দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ করোনা সংকটের কারণে এবারের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অন্যবারের চেয়ে বেশি ডাকযোগে বা ‘মেল-ইন’ ভোটও পড়েছে। বেশ কয়েকটি কারণে বলা যায় এবারের নির্বাচন একটু ব্যতিক্রমী।
প্রতিবারই মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল স্পষ্ট হতে শুরু করে ভোটগ্রহণের রাত হতেই। পরের দিন পরাজিত পক্ষের বক্তব্যের মাধ্যমেই শিলমোহর পড়ে জনগণের এই রায়ে। তবে করোনা সংকটের মধ্যে সংগঠিত এবারের নির্বাচন নানা দিক থেকেই ভিন্ন।
ইউএস ইলেকশনস প্রজেক্ট জানিয়েছে, ৬ কোটি অ্যামেরিকান ভোটার এবার ডাকযোগে বা ‘মেল-ইন’ ভোট দিয়েছেন, যা অন্যান্যবারের চেয়ে অনেক গুণ বেশি। ডাকযোগে ভোটদান সম্পর্কে রিপাবলিকান প্রার্থী এবং বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অসন্তুষ্টি থাকলেও মহামারি পরিস্থিতিতে তা এড়ানো সম্ভব হয়নি।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ডাকযোগে ভোটদানের কারণেই পিছিয়ে যেতে পারে নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর্ব। ওয়াশিংটন পোস্টের একটি সমীক্ষা জানিয়েছে যে, মার্চে প্রাথমিক পর্যায়ের নির্বাচনের পর গড়ে প্রতিটি অঙ্গরাজ্যের চারদিন করে সময় লেগেছিল ভোটগণনা শেষ করতে। তবে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক এডি গোল্ডেনবার্গের মতে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী ব্যবস্থাপকরা এক্ষেত্রে যথেষ্ট পটু ও প্রাথমিক নির্বাচন হতে শিক্ষাও নিয়েছেন। তবুও জনমত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় কোনো ফাঁক না রাখতে পেনসিলভ্যানিয়া এবং নর্থ ক্যারোলাইনার মতো রাজ্যগুলিতে ডাকযোগে ভোটগ্রহণের শেষ তারিখ বাড়িয়ে দেওয়া হয়।
অধ্যাপক এডি গোল্ডেনবার্গের মত হলো, ‘‘কিছু রাজ্যের ফলাফলের ঝোঁক ভোটগ্রহণের রাতে বোঝা গেলেও সেটি বেশ কিছু রাজ্যে এই ধারা তখনই স্পষ্ট হবে না।’’
যুগ্ম বিজয়ীর ক্ষেত্রে কীভাবে মীমাংসা?
এবারের নির্বাচন ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে চারশরও বেশি মামলার সঙ্গে, যেটি মার্কিন নির্বাচনের ইতিহাসে এটিই প্রথম। আলোচনায় রয়েছে ডাকযোগে ভোটগ্রহণের কারণে যুগ্ম বিজয়ী ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে। আলোচিত হয়ে আসছে এবারের নির্বাচনে ২০০০ সালের পুনরাবৃত্তি, যখন বুশ বনাম গোর লড়াইয়ের ফলাফল এসেছিল সর্বোচ্চ আদালত হতে। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন না যে, এবার সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট নির্ধারণের বিষয়টি গড়াবে।
সেইসঙ্গে মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনের পর কোনো স্পষ্ট বিজয়ী না উঠে এলে সেক্ষেত্রে নবনির্বাচিত হাউস অফ রেপ্রেজেন্টেটিভসের সদস্যরা ৬ জানুয়ারির মধ্যে ঠিক করে থাকেন প্রেসিডেন্ট কাকে করা হবে। ২০ জানুয়ারির মধ্যে যদি কোনো মীমাংসা না হয়, তাহলে ভাইস-প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট বা স্পিকারকেই প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করারও নিয়ম রয়েছে। যদিও এই ধারায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন উনিশ শতকের পর আর কখনও হয়নি।
জনগণের রায় গ্রহণ?
জনগণের রায় যদি ট্রাম্পের বিপক্ষে যায় সেই রায় ট্রাম্প মেনে নেবেন কি না, তা নিয়েও বেশ সংশয় রয়েছে বিভিন্ন মহলে। সেপ্টেম্বর মাসে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘‘আমরা দেখবো কী হয়”। নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা যদিও মনে করছেন, ফলাফল স্পষ্ট থাকলে পানি অতদূর হয়তো গড়াবে না।
অধ্যাপক এডি গোল্ডেনবার্গের মতে, আলোচিত ‘মেল-ইন’ ভোটগ্রহণ এবং একাধিক আইনি জটিলতায় ঘেরা এবারের নির্বাচনকে ঘিরে উত্তেজনা এক চরমে রয়েছে। তাই জনতার রায় মেনেই ক্ষমতা হস্তান্তর হবে বলে তিনি মনে করেন।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর
অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।