দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঢাকাকে যেমন বলা হয় মসজিদের শহর ঠিক তেমনি স্লোভাকিয়াকে বলা হয়ে থাকে মসজিদের দেশ। অর্থাৎ মসজিদের দেশ হলো ‘স্লোভাকিয়া’।
স্লোভাকিয়া হলো ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে সর্বোচ্চ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির একটি দেশ। ছোট্ট দেশ স্লোভাকিয়া প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অনন্য লীলাভূমি বলা যায়। পাহাড়, দুর্গ এবং গুহায় পরিবেষ্টিত দেশ এটি।
এক তথ্যে জানা যায়, স্লোভাকিয়ায় প্রায় ২০০টি দুর্গ রয়েছে। দুর্গগুলো দেখার জন্য বিভিন্ন দেশ থেকে বহু পর্যটকরা ভিড় করেন এখানে। এছাড়াও ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুহা রয়েছে স্লোভাকিয়াতে। স্লোভাকিয়ার গুহাগুলো এতোটাই নয়নাভিরাম যে, এগুলোর ভেতরের অংশকে পৃথিবীর স্বর্গ বললেও খুব একটা ভুল হবে না।
এক তথ্যে জানা গেছে, স্লোভাকিয়ার আয়তন হলো ৪৯ হাজার ৩৫ কিলোমিটার। রাজধানী এবং বৃহত্তম শহর হলো ব্রাতিস্লাভা। ২০১৬ সালের আদমশুমারী মতে, দেশটির মোট জনসংখ্যা হলো ৫৪ লাখ ৩৫ হাজার ৩৪৩ জন। মধ্য ইউরোপের প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্র হলো এই স্লোভাকিয়া। দেশটির অফিসিয়াল নাম হলো স্লোভাক রিপাবলিক।
স্লোভাকিয়ায় ইসলামের আগমন ঘটে ১০ শতাব্দীতে। তৎকালীন মধ্য এশিয়ার কিছু গোত্র স্লোভাকিয়ায় যাওয়ার পর সেখানে ইসলামের যাত্রা শুরু হয়। দ্বিতীয় পর্যায়ে অটোমান তুর্কিরা যখন মধ্য ইউরোপের দিকে অগ্রসর হতে থাকে ঠিক তখন নতুন করে স্লোভাকিয়ায় ইসলামের যাত্রা শুরু হয়। অটোমানরা কসোভো এবং মোহাজ যুদ্ধে বিজয়ী হলে ইসলামের অভিযাত্রা নতুন গতি পায়। বসনিয়া হার্জেগোভিনা এবং বোগেনভিলের স্থানীয় কিছু জনগণ ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করে। স্লোভাকিয়া চেকোস্লোভাকিয়ার অংশ থাকাকালে উসমানিরা বিজয় করেছিল এবং কিছুদিন পর তারা মোরাভিয়ান অঞ্চলের রাজধানী বোর্নো অঞ্চলটিও জয় করেন। যে কারণে তারা সেখানে কিছু মসজিদ-মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। যদিও তুর্কিরা সেখানে দীর্ঘদিন ছিলেন না, তবে তাদের এই ভূমিকার কারণে অনেকেই ইসলামেও দীক্ষিত হয়েছিল।
জানা যায়, তুর্কিরা ইউরোপের মধ্যাঞ্চল ছেড়ে আসার পর মুসলমানরা সীমাহীন নির্যাতনের শিকার হন। সেই সময় তাদের মসজিদগুলোও সমূলে গুড়িয়ে দেওয়া হয়। মাদ্রাসাগুলোতে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় তালা। ১৭৮২ খ্রিস্টাব্দে ধর্মীয় সহনশীলতা আইন পাস না হওয়া পর্যন্ত অনেকেই দেশ ছেড়ে অন্যত্র চলে যান।
১৯১২ খ্রিস্টাব্দে অস্ট্রীয় সম্রাট ডিক্রি (ফ্রাঙ্কোস জোসেফ দ্বিতীয়) আইন পাস করেন এবং ইসলামকে একটি দেশীয় ধর্ম হিসেবে স্বীকৃতিও দেন। যে কারণে তখন মুসলমানরা নতুন করে ধর্ম পালনে সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি হয়। তখন দেশটিতে আবারও মসজিদ মাদ্রাসা নির্মাণ হতে থাকে। বেশ কয়েকটি সেবাসংস্থা প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি গঠিত হয় চেকোস্লোভাকিয়া ইসলামী ইউনিয়নও। পরবর্তীকালে চেকোস্লোভাকিয়া ইসলামী ইউনিয়ন বিভিন্ন প্রকাশনা এবং একটি সংবাদপত্র যারা নাম ইকো প্রকাশ করে। এমনকি চেকোস্লোভাকিয়ান ভাষায় পবিত্র কোরআনের ৩টি অনুবাদও প্রকাশিত হয় সেই সময়।