দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দেশের মধ্যেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থান রয়েছে। যেগুলোতে আমরা ঘুরতে যেতেই পারি। খুব কম খরচে এইসব স্থানে বেড়ানো যায়। যেমন আপনি চাইলে যেতে পারেন জয়পুরহাটের আছরাঙ্গা দীঘিতে।
আছরাঙ্গা দীঘি অবস্থিত জয়পুরহাট জেলার ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নে। এটি প্রাচীন সভ্যতার ঐতিহ্যবাহী নিদর্শন। স্থানীয়দের মতে, রাজশাহী জেলার তাহিরপুরের আদি রাজবংশের জমিদার মৌন ভট্টের আমলে বৃষ্টিপাত কম হতো। সে কারণে কৃষি জমিগুলো চাষের প্রায় অনুপযোগী হয়ে উঠেছিলো। মৌন ভট্ট কৃষি জমিগুলোকে চাষের উপযোগী করার লক্ষ্যে নবম শতকের মাঝামাঝি সময় (আনুমানিক ৮১৭ খ্রিষ্টাব্দে) এই দীঘি খনন করেন। প্রায় ২৬ একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত আছরাঙ্গা দীঘির দৈর্ঘ্য ১০০০ ফুট ও প্রস্থ ১০৭০ ফুট। আছরাঙ্গা দীঘির পানি দিয়েই অগ্রহায়ন মাসে এই অঞ্চলে আমন ধানের চাষ করা হতো। পৌষের শুরুতে ধান পেকে লাল রং হওয়ার ক্ষেতগুলো দেখতে অদ্ভুত সুন্দর লাগতো। সেই কারণে এই উপজেলার নাম হয়ে যায় ক্ষেতলাল।
আছরাঙ্গা দিঘীর চারপাশে রয়েছে ৪টি বাঁধাই করা ঘাট এবং অসংখ্য সবুজ বৃক্ষরাজি। এই এলাকায় দীঘিকে ঘিরে বিভিন্ন লোককাহিনী প্রচলিত রয়েছে। জনশ্রুতি রয়েছে, কাকচক্ষু জলের মতো স্বচ্ছ এবং সুমিষ্ট হওয়ায় প্রাচীনকালে বিভিন্ন রোগের ঔষধ হিসেবে দীঘির পানি ব্যবহার করা হতো। এই দীঘিকে কেন্দ্র করে সনাতন ধর্মীয় বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানও আয়োজিত হতো সেই সময়। ১৯৯২ সালে আছরাঙ্গা দীঘিটি পুনঃখনন করে বনায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। সেই সময় প্রাপ্ত প্রায় ১২টি প্রাচীন মূর্তি বর্তমানে দেশের বিভিন্ন জাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে। শীতের সময় বিভিন্ন ধরণের অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত থাকে। এই দীঘির মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক পরিবেশে সময় কাটানোর জন্য অনেক দর্শনার্থীই ছুটে আসেন এখানে।
যাবেন কিভাবে
রাজধানীর গাবতলী, মহাখালী, আব্দুল্লাহপুর এবং শ্যামলী, কল্যাণপুর থেকে রাজশাহীগামী বিভিন্ন বাসে জয়পুরহাট জেলায় যাওয়া যায়। এছাড়া কমলাপুর রেলওয়ে ষ্টেশন থেকে নীলসাগর, একতা, দ্রুতযান এবং পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনে জয়পুরহাট যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। জয়পুরহাট জেলায় এসে বাসে ক্ষেতলাল উপজেলায় পৌঁছে স্থানীয় পরিবহণে ৯ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত আছরাঙ্গা দীঘিতে আপনি যেতে পারবেন।
থাকবেন কোথায়
জয়পুরহাট জেলায় বেশ কয়েকটি আবাসিক হোটেল রয়েছে যেমন- হোটেল সাদ, প্রমি হোটেল, হোটেল পৃথিবী, হক কনভেনশন সেন্টারের মতো বেশকিছু আবাসিক হোটেল এখানে রয়েছে।
খাবেন কোথায়
জয়পুরহাটে ক্যাফে অরেঞ্জ চাইনিজ রেস্তোরাঁ, হোটেল স্বাদ, বনলতা, রুচিটা রেস্টুরেন্ট ও প্রিন্স রেস্টুরেন্টের মতো বিভিন্ন মানের খাবারের হোটেল এবং রেস্টুরেন্ট রয়েছে জয়পুরহাটে।
জয়পুরহাটের অন্যান্য দর্শনীয় স্থানসমূহ
জয়পুরহাটের অন্যান্য দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে নান্দাইল দীঘি, বার শিবালয় মন্দির, হিন্দা-কসবা শাহী জামে মসজিদ ও শিশু উদ্যান ও রিসোর্ট।
তথ্যসূত্র: https://vromonguide.com