দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শামীমা বেগম ইসলামিক স্টেটে যোগ দিয়ে যুক্তরাজ্য হতে সিরিয়া গিয়েছিলেন। সেখানে যাওয়ার এই সিদ্ধান্তের জন্যই শামীমার বাবা ব্রিটিশ জনগণের কাছে ক্ষমা চাইলেন।
শামীমার বাবা আহমেদ আলী বলেন, তার মেয়ে ‘বুঝে করুক কিংবা না বুঝেই করুক, সে ভুল করেছে।’ তবে তিনি মনে করেন যে যুক্তরাজ্যের উচিত শামীমা বেগমকে দেশে ফিরতে দেওয়া। সেখানে ফেরার পর শামীমাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।
শামীমা সিরিয়া হতে ব্রিটেনে ফেরার ইচ্ছা ব্যক্ত করার পর দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তার নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়ে দিয়েছেন। বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় জেলা সুনামগঞ্জে বসে মি. আলী বিবিসিকে যখন এই সাক্ষাৎকারটি দেন, তখনও শামীমা বেগমের শিশু সন্তানটি মারা যায়নি।
২০১৫ সালে ইসলামিক স্টেট বাহিনীতে যোগ দিতে মাত্র ১৫ বছর বয়সে শামীমা বেগম লন্ডন ছেড়ে সিরিয়ায় যান। ফেব্রুয়ারিতে টাইমস পত্রিকাকে এক সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় মিজ. বেগম ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।
তিনি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন যে, আইএসে যোগ দেওয়া নিয়ে তিনি মোটেও অনুতপ্ত নন, তবে “খিলাফতে”র দিন ফুরিয়ে আসছে বলে তার ধারণা।
সন্তান জন্মের কিছুদিন পরই বিবিসিকে মিজ বেগম বলেছিলেন, তিনি চান তার সন্তান যুক্তরাজ্যেই বেড়ে উঠুক। তবে নিউমোনিয়ায় ভুগে গত বৃহস্পতিবার তিন সপ্তাহর চেয়ে কম বয়সী শিশু জারাহ মৃত্যুবরণ করেছে।
যেহেতু মিজ. বেগমের নাগরিকত্ব বাতিলের পূর্বে শিশু জারাহ`র জন্ম, সেই কারণে তাকে ব্রিটিশ নাগরিক বলেই ভাবা হচ্ছে।
মেয়ের কর্মকাণ্ডের বিষয়ে তার বাবা মি. আলী বলেছেন, ‘সে অন্যায় করেছে, আমি তার বাবা হিসেবে সবার কাছেই ক্ষমা চাই।’ ‘সে যা করেছে, সেজন্য আমি অত্যন্ত দুঃখিত। ব্রিটিশ জনগণের কাছে আমার অনুরোধ তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হোক।’
৬০ বছর বয়সী আলী আরও উল্লেখ করেন, তার মেয়ে যখন সিরিয়া যায়, তখন সে প্রকৃতপক্ষে শিশু ছিলো। ‘সে অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছিল, অত কিছু বুঝতেই পারেনি। আমার মনে হয় কেও তাকে বুঝিয়ে-শুনিয়ে সেখানে নিয়ে গেছে’।
‘তবে, সে যা করেছে সে ভুল করেছে, সেটা সে বুঝতে পারুক বা নাই পারুক।’ তিনি ব্রিটিশ সরকার ও জনগণের কাছে তার মেয়েকে ফিরে আসার সুযোগ দেওয়ার এবং সে ভুল করে থাকলে সেজন্য শাস্তি দেওয়ার অনুরোধ জানান।
তার মেয়ে উগ্রপন্থার দিকে ঝুঁকে পড়ছে, তা তিনি জানতেন কিনা- গণমাধ্যমের এমন এক প্রশ্নের জবাবে আলী জানান, ‘তার কোনো ধারণাই ছিল না’ এই বিষয়ে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আলী বেশিরভাগ সময় বাংলাদেশেই থাকছেন। লন্ডনে গিয়ে দুই-চার সপ্তাহ থেকেই আবার চলে আসেন। তিনি বলেন, ‘আমি বেশি সময় লন্ডনে থাকিনা, যে কারণে তার (শামীমা) সম্পর্কে বেশি কিছু জানিনাও আমি’।
বিবিসিকে বাংলায় দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেছেন, মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি ভীষণভাবে চিন্তিত। মেয়ে উগ্রপন্থার দিকে কিভাবে চলে গেলো- সে বিষয়ে তার কোনো ধারণাই নেই।
একজনের পাসপোর্ট নিয়ে আরেকজন কিভাবে দেশত্যাগ করলো- ব্রিটিশ ইমিগ্রেশনের কাছে জানতে চান শামীমার বাবা। তবে গণমাধ্যম হতে তিনি দূরে থাকতে চান।