দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভ্রমণের স্বাদ যখন আপনি নিতে চান তখন দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের মধ্যেই আসা উচিত। পঞ্চগড়ের মহারাজার দিঘী ঘুরে এলে আপনি দেশের ইতিহাস সম্পর্কে জ্ঞানও অর্জন করতে পারবেন।
মহারাজার দিঘীটি পঞ্চগড় জেলা সদর হতে মাত্র ১৫ কিলোমিটার দূরে অমরখানা ইউনিয়নে অবস্থিত এক ঐতিহাসিক পুকুর। যার নাম দেওয়া হয়েছে মহারাজার দীঘি। ধারণা করা হয় যে, ভিতরগড় নামের ১৫০০ বছরের প্রাচীন ঐতিহাসিক এক রাজ্যে মহারাজা পৃথু রাজত্ব করাকালীন এই দীঘিটি খনন করেছিলেন।
বিশালায়তনের স্বচ্ছ পানির এই জলাশয়ের পাড়সহ মোট আয়তন প্রায় ৮০০ x ৪০০ গজ ও পানির গভীরতা প্রায় ৪৫ ফুটের মতো। গাছগাছালিতে ঘেরা মহারাজার দীঘির চারপাশে প্রায় ১০টি ঘাটও রয়েছে। কথিত রযেছে যে, পৃথু রাজা তার পরিবার পরিজন এবং ধনরত্ন সঙ্গে নিয়ে “কীচক” নামক এক নিম্নশ্রেণী দ্বারা আক্রমণের শিকার হয়ে তাদের সংস্পর্শে ধর্মনাশের ভয়ে এই দীঘিতে নাকি আত্নহনন করেছিলেন।
জানা গেছে, বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে প্রতিবছর মহারাজার দীঘির পাড়ে এক বিশাল মেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে। সেই সময় পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের আশেপাশের বিভিন্ন জেলা থেকেও দর্শনার্থীরা মেলায় বেড়াতে আসেন।
যাবেন কিভাবে
রাজধানী ঢাকার শ্যামলী, কলেজ গেইট বা গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে নাবিল, হানিফ কিংবা বাবলু এন্টারপ্রাইজে পঞ্চগড় যেতে পারবেন। বর্তমানে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস নামে নতুন একটি আন্তঃনগর ট্রেনও ঢাকা থেকে সরাসরি পঞ্চগড়ের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। পঞ্চগড়ে নামার পর পঞ্চগড় বাস টার্মিনাল হতে তেঁতুলিয়াগামী বাসে বোর্ড অফিসের সামনে নেমে রিক্সা কিংবা ভ্যান যোগে ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত দীঘি দেখতে যেতে পারেন।
আবার পঞ্চগড় জেলা সদর হতে পঞ্চগড়-তেঁতুলিয়া মহাসড়কের পূর্ব দিকের রাস্তা দিয়ে কিছুটা সামনে এগিয়ে গেলেই বিশাল মহারাজার দীঘি দেখতে পাবেন।
থাকবেন কোথায়
যে কোনো স্থানে বেড়াতে গেলে থাকার বিষয়টি অবশ্যই মাথায় রাখতে হয়। কারণ দিনে গিয়ে দিনে ঘুরে আসা সম্ভব নয়। তাই সেখানে থাকার বিষয়টি এসে যায়। পঞ্চগড় শহরে অবস্থিত আবাসিক হোটেলের মধ্যে হোটেল মৌচাক, হোটেল রাজ নগর, রোকখানা বোর্ডিং, হিলটন বোর্ডিং, হোটেল এইচকে প্যালেস, হোটেল প্রীতম, হোটেল ইসলাম প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য আবাসিক হোটেল রয়েছে। এছাড়াও সার্কিট হাউজ এবং জেলা পরিষদের ডাক বাংলোয় যোগাযোগ করে রাত্রিযাপন করতে পারেন ইচ্ছে করলে। যদিও সেটি অনুমতি সাপেক্ষ ব্যাপার।
খাবেন কোথায়
পঞ্চগড় শহরে বেশ কিছু খাবারের হোটেল রয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো হোটেল করোটিয়া, হোটেল নিরিবিলি, হোটেল মৌচাক, হোটেল হাইওয়ে ও হোটেল হামজার মতো ভালো মানের খাবার হোটেল।
ভ্রমণ সম্পর্কে কিছু পরামর্শ
# অযাচিত ঝামেলা এড়াতে দীঘির ডান দিকে অবস্থিত বনের গভীরে যাওয়া থেকে অবশ্যই বিরত থাকুন।
# পুরো জায়গাটি ঘুরে দেখতে ২ হতে ৩ ঘণ্টার মতো সময় লাগবে। তাই প্রয়োজনে সাথে শুকনো খাবার ও পানি পরিবহণ করুন।
পঞ্চগড়ের অন্যান্য দর্শনীয় স্থান
পঞ্চগড় জেলার দর্শনীয় স্থানের মধ্যে বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট, তেঁতুলিয়া থেকে কাঞ্ছনজঙ্খা, রয়েছে চা বাগান ওএবং রকস মিউজিয়াম হলো অন্যতম বেড়ানোর স্থান। দিঘী দেখার পর আপনি এইসব স্থান গুলো ঘুরে আসতে পারেন।
তথ্যসূত্র: https://vromonguide.com