দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের ঝুঁকি বেশি আছেন কোভিড-১৯ রোগী, বিশেষ করে যাদের অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস রয়েছে, স্টেরয়েড থেরাপি প্রয়োজন বা যারা ভেন্টিলেশনে আছেন তাদের।
এছাড়াও এক মাস্ক দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করলে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে বলে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা সর্তক করে দিয়েছেন।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের বরাত দিয়ে ভারতের সংবাদ মাধ্যম দি হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, কোভিড-১৯ চিকিত্সার ৬ সপ্তাহের মধ্যে রোগীদের ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি থাকে।
নয়াদিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেসের (এইমস) সিনিয়র নিউরোসার্জন ডা. পি শরৎচন্দ্র এই বিষয়ে বলেন, ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণগুলোর মধ্যে একটিই হলো অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস। প্রচলিত ওষুধ টসিলিজুমাবের সঙ্গে স্টেরয়য়েডের ব্যবহার ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সংক্রমণের ঝুঁকি আরও বাড়ায়। তাছাড়াও ভেন্টিলেশনে থাকা রোগী এবং অক্সিজেনের প্রয়োজন হয় এমন রোগীদের মধ্যে কালো ছত্রাক সংক্রমণের ঝুঁকিও বেশি। কোভিড চিকিত্সার ৬ সপ্তাহের মধ্যে যদি কারও এসবের প্রয়োজন পড়ে তাহলে তাদের সংক্রমণের সর্বোচ্চ ঝুঁকি থাকে।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘সিলিন্ডার থেকে সরাসরি শীতল অক্সিজেন দেওয়া খুবই বিপজ্জনক একটি বিষয়। ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ এড়াতে উচ্চ-ঝুঁকিতে থাকা রোগীদের অ্যান্টি-ফাঙ্গাল ওষুধ পোসাকোনাজল ওষুধটি দেওয়া যেতে পারে।’
একই ফেস মাস্ক দীর্ঘদিন ব্যবহার করার ব্যাপারেও তিনি সতর্ক করে বলেছেন, ‘কোনো মাস্কই দীর্ঘদিন ব্যবহার করা যাবে না। প্রতিটি এন৯৫ মাস্ক পাঁচবারের বেশি ব্যবহার করা মোটেও উচিত নয় এবং কাপড়ের মাস্ক ব্যবহারের পর প্রতিদিনই তা ধুয়ে নিতে হবে। কাপড়ের মাস্ক স্যাঁতস্যাঁতে জায়গায় রাখলে সেখান থেকে ছত্রাক জন্মাতে পারে।’ সপ্তাহের প্রত্যেক দিনের জন্য পৃথক মাস্ক রাখার পরামর্শ দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ভারতের রাজস্থান, গুজরাট, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, কর্ণাটক, ওড়িশা, তেলেঙ্গানা এবং তামিলনাড়ুর মতো রাজ্যগুলোতে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণের পর মিউকরমাইকোসিস নামে এই রোগটিকে মহামারি হিসেবে ঘোষণা করেছে ভারতের কেন্দ্র সরকার।
তথ্যসূত্র: দ্যা ডেইলি স্টার
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের সার্জিক্যাল মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।