইটিস। এটি এক ধরনের বাত। আসলে আর্থ্রাইটিস হচ্ছে চলমান একটি রোগ, মাঝে মাঝেই এটি দেখা দেয়। রোগী যখন প্রথম প্রথম ব্যথা অনুভব করেন তখন হাঁটার সময় পায়ের মধ্যে ভারের ভারসাম্য এদিক-ওদিক করে ফেলে। এতে হাঁটুর জয়েন্টের মধ্যে একটা পজিশনাল ফল্ট বা অল্প ডিসপ্লেসমেন্ট দেখা দেয়। ফলে রোগী হাঁটু ভাঁজ করে বসতে পারে না, সিঁড়ি বা উঁচু-নিচুতে উঠতে বা বসতে কষ্ট হয়। অনেক সময় হাঁটুতে কট কট শব্দ বা টান টান অনুভব হয়। কিন্তু এর জন্য দরকার সঠিক ম্যানুয়াল ও ম্যানুপুলেশন ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা, যা রোগীকে হাঁটু ভেঙে বসতে সাহায্য করবে।
কি কারণে হাঁটু ব্যথা হয় : আর্থ্রাইটিসজনিত সমস্যায়, আঘাতজনিত সমস্যায়, স্পোর্টস ইনজুরি, যেমন- লিগামেন্ট বা টেনডন ইনজুরি, মিনিস্কাস ইনজুরি, প্যাটেলা বা ডিসপ্লেসমেন্ট ইত্যাদি। অনেক সময় কোমরের নার্ভ বা স্নায়ুর কারণেও হাঁটু ব্যথা হয়। আবার টিউমারজনিত কারণে। ক্যান্সারজনিত কারণেও হাঁটু ব্যথা হয় ।
ফিজিওথেরাপি : ম্যানুয়ালথেরাপি- যা রোগীকে ৭০ থেকে ৮০ ভাগ ভালো করে।
জয়েন্টের জোড়া সঠিক অবস্থানে আনা- একে বলা হয় মোবিলাইজেশন উইথ মুভমেন্ট চিকিৎসা।
ম্যানুপুলেশন থেরাপি : ডিপ ফ্রিকশন ও মায়োফেসিয়াল রিলিজ টেকনিক, যা হাঁটুর উপর ও নিচের মাংসপেশি ও লিগামেন্টকে নরম করে, ফলে হাঁটুর ব্যথা কমে জয়েন্ট পাতলা অনুভব হয়।
আইসোমেট্রিক বা স্ট্রেন্থেনিং এক্সারসাইজ ও স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ, যা হাঁটুর শক্তি ও রেন্জ অব মুভমেন্ট বৃদ্ধি করে।
ড্রাই নিডিলিং : এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হাঁটুর শক্ত মাংসপেশিকে নরম করা হয়। ফলে রোগী সহজে হাঁটু ভাঁজ করতে পারে, হাঁটু ভেঙে টয়লেটে বসতে ও নিচে বসে নামাজ পড়তে পারে।
করণীয় : হাঁটুর তাপমাত্রা যদি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয় তা হলে বরফ বা ঠাণ্ডা সেঁক দেবেন, আর হাঁটুর তাপমাত্রা যদি স্বাভাবিক থাকে তাহলে গরম সেঁক দেবেন।
হাঁটু ফোলা থাকলে হাঁটাহাঁটি কম করে পায়ের নিচে বালিশ দিয়ে উঁচু করে রাখুন, প্রয়োজনে নিকেপ ব্যবহার করুন। হঠাৎ ব্যথা হলে পূর্ণ বিশ্রামে থাকুন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
# লেখক : ডা. মোসা. ছাপিয়া আক্তার, কন্সালটেন্ট, ফিজিওথেরাপি ফাউন্ডেশন এক্স-১১, নুরজাহান রোড, মোহাম্মদপুর-ঢাকা।