দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গত চার বছরে সৌদি জোটের আগ্রাসনে ইয়েমেনের ১০২৪টি মসজিদ আংশিক কিংবা পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে বলে দাবি করেছে ইয়েমেনের শিয়া হুতি আন্দোলন।
গত ৪ বছরে সৌদি জোটের আগ্রাসনে ইয়েমেনের ১০২৪টি মসজিদ আংশিক কিংবা পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে বলে দাবি করেছে ইয়েমেনের শিয়া হুতি আন্দোলন।
তাদের দাবি হলো, বিধস্ত এসব মসজিদে কোরআন শরীফের অসংখ্য কপিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত মসজিদগুলোর মধ্যে অনেক প্রাচীন এবং ইসলামের স্মৃতিবিজড়িত স্থানও বিদ্যমান।
জানা যায়, আনসারুল্লাহ আন্দোলনের পররাষ্ট্রবিষয়ক কর্মকর্তা আদনান ক্বাফলা ইরানের রাজধানী তেহরানে ২৭তম আন্তর্জাতিক কোরআন প্রদর্শনীতে অংশ নিয়ে এসব তথ্য দিয়েছেন। ইরানের ইয়ং জার্নালিস্ট ক্লাবের ওয়েবসাইটের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য পাওয়া যায়।
সৌদি জোটের চালানো এসব হামলাকে ইতিহাসের সবচেয়ে নিকৃষ্ট অপরাধ হিসেবে আখ্যায়িত করে আদনান ক্বাফলা বলেন, সৌদির হামলায় ধ্বংস হওয়া অনেক মসজিদ বিভিন্ন সাহাবা এবং ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিগণ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইয়েমেন মানবিক দুর্যোগের শিকার হয়ে দেশটির অর্থনৈতিক অবস্থা বর্তমানে এক কঠিন আকার ধারণ করেছে। দি ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটির (আইআরসি) করা দুর্যোগপূর্ণ দেশগুলোর তালিকার শীর্ষে রয়েছে এই দেশটি।
ইয়েমেনের ব্যাপারে আইআরসির রিপোর্টে বলা হয় যে, প্রেসিডেন্ট আব্দে রাব্বি মানসুর হাদির পক্ষে সৌদি এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের নেতৃত্বাধীন বাহিনীর হামলায় দেশটি ধ্বংসের শেষপ্রান্তে এসে পৌঁছে গেছে।
গত বছরের শেষদিকে জাতিসংঘ সতর্ক করে জানিয়েছিলো, দেশটি মারাত্মক এক দুর্ভিক্ষের মুখে পড়তে চলেছে। বর্তমানে ইয়েমেনের প্রায় ২ কোটি ৪০ লাখ লোকের জন্য মানবিক সহায়তা প্রয়োজন। গত বছর সেখানে কলেরা মহামারী দেখা দিলে ১০ লক্ষাধিক মানুষ আক্রান্ত হয়।
জানা যায়, ২০১৫ সালে সৌদি জোটের আগ্রাসনের পর হতে প্রায় ২ কোটি শিশুর স্কুলে যাওয়া একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে। এসব শিশুর অধিকাংশই কেও শ্রমিক হিসেবে কাজ করছে, কেওবা আবার ভিক্ষা করছে। ঠিক এভাবেই ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে পৌঁছেছে এই দেশটি। অর্থনীতি সহ দেশটির সব কিছুই ধ্বংস হয়ে গেছে।
উল্লেখ্য যে, সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের সঙ্গে চলা সংঘাতের কারণে ইয়েমেনের অসংখ্য স্থাপনা, হাসপাতাল, স্কুল ও কারখানা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও দেশটির ৮৪ লাখ মানুষ চরম দারিদ্র ঝুঁকিতে রয়েছেন।