দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এক তথ্যে জানা গেছে, বিশ্বে প্রতি ৫ মিনিটে একজন করে সাপের কামড়ে মারা যান। সেই সঙ্গে বাকি চারজন সারা জীবনের জন্য পঙ্গুও হয়ে যায়। সেই হিসাবে প্রতিবছর বিশ্বে ৫৪ লাখ মানুষ বিষাক্ত সাপের কামড়ে প্রাণ হারান। অথচ এক ব্যক্তি স্বেচ্ছায় ২০০ বিষাক্ত সাপের কামড় খেলেন!
বিশ্বের যে কোনো বিষধর সাপের বিষকে অকার্যকর করে দেবে এমন অব্যর্থ ওষুধ তৈরির গবেষণায় নিজেকে উৎসর্গ করেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যের সাবেক ট্রাকচালক টিম ফ্রেডি।
তিনি ২০০ বারেরও বেশিবার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্বেচ্ছায় বিষধর সাপের কামড় খেয়েছেন! কমপক্ষে ৭০০ বার সাপের বিষ শরীরে ইনজেকশনের মাধ্যমে তিনি ঢুকিয়েছেন। এমনকি সাপের বিষের প্রতিক্রিয়ার ভিডিও করে তা ইউটিউবেও তিনি প্রকাশ করেছেন।
এমনই এক ভিডিওতে দেখা যায় যে, সম্প্রতি বিষধর একটি ব্ল্যাক মাম্বা সাপের পরপর দুটো কামড় খেয়েছেন ফ্রেডি। তারপর ক্যামেরার সামনে বর্ণনা করেছেন তার অভিজ্ঞতার কথা। সেই সময় তার হাত দিয়ে দরদর করে রক্তও ঝরছিল। এই সময় তিনি বলেন, ব্ল্যাক মাম্বা কামড়ালে সঙ্গে সঙ্গেই প্রচণ্ড ব্যথা শুরু হয়ে যায়। আপনার মনে হবে এক হাজার মৌমাছি যেনো একসঙ্গে আপনাকে কামড়িয়েছে। একটি মৌমাছির হুলে বিষের পরিমাণ থাকে সাধারণত মাত্র এক থেকে দুই মিলিগ্রাম।
তবে এই একটি মাম্বা কামড়ালে শরীরে ৩০০ হতে ৫০০ মিলিগ্রাম বিষ ঢুকে যেতে পারে আপনার শরীরে। কামড়ের পরপরই জায়গাটি সঙ্গে সঙ্গে ফুলে যায়। কতোটা বিষ ঢুকেছে ফোলার মাত্রা দেখেই আমি বুঝতে পারি। খুবই যন্ত্রণা হয় তখন। ইতিমধ্যে তার শরীর সাপের বিষ প্রতিরোধক হয়ে উঠেছে বলেও দাবি করেছেন টিম ফ্রেডি।
অপরদিকে টিম ফ্রেডির এমন কর্মকাণ্ডের তীব্র সমালোচনাও হচ্ছে বিশ্বময়। লিভারপুল স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনের ড. স্টুয়ার্ট এইনসওয়ার্থ এই বিষয়ে বলেছেন, বুঝতে পারি না কেনো কিছু মানুষ এমন কাজ করেন। প্রথমত এটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ একটি কাজ, তাছাড়া এটি অনৈতিক কাজও। এই ধরনের প্রক্রিয়ায় মানুষের মৃত্যুও হতে পারে। আমরা এই রকম মানুষের সঙ্গে কখনও কাজ করি না। সাধারণত নতুন কোনো ওষুধ গবেষণাগারে ইঁদুর কিংবা অন্য কোনো প্রাণীর ওপর প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। সেটি কার্যকর হিসেবে প্রমাণ হলেই কেবল ওই ওষুধ নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে তখন পরীক্ষা করা হয় সাধারণ মানুষের ওপর- তার আগে নয়।