স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিশ্বে সবচেয়ে নিকৃষ্ট শেয়ার বাজার হিসেবে বাংলাদেশের শেয়ার বাজারকে অভিহিত করেছে বিশ্বের খ্যাতনামা পত্রিকা টাইমস। নিউ ইয়র্ক থেকে প্রকাশিত ২ ফেব্রুয়ারি সংখ্যায় টাইমস্ তার এক নিবন্ধে বাংলাদেশের শেয়ার বাজারের সামপ্রতিক কেলেঙ্কারি ও উত্থান-পতনের কড়া সমালোচনা করেছে।
সাম্প্রতিক বাংলাদেশের শেয়ার বাজার এতই কঠিন অবস্থায় উপনিত হয়েছে যে সরকারও এই শেয়ার বাজার নিয়ে বেশ উৎকণ্ঠায় আছেন।
টাইমস্ তার নিবন্ধে বলেছে, “ এ দেশের শেয়ার বাজারের ৫৮ বছরের ইতিহাসে উত্থান-পতনের অনেক ঘটনা ঘটলেও গত ১২ মাসে লাখ লাখ ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারী যে লোকসান দিয়েছেন, তা দেশের অর্থনীতি ও রাজনীতিতে নতুন সমস্যা তৈরির হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে।”
শেয়ার বাজারের এহেন উত্থান-পতনের কারণে দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর সম্পৃক্ততাকে ২০১০ সালে বাজারের আকাশচুম্বি উত্থান ও পরে আবার হঠাৎ করেই ধ্বস নামার প্রধান কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে। অন্যদিকে বিনিয়োগকারীদের অজ্ঞতাকেও বিরাট ভুল হিসেবে দেখানো হয়েছে। কারণ বাংলাদেশের জনগণ এমনিতেই শিক্ষিতের হার কম, তারওপর অর্থনৈতিক স্বচছলতার জন্য মানুষ সব সময় উৎসাহি হয়ে থাকে। শেয়ার বাজারের এই উত্থান-পতনের খেলাতেও তাই ঘটেছে। মানুষ রাতারাতি দুটি পয়সা চোখে দেখার আশায় না বুঝেই এই শেয়ার খাতে বিনিয়োগ করে ফেলে। আমরা অনুসন্ধান করে যেনেছি, এমনও কেও আছে যারা নিজের একমাত্র সম্বল জমি বিক্রি করে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করেছে। আবার কেও গাড়ি বিক্রি করে বিনিয়োগ করেছে। আবার কেওবা ব্যাংক থেকে লোন করে বিনিয়োগ করেছে। এমনিভাবে এই শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করে ক্ষুদ্র আমানতকারীরা নিঃশ্ব ও সর্বশান্ত হয়েছে।
এদিকে শেয়ার বাজারের এহেন পরিস্থিতির কারণে বর্তমান শেখ হাসিনার সরকারও বেশ বেকায়দায় পড়েছে। সরকার ইতিমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করলেও জনগণের কাছে তার গ্রহণযোগ্যতা ফিরে আসেনি। দ্রব্যমূল্য উচ্চগতিতে বর্তমান সরকার এমনিতেই দিশেহারা, তারওপর শেয়ার বাজার পরিস্থিতি যেনো সরকারের কাছে “গুদের ওপর বিশ ফোঁড়া” হওয়ার শামিল। এখন অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন, সরকারকে এ ব্যাপারে বাস্তবধর্মী পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে করে বিনিয়োগকারীরাও আস্থা ফিরে পায় এবং বিশ্বের নিকৃষ্টতম শেয়ার বাজারের সঙ্গে যেনো আর কখনো বাংলাদেশের শেয়ার বাজারের তুলনা না হয়। #