দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক॥ উচ্চ রক্তচাপ সব বয়সী মানুষকে স্বাস্থ্য ঝুঁকির মাঝেই রাখে। উচ্চ রক্তচাপ আপনার হৃদরোগ যেমন হার্ট এটাক, স্ট্রোক, কিডনি অকার্যকর করে দেয়া সহ নানান সমস্যা তৈরি করে। অনেকের নিজের অথবা পরিবারের বয়স্ক সদস্যদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে। আজকে আমরা আপনাদের জানাব কিভাবে আপনি প্রাকৃতিক উপায়ে উচ্চ রক্তচাপ কমাতে পারবেন।
বর্তমানে অনেকেই আছেন চিকিত্সা প্রযুক্তিতে তাদের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করেন। এক্ষেত্রে অনেকেই হয়ত তাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন তবে বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই ওষুধ সেবনের ফলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে যেমন, ইন্সমনিয়া, মাথা ঘোরা, পা সংকোচিত হয়ে আশা সহ আরও অনেক।
আসুন তাহলে জেনে নেয়া যাক আপনি কিভাবে প্রাকৃতিক উপায়ে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবেন।
হাটাহাটি করুনঃ হাইপারটেন্স রোগীদের জন্য উচ্চ রক্তচাপ কমাতে হাটা হাটি একটি আদর্শ প্রাকৃতিক উপায়। হাটা চলা করার ফলে আপনার হৃৎপিণ্ডে অক্সিজেন সরবরাহ বেড়ে যাবে, ফলে এতে রক্ত চাপ কমে আসবে। প্রতিদিন নিয়মিত হাটা হাটি করলে আপনি আপনার উচ্চ রক্তচাপ কমাতে পারবেন। এছাড়া আপনি প্রাণবন্ত ভাবে শ্বাস প্রশ্বাস নেয়ার মাধ্যমেও আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। অতএব প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় অন্তত ৫ মিনিট ধীরে ধীরে পরিষ্কার বাতাস পেটের ভেতরে টেনে নিয়ে আবার ধীরে ধীরে বের করে দিন।
বেশী বেশী আলু খানঃ নর্থ ওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোফেসর লিন্ডা ভেন হর্ন বলেন, যেকোনো মানুষের জন্য পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া স্বাস্থ্যসম্মত। এছাড়া পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার রক্ত সংবহন স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। আলুতে প্রচুর পটাশিয়াম থাকে। যাদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে তারা অবশ্যই খাবারের সাথে অতিরিক্ত লবন খাবেন না। লবন আপনার রক্তচাপ আরও বাড়িয়ে দিতে সহায়তা করে। যথাসম্ভব খাবারেও লবণ কমাতে হবে। দৈনিক ১৫০০ মিলিগ্রামের বেশি লবণ খাওয়া যাবে না।
কালো চকলেট খানঃ কালো চকলেট হৃদ রোগীদের জন্য বিশেষ উপকারী। কালো চকলেট শরীরের রক্ত সরবরাহ তন্ত্রে রক্ত সরবরাহ স্বাভাবিক ও সহজ করতে সাহায্য করে। এক গবেষণায় দেখা গেছে ১৩% উচ্চ রক্তচাপের রোগীর ক্ষেত্রে যারা চকলেট খান তাঁদের রক্তচাপ স্বাভাবিক হয়েছে।
সয়া জাতীয় খাবার খানঃ আপনি দৈনিক খাবারের পাশাপাশী সম্পূরক খাবার গ্রহন করতে পারেন। শর্করা জাতীয় খাবারের পরিবর্তে সয়াজাতীয় বা নিন্মচর্বির দুগ্ধজাত খাবার খেলে উচ্চ রক্তচাপ কমতে পারে।উচ্চ রক্তচাপের সঙ্গে হৃদরোগের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। তাই প্রাণিজ চর্বি যেমন ঘি, মাখন, মাংসের চর্বি না খাওয়াই ভালো।
মদ্য পান করবেন নাঃ হৃদ রোগ বা উচ্চ রক্তচাপের জন্য প্রধান ক্ষতিকর জিনিস হচ্ছে মদ। আপনার যদি উচ্চ রক্তচাপ থাকে তবে অবশ্যই মদ জাতীয় পানীয় পান করা থেকে বিরত থাকুন।
কফি পান করবেন নাঃ গবেষণায় দেখা গেছে প্রতিদিন ৫ কাপের বেশী কফি শরীরের জন্য বিশেষ ঝুঁকি বহন করে। এর আগে আমাদের আরেকটি প্রতিবেদনেও দেখিয়েছি দৈনিক ৫ কাপের বেশী কফি পান কিভাবে আপনার মৃত্যুর কারণ হতে পারে।
রক্ত চাপ কমাত চা উপকারীঃ এক গবেষণায় দেখে গাছে পরিমাণ মত চা পান করার ফলে মানুষের রক্তচাপ কমতে পারে। তবে দৈনিক ৩ কাপের বেশী চা পান করা যাবেনা।
কাজের চাপ কমানঃ মানুষ বেঁচে থাকতে হলে জীবিকার প্রয়োজন আছে তবে তা অবশ্যই প্রমিত হতে হবে। যত বেশী কাজ ততো বেশী প্রেসার। কাজের চাপে আপনার টেনশান বৃদ্ধি পায়। ফলে রক্ত চাপ বেড়ে যায়। সুতরাং কাজের চাপ কমালে আপনার রক্ত চাপও কমবে।
গান শুনতে শুনতে বিশ্রাম করুনঃ আপনি যদি মনে করেন আপনার প্রেসার বেড়ে গেছে তবে বিশ্রাম নিন। এক্ষেত্রে বিশ্রামের সময় যদি আপনার প্রিয় গান বাজে তবে আপনার মন অনেকটাই প্রশান্তিতে থাকবে এতে করে আপনার টেনশান কমবে এবং রক্ত চাপ স্বাভাবিক থাকবে। তবে গান শুনার ক্ষেত্রে ক্ল্যাসিক কিংবা ধীরলয়ের গান শুনুন। গান শোনার সময় শ্বাস-প্রশ্বাসে গতি আসবে রক্তচাপ কমবে।
ঘুমের মাঝে নাক ডাকা বন্ধ করুনঃ ঘুমের মধ্যে নাক ডাকার অভ্যাস থাকলে তা পরিহারের চেষ্টা করুন। নাক ডাকলে ঘুম কম হয়, রক্তচাপ বেড়ে যায়। এছাড়া আলাবামা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক দল এক গবেষণায় দেখতে পান নাক ডাকার ফলে মানব শরীরে এল্ডেস্টেরন হরমোন বেড়ে যায়, এল্ডেস্টেরন হরমোন আপনার রক্ত চাপ বাড়িয়ে দিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে।
সূত্রঃ দি টাইমস অফ ইন্ডিয়া।