দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা সবাই ফুল ভালোবাসি। ফুল সৌন্দর্যের প্রতীক সেটি আমাদের সকলের জানা। তবে শখের এই ফুল বয়ে আনতে পারে ভয়ানক বিপদ। এক জরিপে দেখা গেছে, ফুলের মধ্যে থাকা বালাইনাশক শিশুদের রক্তচাপ বাড়িয়ে দিতে পারে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, সান ডিয়েগো’র একদল গবেষক এমন তথ্য জানিয়েছেন বলে এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। গবেষকরা বলেছেন, মা দিবস কিংবা অন্যান্য উৎসবে ফুলের ফলন বেশি পাওয়ার জন্য অতিরিক্ত বালাইনাশক প্রয়োগ করা হয়ে থাকে।
গবেষণাটি এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ জার্নালে সম্প্রতি প্রকাশিত হয়। ইকুয়েডরের ফুল-বাগান অঞ্চলের ছেলে-মেয়েদের ওপর এই গবেষণাটি করা হয়েছে।
গবেষণা অনুযায়ী দেখা যায়, ইকুয়েডর বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ফুল উৎপাদনকারী দেশ যারা উত্তর আমেরিকা, ইউরোপ এবং এশিয়ায় প্রচুর পরিমাণে ফুল রপ্তানি করে থাকে। বাণিজ্যিকভাবে গোলাপ উৎপাদনের জন্য তারা কীটনাশক, ছত্রাক নাশকসহ বিভিন্ন ধরনের বালাইনাশক ব্যবহার করে থাকেন। খুব কম লোকই শরীরের জন্যে এগুলোর ক্ষতিকর দিকগুলোর কথা জানেন বা বোঝেন।
এই বিষয়ে গবেষকদলের অন্যতম সদস্য, ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, সান ডিয়েগোর সহকারী অধ্যাপক সাইদ জোস আর সুয়ারেজ বলেছেন, ‘গবেষণায় শুধু এটিই পাওয়া যায়নি যে শিশুদের বসবাসকারী কৃষিভিত্তিক অঞ্চলে কীটনাশকের ব্যবহার বেড়েই যাচ্ছে, এটি শিশুদের উচ্চ রক্তচাপও বাড়িয়ে দিতে পারে।’
গবেষণাটি ৩১৩ জন ছেলে-মেয়ের ওপর করা হয়েছে, যাদের বয়স ৪ থেকে ৯ বছরের মধ্যে। তারা সবাই ফুল চাষকারী অঞ্চলে বসবাস করেন। মা দিবসের ১০০ দিন পর পর্যন্ত এসব শিশুকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিলো।
সাইদ সুয়ারেজ আরও বলেন, ‘মা দিবসের পর আমরা শিশুদের পর্যবেক্ষণ করলে দেখতে পাই যে, তাদের সিস্টোলিক ও ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ আগের চেয়েও অনেক বেড়ে গেছে। শুধু তাই নয়, প্রথম ৮১ দিনের মধ্যে যাদের প্রথমবারের মতো রক্তচাপ পরীক্ষা করা হয়েছিলো ৯১তম দিনে দ্বিতীয়বার এবং ১০০তম দিনে তৃতীয়বারের মতো পরীক্ষায় তা আরও বেড়ে যায়।’
পূর্ব গবেষণায় দেখা যায় যে, বালাইনাশক হৃদযন্ত্রের ওপর তেমন প্রভাব ফেলে না, তবে সাইদ সুয়ারেজের দাবি তারা কীটনাশক এবং ছত্রাক নাশকে ক্ষতিকর উপাদান পেয়েছেন। বিশেষ করে ফসফেট মিশ্রিত কীটনাশক এবং ছত্রাক নাশকে নাকি ক্ষতিকর বস্তু বিদ্যমান। এসব কীটনাশক এবং ছত্রাকনাশক ফুল রপ্তানির আগে স্প্রে করা হয় বলেও জানিয়েছেন গবেষক সাইদ সুয়ারেজ।
সাইদ সুয়ারেজ আরও বলেছেন, ‘নতুন ফলাফল এটি জানায় যে, বালাইনাশক স্প্রে কৃষিভিত্তিক এলাকার শিশুদের বেড়ে ওঠায় প্রভাবও ফেলে। তাই যেসব অঞ্চলে শিশুরা বসবাস করে সেসব অঞ্চলে বালাইনাশক স্প্রে অবশ্যই কমাতে হবে।’