দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ লিঙ্গ সমতা নিশ্চিত করতে বিশ্ব নেতাদের সামনে ৩টি প্রস্তাব পেশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল (২১ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতির আহ্বানে নারী নেতাদের নিয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে এ প্রস্তাব পেশ করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রথম প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, লিঙ্গ সমতার বিষয়ে উপদেষ্টা বোর্ড প্রতিষ্ঠার জন্য আমি আপনাদের প্রশংসা করি। এখন এটিকে স্থানীয়করণ করা প্রয়োজন। প্রত্যেকটি পর্যায়ে, বিশেষ করে তৃণমূল পর্যায়ে লিঙ্গ চ্যাম্পিয়ন প্রয়োজন ও এর মাধ্যমে আমরা দৃষ্টান্ত স্থাপনও করতে পারি।
দ্বিতীয় প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী নারী নেতৃত্বাধীন সংগঠনগুলোকে পর্যাপ্ত রাজনৈতিক এবং আর্থিকভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করার প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরেন। এই ধরনের প্রচেষ্টায় জাতিসংঘের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা প্রয়োজন।
তৃতীয় প্রস্তাবে বঙ্গবন্ধু কন্যা আরও বলেন, লিঙ্গ সমতার জন্য সাধারণ কর্মসূচিকে জোরদার করতে আমি নেতাদের একটি সম্মেলন করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। শুধু আমরাই নয়, সব নেতাদের এতে যোগদান করা উচিত ও লিঙ্গ সমতার অগ্রগতির জন্য দৃঢ় প্রতিশ্রুতি দরকার।
লিঙ্গ সমতা নিশ্চিত করতে নারী নেতাদের একটি নেটওয়ার্ক গঠন করার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এটি লিঙ্গ সমতা নিশ্চিত করার জন্য চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, দৃঢ়ভাবে অনুভব করছি- আমরা নারী নেতাদের একটি নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করতে পারি, যা আমাদের শুধু একক বৈঠকের জন্যই একত্রিত করবে না, বরং লিঙ্গ সমতা অর্জনে বাস্তব পদক্ষেপ নিশ্চিত করতেও একটি শক্তি হিসেবে কাজ করবে ও এটি নারী ক্ষমতায়নেও ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।
নারীদের ওপর করোনা মহামারির নেতিবাচক প্রভাবের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, অবৈতনিক যত্ন নেওয়ার কাজ আরও বেড়েছে। লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতাও বেড়েছে। ইউনিসেফ এই দশকের শেষের আগে আরও দশ মিলিয়ন বাল্যবিবাহের আশঙ্কা করছে।
করোনা মহামারি পরিস্থিতি মোকাবিলায় নারীদের ভূমিকার প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের প্রায় ৭০ শতাংশই নারী এবং তারা মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সামনের সারিতেই রয়েছেন। তৈরি পোশাককর্মীদের ৮০ শতাংশের বেশিই নারী। অনানুষ্ঠানিক অর্থনীতিতেও নারীরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। তাদের অনেকেই চাকরি এবং আয় হারিয়েছে। নারীসহ ২০ লাখ প্রবাসী শ্রমিক দেশে ফিরে এসেছেন।
করোনা মহামারির কারণে বাংলাদেশ কষ্টার্জিত অগ্রগতির চাকা পেছনে ঘোরার ঝুঁকিতে রয়েছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মহামারির নেতিবাচক প্রভাব মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ারও তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী।
করোনা পরিস্থিতির মধ্যে অর্থনীতি সচল রাখতে বাংলাদেশের বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ইতিমধ্যেই ১৪ দশমিক ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ২৮টি প্যাকেজ ঘোষণা করেছি। আমরা সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিও বাড়িয়েছি। যেখানে বেশির ভাগ সুবিধাভোগীই নারী এবং শিশু।
নারী নেতৃত্বাধীন এসএমই সেক্টরের জন্য বিশেষ বরাদ্দ, নারীদের দক্ষতা উন্নয়নে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করা, নারী উদ্যোক্তাদের বিনা জামানতে ঋণ সুবিধা দিতে বাংলাদেশ সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।