দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ একটি পরিত্যক্ত গাড়ি ব্যবহার করে সোলার সিস্টেম মাধ্যমে হাইব্রিট গাড়ি উদ্ভাবন করলো রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) একদল গবেষক।
মাত্র দুই বছরের প্রচেষ্টায় ৩টি সুবিধাসম্পন্ন দেশের প্রথম এই হাইব্রিড গাড়ি উদ্ভাবন করা হয় বলে সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন গবেষক দলের প্রধান ও যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক।
এই বিষয়ে ড. এমদাদুল হক বলেছেন, ‘উন্নত বিশ্বের দেশগুলো বর্তমানে জ্বালানি ব্যবহার কিভাবে কমানো যায় সেদিকেই বেশি নজর দিচ্ছে। কারণ হলো আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বিশ্বে যতো জ্বালানি রয়েছে সব শেষ হয়ে যাবে। তাই আমরা এমন কিছু উদ্ভাবনের চেষ্টা করে চলেছি যা জ্বালানি ব্যবহার বহুলাংশে কমাবে। আমাদের প্রচেষ্টা সফলও হয়েছে। কারণ এই গাড়ির বিশেষ বৈশিষ্ট্যই হলো জ্বালানি কম খরচ হবে। সেইসঙ্গে একটি পরিত্যক্ত গাড়িকে খুব সহজেই ব্যবহার উপযোগী করা সম্ভব হবে।’
উদ্ভাবিত হাইব্রিড গাড়ির সুবিধাগুলো হলো, একইসঙ্গে ইলেকট্রিক্যাল প্লাগ ইন, ইঞ্জিনসেবা এবং সোলার চার্জিং সিস্টেম। যে কারণে জ্বালানি শেষ হলেও গাড়ি চলবে। সোলার সিস্টেম থাকায় যানজটে গাড়ি আটকে থাকলেও ব্যাটারি চার্জ হবে। তাই শক্তি বা জ্বালানির অপচয় হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এছাড়াও রয়েছে প্লাগ চার্জিং সিস্টেমও। বিদ্যুতের সাহায্য নিয়ে চার্জ দেওয়া যাবে এটি।
এই বিষয়ে রুয়েটের শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, পোর্টেবল ডিভাইসের মতো এই প্রযুক্তিটি বর্তমানে যেকোনো গাড়ির সঙ্গেই ব্যবহার করা যাবে। মূলত একটি পরিত্যক্ত গাড়ি ব্যবহার করে হাইব্রিড গাড়িটি তৈরি করা হয়। রাজশাহীর একটি গ্যারেজ হতে এই গাড়িটি সংগ্রহ করা হয়। ব্যাটারি ব্যবহার করেও ঘণ্টায় ৮০ হতে ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত গতি পাওয়া সম্ভব। তাছাড়া একবার চার্জ হলে জ্বালানি ব্যবহার ছাড়াই একটানা ২৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত চলা সম্ভব হবে। একটি পরিত্যক্ত গাড়ি হতে হাইব্রিড গাড়ি রূপান্তর করে ব্যবহার উপযোগী করতে খরচ পড়বে মাত্র ২ হতে আড়াই লাখ টাকার মতো!
জানা গেছে, ২০১৪ সালের দিকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন হতে এই প্রকল্পটি পেয়েছিলেন রুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের এই শিক্ষক। তারপর ২০১৭ সালের আগস্ট হতে প্রকল্পটির মূল কাজ শুরু করা হয়। যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. এমদাদুল হকের সঙ্গে এই উদ্ভাবন কাজে অংশগ্রহণ করেন একই বিভাগের শিক্ষক ফজলুর রশীদ। এছাড়াও বিভাগের ২০১৩-১৪ বর্ষের শিক্ষার্থী মাহবুবুর রহমান, তানভির রহমান, ওবায়দুল হাসান, তরিকুল ইসলাম এবং ২০১৪-১৫ বর্ষের শিক্ষার্থী ইসমাইল হক ফরিদ কঠোর শ্রম দেন। গবেষকদের ব্যাটারি দিয়ে সহযোগিতা করেছে গেস্টন নামে একটি প্রতিষ্ঠান। এভাবেই উদ্ভাবন করা হয় হাইব্রিড গাড়ি।