দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চীনে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। এ পর্যন্ত ৪২৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আজ (মঙ্গলবার) দেশটির হুবেই প্রদেশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নতুন করে সেখানে আরও ৬৪ জনের মৃত্যু ঘটেছে।
হুবেই প্রদেশের স্বাস্থ্য কমিশনের তথ্য মতে, নতুন করে সেখানে আরও ২ হাজার ৩৪৫ জন এই ভাইরাসে আকান্ত হয়েছেন। যে কারণে এ পর্যন্ত মোট ১৯ হাজার ৫৫০ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ইতিমধ্যেই ২০টির বেশি দেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে।
চীনের বাইরে ফিলিপাইনে একজন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। চীনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তাদের জরুরি ভিত্তিতে মাস্ক, প্রটেক্টিভ স্যুট ও অন্যান্য চিকিৎসা সামগ্রী প্রয়োজন। এই বিষয়ে বিশ্ববাসীকে সহযোগিতার আকুতি জানিয়েছে চীন।
গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের মধ্যাঞ্চলীয় হুবেই প্রদেশের উহানে প্রথম করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়ে। মহামারির আশঙ্কায় বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ ইতিমধ্যেই চীন থেকে নিজ দেশের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছে। বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই ৩১৬ বাংলাদেশীকে দেশে ফিরিয়ে এনেছে। আরও ১৭১ জনের মতো আসার জন্য আবেদন করেছেন। তাদেরকে ভাড়া করা বিমানে করে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণের এই ভাইরাস ঠেকাতে চীন-ভ্রমণে কড়াকড়ি আরোপ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও জাপান।
ফিলিপাইনসহ অনেক দেশই এই ভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে চীন হতে আগতদের অন-অ্যারাইভাল ভিসা বন্ধ করে দিয়েছে। অনেক দেশের এয়ারলাইন্স চীনগামী প্রায় সব ফ্লাইট বন্ধ করে দিয়েছে। করোনা ভাইরাসের কারণে বিশ্ব থেকে এক প্রকার বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে চীন।
করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ
এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে শুরুতেই জ্বর ও শুষ্ক কাশি হতে পারে। এর সপ্তাহখানেক পর শ্বাসকষ্টও দেখা দিতে পারে। অনেক সময় নিউমোনিয়াও হতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে রোগীর অবস্থা বেশি খারাপ হওয়ায় তাদের হাসপাতালে ভর্তি করার প্রয়োজন পড়ে। তবে এসব লক্ষণ মূলত রোগীরা হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরই দেখা গেছে।
সেক্ষেত্রে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার একদম প্রাথমিক লক্ষণ কী বা আদৌ তা বোঝা যায় কি-না তা এখনও অজানাই রয়ে গেছে। তবে নতুন এই করোনা ভাইরাস যথেষ্ট বিপজ্জনক। সাধারণ ঠান্ডা-জ্বরের লক্ষণ হতে এটি মৃত্যুর দুয়ার পর্যন্তও নিয়ে যেতে পারে বা যাচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই ভাইরাসের নাম দিয়েছে ২০১৯ নভেল করোনা ভাইরাস।
বিশ্বের শিল্পোন্নত দেশগুলোর সংস্থা গ্রুপ অব সেভেন (জি-৭) ভুক্ত কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, জাপান, ইতালি, ব্রিটেন এবং যুক্তরাষ্ট্রে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে।
করোনাভাইরাস মোকাবিলায় যথাযথ সহায়তা না করে সতর্কতা জারি করে নাগরিকদের ফিরিয়ে নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আতঙ্ক ছড়াচ্ছে বলে সোমবার অভিযোগ করেছেন চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মঙ্গোলিয়া, রাশিয়া ও নেপাল ইতিমধ্যে চীনের সঙ্গে সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে। আধা-স্বায়ত্তশাসিত হংকং দুটি ছাড়া চীনের সঙ্গে সব স্থল সীমান্ত ইতিমধ্যেই বন্ধ করে দিয়েছে।