দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ নিরীহ প্রাণী বাঁদুর সারাদিন অন্ধকার স্থানে ঘুমায় ও রাত হলেই শিকার ধরে আর তার রক্ত চুষে খায়। মানুষের রক্তসহ বছরে অন্তত ২৫টি গরুর রক্ত খায় নিরীহ প্রাণী ভ্যাম্পায়ার!
তবে পার্থক্য শুধু এটাই যে, এই ভ্যাম্পায়ার দেখতে মানুষের মতো নয়, অনেকটা বাদুড়ের মতোই। এই প্রাণীটি ভ্যাম্পায়ার ব্যাট বা রক্তচোষা বাদুড় নামেই পরিচিত। মূলত তিন প্রজাতির বাদুড়কে সাধারণভাবে ভ্যাম্পায়ার ব্যাট বলা হয়ে থাকে। এই নামকরণের কারণ হলো, এরাই একমাত্র স্তন্যপায়ী প্রাণী যারা খাদ্য হিসেবে শুধুমাত্র জীবিত প্রাণীর উষ্ণরক্ত পান করে থাকে। এই তিন প্রজাতির বাদুড়ের সঙ্গে অন্যান্য বাদুড়ের খুব কমই মিল দেখা যায়। ধারনা করা হয়ে থাকে যে, এই রক্তখেকো প্রাণীদের বিবর্তন একবারই হয়েছিল ও তারা সবাই একটি সাধারণ পূর্ব পুরুষ থেকেই এসেছে।
তাদের শুধুমাত্র উত্তর এবং দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোয় পাওয়া যায়। এই বাদুড়ের নাক চ্যাপ্টা, তাতে ‘ইউ’ আকৃতির খাজও রয়েছে। নাকে একটি বিশেষ তাপ সংবেদী অঙ্গও রয়েছে যার মাধ্যমে শিকারের একদম চামড়ার কাছে কোথায় রক্তের স্রোত বইছে তা খুঁজে বের করতে সক্ষম। তাছাড়াও, তাদের মস্তিষ্কে একটি ইনফ্রারেড রিসেপ্টরও পাওয়া গেছে, যা সাপের সংবেদী অঙ্গের মতোই একই জায়গায় থাকে এবং অন্ধকারে শিকারের অবস্থানও বুঝতে পারে।
ভ্যাম্পায়ার ব্যাট সাধারণতভাবে ঘুমন্ত প্রাণীর রক্ত খেয়ে থাকে। তারা ধারালো দাঁত দিয়ে প্রথমে শিকারের চামড়ায় একটি ফুটো করে ফেলে। তারপর সেই ফুটো থেকে রক্ত পরা শুরু করলে জিহবা দিয়ে চেটে চেটে খায়। রক্ত খাওয়ার সময় বাদুড়ের মুখ থেকে একধরনের লালা নিঃসৃত হয়ে থাকে, যে কারণে রক্ত জমাট না বেঁধে একটানা বের হতে থাকে। ভ্যাম্পায়ার ব্যাট প্রায় তিরিশ মিনিট পর্যন্ত একটানা রক্ত খেতে পারে তবে শিকার একদমই তা টের পায় না।
এইসব বাদুড় যে পরিমাণ রক্ত খায় তাতে শিকারের কোনো ক্ষতি না হলেও বাদুড়ের কামড় থেকে ইনফেকশন বা অন্যান্য রোগও হতে পারে। এক পরিসংখ্যানে জানা যায় যে, ১০০টি বাদুড়ের একটি কলোনি বছরে প্রায় ২৫টির মতো গরুর রক্তের সমান রক্ত খেয়ে থাকে। তারা সাধারণত গরু, ছাগল, ঘোড়া, শুকর ইত্যাদি প্রাণীর রক্ত খেয়ে থাকে। তবে সুযোগ পেলেই মানুষের রক্তও খায়। তবে শিশু বাদুড় রক্ত নয়, মায়ের দুধ খেয়েই বেড়ে ওঠে।
রক্তে জন্ম নেওয়া এক ধরনের ভাইরাস, ‘এন্ডোজেনাস রেট্রোভাইরাসের’ বিরুদ্ধে তাদের শরীরে বেশ শক্তভাবেই প্রতিরোধ ব্যবস্থা রয়েছে। এই ভাইরাস তাদের জেনেটিক ম্যাটেরিয়ালের কপি হোস্টের জিনোমে ঢুকিয়ে দিয়ে থাকে। ভ্যাম্পায়ার বাদুড় তাদের শরীরের উপর এই ভাইরাসকে কোনো প্রভাব ফেলতে দেয় না।
একমাত্র উড়ন্ত স্তন্যপায়ী প্রাণী হওয়াতে অন্যান্য বাদুড় প্রজাতি যেখানে মাটিতে হাঁটা একদম ভুলেই যেয়ে থাকে সেখানে ভ্যাম্পায়ার বাদুড় খুব ভালোভাবেই মাটিতে হাঁটতে কিংবা লাফাতে এমনকি দৌড়াতেও পারে। এজন্য তারা পিছনের পায়ের চেয়ে বেশি সামনের ডানার উপরেই নির্ভরশীল। মূলত এই ডানাই তাদের হাঁটার ও উড়ার শক্তি জুগিয়ে থাকে।
আইইউসিএন (IUCN) রেডলিস্ট তথ্য অনুযায়ী, রক্তখেকো বাদুড় শংকামুক্ত প্রাণী। তবে তাদের রক্ত খাওয়ার স্বভাবের কারণে অনেক জায়গায় অনেক কুসংস্কারও প্রচলিত রয়েছে। আসলে ভ্যাম্পায়ার বাদুড় অন্যান্য বাদুড়ের মতোই নিরীহ একটি প্রাণী। শুধুমাত্র খাদ্যের প্রয়োজন ছাড়া অন্য কোনো কারণে তারা কখনও কারও ক্ষতি করে না।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।