দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দেশের করোনা পরিস্থিতি বিপদজনক অবস্থায় উপনীত হওয়ায় আজ থেকে গণপরিবহনে অর্ধেক যাত্রী বহন করতে হবে। ট্রেনেও অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে আজ হতে গণপরিবহনে ধারণক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী নেওয়া শুরু হয়েছে। যে কারণে গণপরিবহনে ৬০ ভাগ ভাড়াও বাড়ানোর সরকারি সিদ্ধান্ত আজ (বুধবার) হতে কার্যকর হয়েছে। যা বহাল থাকবে পরবর্তী ২ সপ্তাহের জন্য।
অপরদিকে অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে যাত্রী পরিবহন কার্যক্রম শুরু করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। তবে ট্রেনে কোনো ভাড়া বাড়ছে না।
এই বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আগামীকাল (আজ বুধবার) হতে দেশের সব গণপরিবহনে অর্ধেক যাত্রী নেওয়া সাপেক্ষে ৬০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে সরকার। আগামী দুই সপ্তাহ পর্যন্ত এই আদেশ বহাল থাকবে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই ভাড়া আগের অবস্থায় ফিরে আসবে।’
ইতিপূর্বে সোমবার গণপরিবহনে ধারণক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের নির্দেশনা জারি করেছিলো সরকার। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে করোনা প্রতিরোধে মোট ১৮ দফা নির্দেশনাও জারি করা হয়। সেখানে এই কথা বলা হয়। গতবছর করোনার সংক্রমণ শুরু হলে ২০২০ সালের ৩১ মে হতে গণপরিবহনে অর্ধেক আসন খালি রাখতে বলে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। তখন বাস মালিকদের দাবির মুখে বাসের ভাড়া ৬০ ভাগ বাড়িয়ে দিয়েছিলো সরকার। তার আগে করোনার কারণে দীর্ঘদিন গণপরিবহন চলাচল বন্ধ ছিলো। তবে করোনার সংক্রমণ কিছুটা কমে আসায় গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর হতে আবারও বাসের সব সিটে যাত্রী পরিবহন শুরু করা হয়।
ইতিমধ্যেই করোনার সংক্রমণ রোধে অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে যাত্রীদের টিকিট দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার শাহাদাত আলী জানিয়েছেন, মঙ্গলবার হতেই ট্রেনের আসনসংখ্যার অর্ধেক ফাঁকা রেখে টিকিট বিক্রি শুরু করেছেন তারা।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সব ট্রেনে আমাদের যে কয়টি আসন রয়েছে, তার অর্ধেক টিকিট বিক্রি হবে। আন্তঃনগর ট্রেনের কিছু অগ্রিম টিকেট বিক্রি হয়েছে। তা যদি ৫০ শতাংশের বেশি হয়ে থাকে, তাহলে কিছুই করার নেই। তবে এখন থেকে আর ৫০ শতাংশের বেশি টিকিট আমরা বিক্রি করবো না।’
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর
অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।