দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ তার সংসারে ছিল অভাব-অনটন। তা থেকে মুক্তি পেতে মাঝে মাঝেই লটারি কিনতেন। তবে প্রথম পুরস্কার জিতে কোটিপতি হয়ে যাওয়ার বিষয়টি ভাবেননি ভারতের পূর্ব বর্ধমানের কালনার বাসিন্দা ইন্দ্রনারায়ণ সেন।
এক কোটি টাকার পুরস্কার জিতে কার্যত ঘুম উড়ে গেছে তার। নিরাপত্তা চেয়ে দ্বারস্থ হয়েছেন পুলিশের। অন্যদিকে, কয়েক দিনের ব্যবধানে কালনায় দু’জন এক কোটি টাকার পুরস্কার জেতায় লটারি ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে আগ্রহ চরমে।
ভারতের কালনার সাতগাছি পঞ্চায়েতের সাহাপাড়ার প্রবীণ বাসিন্দা ইন্দ্র নারায়ণ জানিয়েছেন, হুগলির গুপ্তিপাড়ায় তার ছেলের ছোট একটি সোনার দোকান রয়েছে। সোনার গহনা বানিয়ে বিক্রি করেন ছেলে। তার রোজগার ও ইন্দ্র নারায়ণের পেনশনেই চলে সংসার। সেই সূত্রেই তিনি মাঝেমধ্যে গুপ্তিপাড়ায় যেতেন। ছেলের দোকানের পাশে একটি লটারির দোকান হতে টিকিট কিনতেন।
সেই অভ্যাসেই গত ২৯ ডিসেম্বর ৬০ টাকা দিয়ে লটারির টিকিট কেনেন ইন্দ্র নারায়ণ। লটারির ফল ঘোষণা কথা ছিল ওই দিন রাত ৮টায়। গুপ্তিপাড়ায় বসেই সেই টিকিট মেলাতে শুরু করেন ইন্দ্র নারায়ণ।
কয়েক বার মেলানোর পরে নিজের চোখকেও যেনো বিশ্বাস করতে পারছিলেন না ইন্দ্র নারায়ণ। প্রথম পুরস্কারের টিকিটের নম্বরটিই ছিলো তার। পরে কিছুটা স্থির হন তিনি। ততোক্ষণে এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে তার লটারি জেতার কথা।
এমন এক পরিস্থিতিতে বাড়িতে ফিরে আসেন তিনি। ইন্দ্র নারায়ণ জানিয়েছেন, আনন্দে ও টিকিটের সুরক্ষার চিন্তায় রাতে কার্যত দু’চোখের পাতা এক করতে পারেননি তিনি। সকালে ব্যাংক খুলতেই তিনি ছুটে যান স্টেট ব্যাংকে।
ব্যাংকের কর্মীরা তাকে টাকা পাওয়ার নিয়ম-কানুন জানিয়ে দেন। তবে তাতেও আশ্বস্ত হতে পারেননি। পরের দিন মঙ্গলবার কালনা থানায় হাজির হওয়ার পর নিরাপত্তার দাবি করেন তিনি। পুলিশ তাকে সব রকম সাহায্যের আশ্বাসও দেন। তার পর কিছুটা স্বস্তি পান ইন্দ্র নারায়ণ।
যদিও টাকা না পাওয়া পর্যন্ত দুশ্চিন্তা তার কাটবে না বলে জানিয়েছেন ইন্দ্র নারায়ণ। তিনি বলেছেন, স্ত্রী, দুই ছেলে ও বউমা এবং নাতি-নাতনিদের নিয়ে ৯ জনের বিশার সংসার তার। ছেলেদের রোজগার তেমন একটা নয়। আমার পেনশন ও ছেলেদের সামান্য রোজগারে কোনো রকমে সংসার চালাতে হয় আমাকে। এই টাকা পেলে সেই অবস্থা হতে কিছুটা হলেও সুরাহা হবে। খুব শীঘ্রই সংশ্লিষ্ট লটারি স্টকিস্টের সঙ্গে কথা বলে টাকা পাওয়ার জন্য যা যা করণীয়, সবই করা হবে বলে জানিয়েছেন লটারী বিজয়ী ইন্দ্র নারায়ণ।