দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রেমের সম্পর্ক কতোটা গভীর হতে পারে তা বাস্তবে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। যেমনটি ঘটেছে এই প্রেমিক-প্রেমিকার ক্ষেত্রে।
তাদের মধ্যে দীর্ঘদিনের প্রেম, ইচ্ছা ছিল সময়-সুযোগ বুঝে বিয়ে করবেন। তবে তাতে বাঁধ সাধে মরণব্যাধি ক্যান্সার। এখন হাতে সময় একেবারেই নেই, মৃত্যুও ঘনিয়ে আসছে। তবে প্রেমিক এতোদিনের ইচ্ছা অপূর্ণ রেখেই দুনিয়া থেকে বিদায় নেবেন, তাও মানতে পারছেন না প্রেমিকা। তাই শেষ পর্যন্ত হাসপাতালের বিছানায় মৃত্যুশয্যায় থাকা যুবকের সঙ্গে সেখানেই বিয়ে সেরে ফেললেন তিনি। সত্যিকারের ভালোবাসা বুঝি এমনই হয়ে থাকে!
সম্প্রতি ইংল্যান্ডের নর্দাম্পটনে ঘটেছে এমন একটি অনবদ্য ঘটনা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম মেট্রোর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রেমিকা লরার সঙ্গে সুখের সংসার সাজিনোর নারা পরিকল্পনা করেছিলেন গ্যারি স্মার্ট। স্বপ্নের মতোই চলছিল সবকিছু। সবাইকে নিয়ে স্বাড়ম্বরে আগামী বছর বিয়ে করার পরিকল্পনাও করেছিলেন এই প্রেমিক-প্রেমিকা।
কিন্তু বিপত্তি ঘটলো তাদের মধ্যে। হঠাৎ করেই একদিন বুকে-পিঠে প্রচণ্ড ব্যথা নিয়ে বাসায় ফেরেন গ্যারি। অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলো। এই সময় তার ওজন দ্রুত কমে যাচ্ছিল, কোনোভাবেই ঘুমাতে পারছিলেন না ৩৩ বছর বয়সী এই যুবক। চিকিৎসকরা গ্যারির বায়োপসি করান ও ফুসফুসে জমা তরল বের করেও দেন। পরে জানা গেলো, গ্যারির ফুসফুসে বাসা বেঁধেছে এক মরণব্যাধি ক্যান্সার।
হাতে আর সময় নেই মোটেও, যে কোনো সময় মৃত্যুর কাছে হার মানতে হবে গ্যারিকে। ইতিপূর্বে একদিন প্রেমিকাকে তিনি জানিয়েছিলেন, তিনি অবিবাহিত অবস্থায় মরতে চান না। সেই কথা ঠিকই মনে রেখেছেন লরা। তাই তো প্রেমিকের শেষ ইচ্ছা পূরণে চটজলদি শুরু করে দিলেন বিয়ের আয়োজন।
সংবাদ মাধ্যমকে প্রেমিকা লরা বলেছেন, আমরা ভেবেছিলাম আরও কিছুদিন হয়তো সময় পাবো। তবে গত সপ্তাহে হাসপাতাল হতে জানানো হয়, আর মোটেও সময় নেই। তারা আমাদের বিয়ের আয়োজনেও যথেষ্ট সাহায্য করেছেন।
‘মা ও আমি আংটি কিনতে বাইরে গেলাম। ফেরার পর আমাদের বলা হয়, হাসপাতালের স্টাফরাই বাকি সব ব্যবস্থা করে ফেলেছে। তারা বলেছে, আমরা তোমাদের বিয়ের অনুমতি নিয়েছি এবং যাজকও জোগাড় করেছি। সন্ধ্যা ৭টায় তোমাদের বিয়ে হবে।’
ছবিতে দেখা যায় যে, ওই প্রেমিক-প্রেমিকা আংটি বিনিময় করছেন। গ্যারি হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে রয়েছেন, তার শরীরে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসের যন্ত্রও লাগানো হয়েছে। বিয়ের অতিথিদের জন্য বুফের আয়োজনও করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
নববিবাহিত লরা বলেন, অনেক আগেই আমাদের বিয়ে করা উচিত ছিল। দেখে মনে হচ্ছিল যে, সবাই বিয়ের শুভেচ্ছার সঙ্গে গ্যারিকে বিদায়ও জানাচ্ছেন। আমরাও জানতাম, সে চলে যাবে।
তবে দু:খের বিষয় হলো নব দম্পতির বিবাহিত জীবন অবশ্য বেশিক্ষণ দীর্ঘ হয়নি। বিয়ের মাত্র ৭ ঘণ্টা পরে নববধূকে পাশে রেখেই চিরবিদায় নেন গ্যারি স্মার্ট।