দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ করোনায় বিপর্যস্ত পুরো বিশ্ব। এমন এক পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাপী শুরু হয়েছে করোনা টিকা প্রদান। বাংলাদেশও পিছিয়ে নেই। আজ (রবিবার) সারাদেশে একযোগে করোনার টিকা প্রয়োগ শুরু হলো।
সারাদেশে আজ (রবিবার) শুরু হয়েছে করোনার টিকা প্রদান কর্মসূচি। রাজধানীসহ সারাদেশের এক হাজারের বেশি হাসপাতালে আজ (রবিবার) সকাল ৯টা থেকে শুরু হয়েছে এই কার্যক্রম। প্রথম দিনই টিকা নেবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকসহ বেশ কয়েকজন মন্ত্রী।
গতকাল শনিবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম। টিকা নেওয়ার জন্য এ পর্যন্ত সোয়া ৩ লাখের বেশি মানুষ নিবন্ধন করেছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক জানিয়েছেন, ‘শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউটে স্বাস্থ্যমন্ত্রী টিকা নেন। টিকা নেওয়ার আগে স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্য অধিদফতরের কার্যালয়ে এসে সারাদেশের কেন্দ্রগুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে কথাও বলেন। এরপর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউটে গিয়ে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়।’
খুরশীদ জানান, ‘শনিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত টিকা নেওয়ার জন্য নিবন্ধন করেন ৩ লাখ ২৮ হাজার ১৩ জন। কেন্দ্র ঘুরে ঘুরে দেখা হয়েছে, সব কেন্দ্রগুলোতে প্রস্তুতি ভালো রয়েছে। আমরা আশা করছি, কোনোরকম প্রতিবন্ধকতা ছাড়া আমরা টিকাদানের কাজ শুরু করতে পারবো।’
তিনি জানিয়েছেন, প্রধান বিচারপতি সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে টিকা নেবেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জল হোসেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস (নিন্স) ও হাসপাতালে টিকা নেবেন। কেবিনেট সচিব টিকা নেবেন শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি কেন্দ্রে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল টিকা নেবেন সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রী ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউটে টিকা নেওয়ার কথা রয়েছে।
এছাড়াও বিভিন্ন জেলায় ও বিভিন্ন জায়গায় সংসদ সদস্যরা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় যেসব গণ্যমান্য ব্যক্তি রয়েছেন তারা ওই সব কেন্দ্রে সম্পৃক্ত থাকবেন এবং টিকা কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়ার জন্য তারা নিজেরা টিকা নেবেন এবং কার্যক্রমে সহযোগিতা করবেন বলেও জানিয়েছেন অধিদফতরের মহাপরিচালক।
উল্লেখ্য, গত ২৭ জানুয়ারি দেশে প্রথম করোনা টিকা প্রদান শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনলাইনে এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর
অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।