দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মনের মিল থাকলে বা একে অপরের প্রতি আকর্ষণ থাকলে তাদের মিল হবেই। যেমনটি ঘটেছে এই প্রেমিক যুগলের ক্ষেত্রে। ৭৫ বছর পর দেখা হলো হারানো প্রেমিক যুগলের!
হারানো প্রেমিক যুগলের দেখা হলো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ৭৫ বছর পর। ১৯৪৪ সালে অর্থাৎ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময় মার্কিন সেনা কর্মকর্তা কেটি রবিন্স পূর্ব ফ্রান্সের ব্রায়িতে একটি রেজিমেন্টে যুদ্ধে নিযুক্ত ছিলেন।
জার্মানির দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে সেই সময় জোট বেঁধে লড়াই করছিলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্স। ফ্রান্সের সেই ঘাঁটিতে থাকাকালীন তরুণ রবিন্স ১৮ বছর বয়সী ফরাসি মেয়ে জেনেই পিয়ারসন নি গেনেই এর প্রেমে পড়ে যান।
তবে তাদের দেখা হওয়ার মাত্র দুই মাসের মধ্যেই, পূর্ব ফ্রন্টের উদ্দেশ্যে কেটি রবিন্সকে তাড়াহুড়ো করে গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে হয়। সেই সময় একজন আরেকজনের থেকে আলাদা হওয়ার সময় তারা ভাবছিলেন যে তাদের আর বোধহয় কোনোদিন দেখা হবে না।
কেটি রবিন্স পরে জেনেইয়ের একটি ছবি তার কাছে সংগ্রহ করে রেখে দেন। তারপর দীর্ঘ ৭৫ বছর পেরিয়ে গেছে। তাদের দেখা হয়নি তবে জেনেইয়ের সেই শেষ স্মৃতি ছবিটি হাতছাড়া করেননি রবিন্স।
তারপর একদিন ফ্রান্সের একদল সাংবাদিক বিশেষ প্রতিবেদনের কাজে রবিন্সের সাক্ষাৎকার নিতে আসেন। সেই সময় ফ্রান্সের সাংবাদিকরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভেটেরান অর্থাৎ অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাদের নিয়ে প্রতিবেদনও তৈরি করছিলেন।
তাদের সঙ্গে দেখা হতেই ফ্রান্সের প্রচারমাধ্যম ফ্রান্স-টু এর সাংবাদিকদেরকে জেনেই-এর সেই ছবিটি দেখান রবিন্স। বলেন, তিনি ফ্রান্সে ফিরে গিয়ে জেনেইকে অথবা তার পরিবারকে খুঁজে বের করতে চান।
সাংবাদিকদের সঙ্গে এই সাক্ষাতের কয়েক সপ্তাহ পরেই রবিন্স ডি-ডে ল্যান্ডিং অর্থাৎ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া নরম্যান্ডি ল্যান্ডিং এর ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য ফ্রান্সে যান।
তিনিও ভাবতে পারেননি, তার জন্য কতো বড় বিস্ময় অপেক্ষা করে আছে ফ্রান্সে। রবিন্সকে চমকে দিতে, ফ্রান্সের ওই সাংবাদিকরা পূর্ব থেকেই সেই নারীকে খুঁজে বের করেন। তারপর মুখোমুখি করেন দুজনকে।
রবিন্সকে সাংবাদিকরা ওই সময় নিয়ে যান সেই রিটায়ার হোমে, যেখানে অপেক্ষায় ছিলেন তারই প্রেমিকা মিজ গেনেই। দীর্ঘ ৭৫ বছর পর দেখা হতেই তারা একজন আরেকজনকে জড়িয়ে ধরে আলিঙ্গন করেন, চুম্বন করেন। সেই সময় রবিন্সের গায়ে ছিল সামরিক পোশাক ও মিজ জেনেই কালো পোশাকে নিজেকে সাজিয়েছিলেন অত্যন্ত পরিপাটি করে।
পরে মিজ গেনেই সাংবাদিকদের বলেন যে, তিনি সবসময়ই রবিন্সের কথা মনে করতেন। আশা করতেন যে, একদিন রবিন্স নিশ্চয়ই ফিরে আসবেন।
নিজেদের পৃথক হয়ে যাওয়ার মুহূর্তটি নিয়ে সাংবাদিকদের সামনে স্মৃতিচারণ করেন মিজ গেনেই। তিনি বলেন, ‘রবিন্স যখন ট্রাকে করে ফিরে যাচ্ছিলেন, আমার মন এতোটাই ভেঙে পড়েছিল যে আমি ভীষণ কাঁদছিলাম। আমি আশা করেছিলাম যুদ্ধ শেষে সে হয়তো যুক্তরাষ্ট্রে আর ফিরে যাবে না।’
তবে বাস্তবে এই দীর্ঘ সময় তাদের একবারের জন্যও দেখা হয়নি। এই বিষয়টি নিয়ে আক্ষেপের কথাও জানান মিজ গেনেই।
সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘রবিন্স এতোদিন ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কেনো ছিল? আমার কাছে আরও আগে কেনো ফিরে আসেনি? আমি ভাবতে থাকি, যদি সে আরও আগে ফিরতো।’
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মিজ জেনেই পরে বিয়ে করেন। সেই সংসারে রয়েছে তার পাঁচ সন্তান। অপরদিকে রবিন্সও পরে বিয়ে হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিজের পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন তিনি।
This post was last modified on জুন ২৩, ২০১৯ 4:07 অপরাহ্ন
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে সম্প্রতি বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিপাইনের…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আসলে ২০২৫ সালের প্রযুক্তি–দুনিয়া কেমন যাবে, তা নিয়ে অনেক জল্পনা-কল্পনা…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফিল্মের মানুষদের নেতিবাচকভাবে উপস্থাপনের অভিযোগে ২০২১ সালে সেন্সর বোর্ড থেকে…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মধ্য আফ্রিকার দেশ চাদের রাজধানী এনজামেনায় প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে বোকো হারাম…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভাইরাল এক ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, হাতির পিঠে দড়ি দিয়ে আষ্টেপৃষ্ঠে…
দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারী ২০২৫ খৃস্টাব্দ, ২৫ পৌষ ১৪৩১…