দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ নিউজিল্যান্ডে চলতি সপ্তাহে লকডাউন কিছুটা শিথিল করা হয়। প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে দেশটিতে গত ৫ সপ্তাহ ধরে কঠোরভাবে লকডাউন ছিল। তবে সম্প্রতি কড়াকড়ি কিছুটা কমিয়ে আনা হয়েছে।
গত সপ্তাহ হতে প্রায় ৪ লাখ মানুষ কাজে ফিরেছেন। শিশুরাও আগের মতো স্কুলে ফিরতে শুরু করেছে। একই সঙ্গে দোকান-পাট এবং ক্যাফেও খুলে দেওয়া হচ্ছে।
তবে করোনার প্রাদুর্ভাবের আগে জীবন-যাপন যেমন ছিল এখন তাতে কিছুটা পার্থক্য দেখা যাচ্ছে। লকডাউন শিথিল হলেও এখনও আগের মতো স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করা যাচ্ছে না মোটেও। কিছু নিয়ম মানতেই হচ্ছে নাগরিকদের।
দেশটির রাজধানী শহর ওয়েলিংটনের চেহারা যেনো চেনাই মুশকিল। একেবারেই নিস্তব্ধ হয়ে পড়েছে পুরো শহরটি। সেখানে খুব কম মানুষকেই রাস্তায় বের হতে দেখা যায়, এমনকি রাস্তায় গাড়ির সংখ্যাও একেবারে কম।
এই শহরের কফিও বেশ জনপ্রিয়। কিছু ক্যাফে পুণরায় চালু হয়েছে ইতিমধ্যেই। তবে বেশিরভাগই এখনও বন্ধই রয়েছে। যেগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে সেগুলোতেও কঠোর নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হচ্ছে।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে অ্যাপ ব্যবহার করে অর্ডার নেওয়া হচ্ছে। এতে করে ক্রেতাদের সঙ্গে সরাসরি সংস্পর্শের কোনো সুযোগই থাকছে না। উইলিংটনে বসবাসরত লোকজনের বেশিরভাগই সরকারি চাকরিজীবি। তাই লকডাউন শিথিল করা হলেও কাজে ফেরেননি অনেকেই।
উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে চীনের উহান শহরে প্রথম করোনার উপস্থিতি ধরা পড়ে। এরপর থেকেই তা বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। অপরদিকে করোনার প্রাদুর্ভাব ঘটার পর থেকেই কড়াকড়ি আরোপ করেছে নিউজিল্যান্ড।
দেশটিতে শুরু থেকেই কঠোর নিয়ম-কানুন জারি করা হয়েছে। বিদেশ ফেরতদের প্রথম থেকেই ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক করা হয়। করোনার প্রকোপ ঠেকাতে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে নিউজিল্যান্ড সরকার।
দেশটি সঠিকভাবে কঠোর লকডাউন ও কড়াকড়ি আরোপের কারণে এর সুফলও পাচ্ছে। অনেক দেশই যখন করোনার সঙ্গে লড়াইয়ে হিমসিম খাচ্ছে, ঠিক তখন নিউজিল্যান্ড করোনা পরিস্থিতি ভালোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছে বলেই মনে হচ্ছে।
দেশটিতে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১ হাজার ৪৭৬ এবং মারা গেছে মাত্র ১৯ জন। ইতিমধ্যেই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ১ হাজার ২৪১ জন।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।