দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মাইকেলেঞ্জেলো বুনারোত্তি (Michelangelo) রেনেসাঁ যুগের শিল্পসাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ একজন শিল্পী। আজও রয়েছে তাঁর দুটি বিখ্যাত শিল্পকর্ম।
এই প্রথীতযশা শিল্পগুরু মাইকেলেঞ্জেলো তার মৃত্যুর ৪৫০ বছর পরেও তাঁকে এবং তাঁর শিল্পকর্ম নিয়ে আমাদের কৌতূহলের যেনো শেষ নেই। তিনি ছিলেন একাধারে একজন ভাস্কর, চিত্রকর, স্থপতি ও কবিও। তবে ভাস্কর ও চিত্রকর হিসেবেই বেশি জনপ্রিয় ছিলেন তিনি। তাই মাইকেলেঞ্জেলোকেই সর্বকালের সেরা একজন ভাস্কর হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। মাইকেলেঞ্জেলোর বিখ্যাত কয়েকটি শিল্পকর্মের মধ্যে রয়েছে বেশ কিছু শিল্পকর্ম। ব্যাক্কাস, ম্যাডোনা অফ দ্য স্টেপস, দোনি তোন্ডো, তাদেও তোন্ডো, ম্যাডোনা এ্যান্ড চাইল্ড, ক্রুশিফিকেশন অফ সেন্ট পিটার, মোজেস ইত্যাদি অন্যতম। যেগুলো বিশ্বের তাবত মানুষকে নাড়া দেয়। আজ এর মধ্যে দুটি শিল্পকর্মের কথা তুলে ধরা হচ্ছে। গতকালের মতো আজও দেখে নেই বিখ্যাত এই শিল্পগুরু মাইকেলেঞ্জেলোর বিখ্যাত দুটি শিল্পকর্ম।
পিয়েতা
পিয়েতা (Pietà) শিল্প কর্মটি হলো ইউরোপীয় নবজাগরণ কিংবা রেনেসাঁস যুগের মাইকেলেঞ্জেলোর সৃষ্ট এক অনবদ্য কীর্তি। এটি হলো তালিকার ৪র্থ তম স্থানে রয়েছে। কারারা-মার্বেলে তৈরি এই মূর্তিটি প্রকৃতপক্ষে ফরাসি কার্ডিনাল জ্যঁ দ্য বিলেরে’র নির্দেশে গির্জায় তাঁর স্মৃতিরক্ষার্থে একটি আলঙ্কারিক ফলক হিসেবে তৈরি করা হয়। তবে অষ্টাদশ শতাব্দীতে এই ভাস্কর্যটি তার বর্তমান অবস্থানে সরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছিলো।
এই বিখ্যাত ভাস্কর্যটির মূল বিষয়বস্তুই হলো, মা মেরির কোলে শায়িত যিশুর মৃতদেহ। এখানে প্রতিটি চরিত্র এতোটাই জীবন্ত যা সত্যিই বিষ্ময়ের সৃষ্টি করে। নবজাগরণের যুগের ইতালীয় ভাস্কর্যের অন্যতম মূল বৈশিষ্ট্যই হলো ফুটে ওঠা প্রতিটি চরিত্রর এর প্রাণময়তা, যা তাদেরকে মূলত বাস্তবের অত্যন্ত কাছাকাছি এনে ফেলে। পঞ্চদশ শতাব্দীর একেবারে শেষে নির্মিত এই অনুপম ভাস্কর্যটি বর্তমানে রোমে ভ্যাটিকান সিটির সেন্ট পিটার’স ব্যাসিলিকায় সংরক্ষিত রয়েছে।
সেন্ট পিটার’স ব্যাসিলিকা
এই বিখ্যাত শিল্পগুরু মাইকেলেঞ্জেলোর বিখ্যাত ৫টি শিল্পকর্মের ৫ম স্থানে রয়েছে ভ্যাটিকান সিটিতে অবস্থিত সেন্ট পিটার’স ব্যাসিলিকা (St. Peter’s Basilica)। এটি রেনেসাঁ কালের অন্যতম একটি সুবিশাল কীর্তি এবং যা এখনও পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে বড় গির্জা (Wikipedia)। সুবিশাল এই ব্যাসিলিকার অন্যতম কারিগর হলেন মাইকেলেঞ্জেলো বুনারোত্তি।
এই সেন্ট পিটার’স ব্যাসিলিকাকে আবার পাপাল ব্যাসিলিকাও বলা হয়ে থাকে। এই ব্যাসিলিকাটির কাজ সম্পূর্ণ হতে সময় লেগেছে ১০০ বছরেরও বেশি (১৫০৬-১৬২৬)। এই সময় কাজ করেছেন ডোনাতো ব্রামান্তে, ফ্রা জিওকন্দো, জুলিয়ানো দ্য সাঙ্গালো, রাফায়েল্লো সেনজিও দ্য আরবিনো (রাফায়েল), বাল্দাসারে পেরুজ্জি, আন্তনিও দ্য সাঙ্গালো ও মাইকেলেঞ্জেলো। যার মধ্যে মাইকেলেঞ্জেলোর অবদানই ছিলো সবচেয়ে বেশি। তিনি ছিলেন এই ব্যাসিলিকাটির প্রধান স্থপতি। যদিও ব্যাসিলিকাটির কাজ শেষ হওয়ার আগেই তিনি মৃত্যু বরণ করেন তবুও তিনিই মূলত একে এমন এক স্থানে পৌঁছে দেন যেখান থেকে খুব সহজেই ব্যাসিলিকাটির কাজ শেষ করা সম্ভব হয়েছে।