দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ করোনা ভাইরাসের কারণে পুরো বিশ্ব অচল। এর মধ্যে আবার নতুন করে চিন্তার বিষয় হয়েছে পঙ্গপাল। এবার পঙ্গপাল ঠেকাতে অভিনব আবিষ্কার করলেন এক কৃষক।
পঙ্গপালের হানা নিয়ে পুরো ভারত সন্ত্রস্ত। বিশেষ করে উত্তর ভারতের বেশ কিছু রাজ্যে ইতিমধ্যেই মাইলের পর মাইল চাষের খেতে শস্য ধ্বংস করছে এই পঙ্গপাল। চাষিরা প্রত্যেকে ফসল বাঁচাতে এক যুদ্ধে নেমেছেন। কেও দল বেঁধে খেতজুড়ে বাসন পেটাচ্ছেন, কেও আবার মোবাইলে ডিজে বাজাচ্ছেন। জোরালো শব্দ পঙ্গপালের নাকি শত্রু, সেই কারণেই এতো প্রচেষ্টা।
এসবের মাঝেই দুরন্ত এক পঙ্গপালরোধী যন্ত্র আবিষ্কার করে ফেলেছেন উত্তর ভারতীয় এক চাষি। তার কীর্তিটির ভিডিও তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন স্বয়ং উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসি জেলার পুলিশ সুপার রাহুল শ্রীবাস্তব। সেই ভিডিও পোস্ট হতেই রীতিমতো ভাইরাল হয়েছে। দু’কোটিরও বেশি মানুষ দেখেছেন এই ভিডিওটি। প্রশংসার বন্যা বয়ে গেছে নেট দুনিয়া।
ভিডিওটির ক্যাপশন হিসেবে শ্রীবাস্তব লেখেন যে, “আবিষ্কারের মূলেই রয়েছে পঙ্গপাল!” বিষয়টিকে ‘জুগাড়’ বলে আখ্যা দিয়েছেন তিনি। হিন্দিতে এই শব্দটির অর্থই হলো, কোনও সমস্যা সমাধানের সহজ এবং সুলভ বিকল্প উপায় বের করা। ঠিক যেমন হয়েছে এই উপায়টি।
দেখা যাচ্ছে যে, চাষজমির মাঝখানে একটি লম্বা পোলের মাথায় একটি বিশাল এয়ারপ্লেন বাঁধা রয়েছে। এই এয়ারপ্লেন তৈরি করা হয়েছে বাতিল হওয়া সিলিং ফ্যানের ব্লেড, প্লাস্টিকের বোতল, ক্যান, কার্ডবোর্ডসহ নানা জিনিস দিয়ে। এটি পোলের মাথায় বনবন করে ঘুরছে ও বিকট আওয়াজও হচ্ছে। যে কারণে পঙ্গপালের দল ধারে কাছে ঘেঁষবে না।
এর আগেও শ্রীবাস্তব একটি ভিডিও শেয়ার করেন, যার নাম দেওয়া হয়েছিল ‘ডিজে গাড়ি’। সেটি উত্তরপ্রদেশের খেতগুলিতে জোরালোভাবে গান-বাজনা করতে করতে ঘুরছিল। পঙ্গপাল তাড়ানোর জন্য এটিও ছিল এক ‘জুগাড়’। শ্রীবাস্তব লিখেছিলেন, “ডিজে মানেই শুধু নাচ ও গান তা নয়। পঙ্গপাল তাড়াতেও ডিজের ভূমিকা সত্যিই অনস্বীকার্য। ওরা শব্দেই ভয় পায়।”
গত মাসে ভারতীয় কৃষি মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল যে, ইংল্যান্ড হতে ১৫টি ওষুধ স্প্রে করার যন্ত্রও আনানো হচ্ছে। সেগুলি দিয়েই পঙ্গপাল তাড়ানো যাবে খুব সহজেই। তবে এখনও আসেনি সে যন্ত্র। তাই স্থানীয় মানুষের স্থানীয় চেষ্টাই এখন ভরসা।
ইতিমধ্যেই ভারতের মধ্যপ্রদেশ থেকে ছত্তীসগড়ের করিয়া জেলায় হানা দেয় পঙ্গপালের ঝাঁক। সম্প্রতি ছত্তীসগড় সরকার একথাটি জানিয়েছে। ছত্তীসগড়ের প্রতিটি জেলায় বর্তমানে কৃষি, অরণ্য, ফল চাষ এবং রাজস্ব দফতরের অফিসারদের নিয়েই তৈরি হয়েছে বিশেষ টিম।
তাদের কাজ পঙ্গপালের যাতে হানা না দেয় সেদিকে ওপরে নজর রাখা। পঙ্গপালের তাড়ানোর ব্যবস্থা করা। এম এস কেরকেট্টা বলেন, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ ও উত্তরপ্রদেশের সীমানায় কড়া নজর রাখা হচ্ছে। কারণ সেখানকার আকাশ দিয়ে ঢুকতে পারে ঝাঁকে ঝাঁকে পঙ্গপাল।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।