দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এতো কম বয়সে কেও এতো বিশাল দুনিয়া জোড়া আলোড়ন সৃষ্টি করতে পারে তা মনে হয় বিশ্ববাসী আর কখনো দেখেনি। সেই বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টিকারী পাকিস্তানের সাহসী কন্যা মালালা ইউসুফজাই বলেছেন, একটি শিশু, একজন শিক্ষক, একটি কলম, একটি বই পৃথিবীকে বদলে দিতে পারে।
মালালা বলেন, তিনি নারী অধিকারের জন্য সংগ্রাম করছেন কারণ তারাই সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগের শিকার। প্রত্যেক শিশুর স্কুলে যাবার অধিকার নিশ্চিত করতে তিনি রাজনীতিবিদরে প্রতি আহ্বান জানান। হাতে বই ও আর কলম তুলে নেয়ার আহ্বান জানিয়ে মালালা বলেন, এগুলোই সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র। একটি শিশু, একজন শিক্ষক, একটি কলম, একটি বই পৃথিবীকে বদলে দিতে পারে।
গতকাল ১১ জুলাই মালালার ১৬তম জন্মদিনে জাতিসংঘ শিক্ষা বিষয়ক বিশেষ সম্মেলন আয়োজন করে। সারাবিশ্বের নারী অধিকার কর্মীদের প্রেরণা মালালা তার সম্মানে আয়োজিত এই সম্মেলনে আরো বলেন, তালেবানরা তাকে দমাতে পারবে না। জঙ্গিরা বই-কলমকেই ভয় পায়। তালেবান ভেবেছিল তাদের গুলিতে তিনি নিরব হয়ে যাবেন, কিন্তু তারাই ব্যর্থ হয়েছে। মালালা বলেন, আমি আমার জন্য নয়, যারা কথা বলতে পারে না তাদের জন্যই কথা বলব। দুর্বলতা, ভয়, আশাভঙ্গের দিন শেষ। শক্তি আর সাহস ছড়িয়ে পড়েছে। খবর বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের।
জাতিসংঘের শিক্ষা বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ব্রিটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন সম্মেলন উদ্বোধন করে বলেন, সম্মেলনে উপস্থিত তরুণরাই বিশ্বের ‘নতুন সুপারপাওয়ার’, তিনি শিক্ষার প্রসারে বাধা দূর করার আহ্বান জানান। সকল সমস্যা সমাধানে শিক্ষা ছাড়া অন্য কোন কিছুই জরুরি নয়। সম্মেলনে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন মালালাকে আমাদের ‘বীর ও চ্যাম্পিয়ন’ আখ্যায়িত করে বলেন, সে আমাদের অঙ্গিকার রক্ষা ও তরুণদের জন্য বিনিয়োগ ও শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছে। বান কি মুন পরে মালালার হাতে জাতিসংঘ সনদ তুলে দেন।
উল্লেখ্য, শিক্ষা ও নারী অধিকার নিয়ে কাজ করায় একনিষ্ঠ কর্মী মালালাকে তালেবানের আখড়া পাকিস্তানের সোয়াত উপত্যকায় গত বছর অক্টোবরে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে গুলি করে তালেবান। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে লন্ডনে নেয়া হয়। চিকিৎসা শেষে সেখানেই আবার স্কুলে যাওয়া শুরু করে মালালা। এখন লন্ডনের বার্মিংহামেই সপরিবারে বাস করছে মালালা। অক্টোবরে সেই হামলার পর গতকাল নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে দেয়া ভাষণই জনসম্মুখে তার প্রথম ভাষণ।