দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাবা ও ভাইয়ের সঙ্গে আইসল্যান্ডএয়ারের একটি ফ্লাইটে শিকাগো হতে আইসল্যান্ডে যাচ্ছিলেন মারিসা ফোটিও নামে জনৈকা নারী। তবে মাঝ আকাশেই ধরা পড়লো কোভিড। শেষ পর্যন্ত বিমানের টয়লেটে ৫ ঘণ্টা আইসোলেশন!
তবে আসল গন্তব্য ছিল সুইজারল্যান্ড। আইসল্যান্ডের রেইক্যাভিক নেমে সেখান থেকেই সুইজারল্যান্ডের ফ্লাইট ধরার কথা ছিল ওই যাত্রীর। তবে রওয়ানা দেওয়ার পর মাঝআকাশেই করোনা পজিটিভ শনাক্ত হন ওই নারী যাত্রী মারিসা, যে কারণে ফ্লাইটের বাকি সময় প্লেনের বাথরুমে বসে কাটাতে হলো তাকে।
সিএনএনের খবর অনুসারে জানা যায়, প্লেনে ওঠার আগে শিকাগোয় থাকতে ২ বার পিসিআর ও ৫ বার র্যাপিড করোনা টেস্ট করিয়েছিলেন মারিসা। দুই ডোজ টিকা নেওয়ার পরও সম্প্রতি বুস্টার ডোজও নিয়েছেন তিনি। স্থানীয় একটি স্কুলের শিক্ষক তিনি। টিকা না নেওয়া শিশুদের সংস্পর্শে নিয়মিত যাওয়ায় কিছুদিন পরপর করোনা টেস্ট করাতেন এই নারী। এর আগে যতোবার টেস্ট করিয়েছেন, প্রতিবারই ফলাফল নেগেটিভ এসেছে। তবে অবকাশযাপনে যখন সুইজারল্যান্ড রওয়ানা দেন, তখন মাঝপথেই করোনা পজিটিভ হয় তার।
এনবিসির খবরে বলা হয়, সবকিছুই ঠিকঠাক হচ্ছিলো। তবে বিমানে ওঠার পর বিমান যখন মধ্য আকাশে উঠে আসে তখন শরীরে কিছুটা অস্বস্থি ও গলাব্যথা অনুভব করেন শিকাগোর ওই শিক্ষিকা। এই সময় নিজের কাছে থাকা র্যাপিড করোনা ভাইরাস কিট দিয়ে পরীক্ষা করেই দেখেন তিনি করোনা পজিটিভ।
করোনা পজিটিভ জানার পর এক মুহূর্তও দেরি করেননি মারিসা ফোটিও। তিনি সঙ্গে সঙ্গেই নিজেকে বিমানের টয়লেটে বন্দী করে নেন, যেনো এটি আর কারো কাছে ছড়িয়ে পড়তে না পারে। বিমানটি মাটিতে নামার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত প্রায় ৪ ঘণ্টা মারিসাকে বাথরুমে সেলফ কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হয়েছে। অবশ্য এই সময় একজন বিমানবালা মারিসাকে খাবার এবং পানীয় সরবরাহ করেন।
একবার ভাবুন- দীর্ঘ সময় একাকী টয়লেটে বসে থাকতে কারই বা ভালো লাগে? এজন্য মারিসা ওখানে বসেই ৪ মিনিটের একটি টিকটক ভিডিও তৈরি করে পোস্ট করেন। মুহূর্তেই সেটি ভাইরাল হয়। এখন পর্যন্ত ভিডিওটি প্রায় ৪ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ টিকটকটি দেখেছে। অনেকেই তার প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন, আবার অনেকেই তার এই সিদ্ধান্তের ভূয়শী প্রশংসাও করেছেন।
ফোটিও এনবিসি নিউজকে বলেছেন, ফ্লাইটে প্রায় ১৫০ জন যাত্রী অবস্থান করছিলেন। আমার ভয় হচ্ছিলো আমার কারণে তাদের মধ্যে কোভিড ছড়িয়ে পড়ে কিনা। তাই আমি স্বেচ্ছায় আইসোলেশনে গিয়েছিলাম। ফ্লাইটের বিমানবালা আমাকে অনেক সাহায্যও করেছেন। তাকে অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আইসল্যান্ডে পৌঁছে রেড ক্রস হোটেলে আমাকে আইসোলেশনে থাকতে হয়। তিনি আরও বলেছেন, ফ্লাইটে ওঠার আগে পিসিয়ার টেস্টে আমার কোভিড নেগেটিভ এসেছিলো। তথ্যসূত্র: ইয়াহু নিউজ
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকার চেষ্টা করি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।