দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। গত ১০ দিনে দেশটিতে কোভিড-১৯ মহামারীতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ।
আন্তর্জাতিক জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারসের তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, এই পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ৯ লাখ ২৫ হাজার ৩৮ জন। ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছে ৩৮ হাজার ৭৬৪ জন। তথ্য- এনডিটিভির।
এই পর্যন্ত সেখানে মারা গেছে, ৫২ হাজার ১৮৫ জন। মৃত্যুর এ সংখ্যা কেবলমাত্র হাসপাতালে মারা যাওয়া রোগীদের। অনেকেই বাড়িতেও অসুস্থ্য হয়ে মারা গেছেন। তাদেরসহ হিসাব করলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মৃতের সংখ্যা আরও অনেক গুণ বেশি হবে।
গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছে ১ হাজার ৯৫৪ জন। গত ১০ দিন ধরে গড়ে ২ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে।
যে কারণে ২৫ হাজার হতে ১০ দিনেই লাফিয়ে ৫২ হাজার ছাড়িয়ে গেছে মৃতের সংখ্যা। দেশটিতে করোনায় মৃতদের ৪০ ভাগ মানুষই মারা গেছে নিউইয়র্কে।
এর পরই রয়েছে নিউজার্সি, মিশিগান, ক্যালিফোর্নিয়া এবং ম্যাসাচুসেটস। করোনা ভাইরাসে যতো সংখ্যক মার্কিন নাগরিক মারা গেছে, সেটি কোরীয় যুদ্ধেও মারা যায়নি। ১৯৫০ হতে ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত চলা ওই যুদ্ধে ৩৬ হাজার ৫১৬ মার্কিন নাগরিক মারা গিয়েছিলো।
বিশ্বজুড়ে গত চার মাস ধরে তাণ্ডব চালাচ্ছে প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস। চীনের শিল্প নগরী উহান এই মহামারীর উৎপত্তিস্থল বলা হলেও এর প্রকোপ এখন ইউরোপ-আমেরিকাতেই সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে।
বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৯৭ হাজার ২৯৭ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ৬ হাজার ১৭৪ জনের মৃত্যু ঘটেছে।
ওয়ার্ল্ডোমিটারসের তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা ২৮ লাখ ৩১ হাজার ৪৫৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছে ১ লাখ ৫৬ হাজার ১৬ জন মানুষ। এই পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৮ লাখ ৬ হাজার ৮৯৪ জন।
উল্লেখ্য, বর্তমানে বিশ্বে শনাক্ত রোগী ১৮ লাখ ৩৪ হাজার ১৫৫ জন। তাদের মধ্যে ১৭ লাখ ৭৫ হাজার ৬৩২ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন, যাদের অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। ৫৮ হাজার ৫২৩ জনের অবস্থা গুরুতর, যাদের অধিকাংশই রয়েছে আইসিইউতে।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।