দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মানুষের একটি অঙ্গ যখন অকেজো হয় তখন অন্য অঙ্গগুলো দ্বিগুণ কর্মক্ষম হয়ে ওঠে- এটিই বোধহয় স্বাভাবিক একটি নিয়ম। এটি শুধু কথার কথা নয়, বিজ্ঞানও এই আপ্তবাক্য স্বীকার করে। আজ রয়েছে পা দিয়ে স্বপ্নপূরণের এক বিস্ময়কর গল্প!
দুনিয়ায় কিছু মানুষ জন্মে এই আপ্তবাক্যকে কাজে পরিণত করার জন্য। মেক্সিকোর আদ্রিয়ানা মেসিয়াস তেমনই একজন অবিস্মরণীয় নারী। অবিস্মরণীয় এই কারণে কারণ তিনি তার স্বপ্নপূরণের জন্য অনেক কিছুই করতে পারেন।
জন্ম হতেই দুই হাত নেই ৫১ বছর বয়সি আদ্রিয়ানার। যে কারণে হাতের কাজগুলো তাকে করতে হয়েছে পা দিয়েই। এভাবেই তিনি হাতের বিকল্প হিসেবে পা ব্যবহারে হয়ে উঠেছেন বিশেষভাবে পারদর্শী। পা দিয়ে লিখে তিনি স্কুল কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে তিনি ভর্তি হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে। আইনের মতো কঠিন বিষয়েও নিয়েছেন স্নাতক ডিগ্রি! নিজের ঘর গৃহস্থালীর কাজ এবং তিন বছরের মেয়েকেও তিনি মানুষ করছেন ওই পা দিয়েই!
তবে এতো কিছু পা দিয়ে করলেও আদ্রিয়ানার মনে একটা জমাট বাধা কষ্ট সব সময়ই ছিল। সেটি হলো একটি চাকরি না পাওয়ার কষ্ট। স্নাতক শেষ করেও একটি চাকরির জন্য তিনি আইনি প্রতিষ্ঠানগুলোর দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন। তবে হাত না থাকায় কোথাও চাকরি পাননি আদ্রিয়ানা।
এই না পাওয়া হতেই একটি ভীষণ জেদ চাপে আদ্রিয়ানার মনে। তিনি পণ করেন- এমন কিছু করে দেখাবেন যেটি অনেক সুস্থ-স্বাভাবিক মানুষ হাত দিয়েও করতে পারেন না। তিনি শুরু করেন বই লেখা। তিনি বেছে নেন ডিজাইনের কাজ। নিজের মনে জেদের যে আগুন তিনি জ্বালিয়েছিলেন তাতে ভর করে আদ্রিয়ানা বর্তমানে দুটোতেই সফল হয়েছেন। ইতিমধ্যেই ৩টি বই বের হয়েছে তার। গত এপ্রিলে মেক্সিকো ফ্যাশন উইকে পা দিয়ে তার ডিজাইন করা পোশাকের একটি বড় প্রদর্শনীও হয়েছে। এই প্রদর্শনীতে মডেলদের পাশাপাশি ৩ জন শারীরিক প্রতিবন্ধীও অংশ নিয়েছেন।
একটি সংবাদ সংস্থাকে আদ্রিয়ানা বলেন, ‘দুইহাত ছাড়া আমার বিশ্ববিদ্যালয় এবং চাকরি খোঁজার দিনগুলো ছিল সত্যিই হতাশাজনক একটি বিষয়। কেও যখন আমাকে চাকরিতে নিতে চাইতো না তখন আমি বেশ ভেঙে পড়েছিলাম। তবে আমি ওইসব ঘটনার কাছে কৃতজ্ঞ কারণ হলো আমাকে পা দিয়ে স্বাধীনভাবে বাঁচতে শিখিয়েছে।’