দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন জাপানের সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ৭১ বছর বয়সী ইয়োশিহিদে সুগা। অজপাড়াগাঁয়ের এক কৃষকের সন্তানকে দেশটির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করলো পার্লামেন্ট।
শারীরিক অসুস্থতার কারণে তার পূর্বসূরি শিনজো অ্যাবের পদত্যাগের পর গত বুধবার তার ডানহাত বলে পরিচিত সুগা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। ইতিপূর্বে গত সোমবার ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) প্রধান হিসেবে ব্যাপক ভোটে বিজয়ী হয়েছেন তিনি। সুগা পার্লামেন্টের সদস্যদের বৈধভাবে পড়া ৪৬২টি ভোটের মধ্যে ৩১৪টিই পেয়েছেন।
জাপানের উত্তরের আকিতা জেলার ছোট্ট একটি গ্রামে জন্ম সুগার। তার বাবা ছিলেন স্ট্রবেরিচাষি এবং মা একজন স্কুলশিক্ষক। ১৮ বছর বয়সে তিনি গ্রাম ছেড়ে চলে এসেছিলে টোকিওতে। কার্ডবোর্ড কারখানায় কাজ করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত পড়াশোনার খরচ চালিয়েছেন সুগা। ১৯৭৩ সালে হোসেই ইউনিভার্সিটিতে নাইট স্কুলে আইন এ স্নাতক সম্পন্ন করেন সুগা। সেখানে পড়ার অন্যতম কারণই হলো ‘সবচেয়ে কম খরচে’ পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য।
এখানেই আবের সঙ্গে সুগার পার্থক্য হয় প্রকট। আবের বাবা জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও দাদা ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। অপরদিকে, এ পর্যন্ত আসতে সুগাকে অনেক কঠিন পথ পাড়ি দিতে হয়েছে।
তারপর ১৯৮৬ সালে লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) একজন আইনপ্রণেতার সচিব হিসেবে রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন সুগা। ১৯৮৭ সালে ইয়োকোহামার মিউনিসিপ্যাল অ্যাসেম্বলির মেম্বার নির্বাচিত হন সুগা। পরবর্তীকালে ১৯৯৬ সালে কানাজাওয়া প্রদেশ হতে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন সুগা।
২০০৫ সালে জাপানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জুনিচিরো কইজুমির মন্ত্রিপরিষদের সদস্যও ছিলেন তিনি। পরে আবের সময় সুগার প্রভাব আরও যেনো বাড়তে থাকে। তিনি আবের প্রশাসনে মন্ত্রিপরিষদ প্রধান সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, যা প্রধানমন্ত্রীর পর জ্যেষ্ঠতম পদ ছিলো। সাংবাদিকদের কাছে সোগা (লৌহ দেওয়াল) হিসেবে পরিচিত ছিলেন।
যোগাযোগ ও রাজনৈতিক অভিজ্ঞতাহীন সুগার একমাত্র সম্বলই ছিল কঠোর পরিশ্রম। এই পরিশ্রমের পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি।
উন্নত চিন্তা, পরিশীলিত আচরণ এবং গুণাবলি ও কঠোর অধ্যবসায়ের ওপর ভর করেই এক অসম্ভব পথে যাত্রা ছিল সুগার। যিনি আজ কৃষকপুত্র থেকে হয়েছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী।
প্রার্থিতা ঘোষণার সময়ই দীর্ঘ সময়ের প্রধানমন্ত্রী অ্যাবের শুরু করা বিভিন্ন কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন তিনি। যার মধ্যে অ্যাবের ‘অর্থনৈতিক কৌশল’ অ্যাবেনোমিক্স হলো অন্যতম।
দায়িত্বগ্রহণের পর অতিসংক্রামক করোনা ভাইরাসের মোকাবেলার পাশাপাশি তাকে নানা প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে হবে। মহামারীর কারণে দেশটির অর্থনীতিও বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে। এমন এক অবস্থা থেকে উত্তরণ দরকার বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশ্বের তৃতীয় অর্থনীতির দেশটিতে বয়স্ক মানুষের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশেরই বয়স ৬৫ বছরের উপরে।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর
অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।