দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আশ্চর্য এক পাহাড় চার মূর্তির পাহাড়। এটি আমেরিকার দক্ষিণ ডাকোটার র্যাপিড সিটির কাছে ‘মাউন্ড রশমো’র পাহাড় নামে পরিচিত।
১৮৮৫ সালে এক পর্বত অভিযানের সময় নিউইয়র্কের বিখ্যাত আইন বিশেষজ্ঞ চার্লস-ই-রশমোরের নাম অনুসারে পাহাড়টির এই নামকরণ করা হয়েছে।
পাহাড়টির গায়ে গ্রানাইট পাথর দিয়ে চার মার্কিন প্রেসিডেন্টর বিশাল আবক্ষ মূর্তি খোদাই করা আছে। এরা হলেন জর্জ ওয়াশিংটন, টমাস জেফারসন, আব্রাহাম লিঙ্কন ও থিয়োডর রুজভেল্ট। এ মূর্তিগুলো দেখতে প্রতি বছর প্রায় ২০ লাখেরও বেশি টুরিস্ট আসেন। মূর্তিগুলোর প্রতিটির মুখ লম্বায় ৬০ ফুট এবং চোখগুলো ১১ ফুট চাওড়া। এদের মধ্যে জর্জ ওয়াশিংটনের মুখটিই ১৮ ফুট চাওড়া এবং নাকটি লম্বায় ২১ ফুট।
ভাবলে অবাক হতে হয়, এ বিশাল আকৃতির মুখগুলো তৈরি করতে গ্রানাইট পাথরই লেগেছে ৪ লাখ ৫০ হাজার টন। ১৯২৭ সালের ৪ অক্টোবর পাহাড়ের গায়ে মেশিন বসানো হয়েছিল। মূর্তিগুলো এমন নিখুঁতভাবে তৈরি যে, পর্যটকদের মন কেড়ে নেয়। ১৯৩৮ সাল থেকে মাউন্ট রশমোর টুরিস্টদের আনাগোনা শুরু হয়। কাজ শেষ হয় ১৯৪১ সালে। অর্থাৎ দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে চলেছিল এ মূর্তিগুলো তৈরির কাজ। ৩৬০ জন শিল্পী দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে মূর্তিগুলো তৈরি করেছিলেন। শিল্পীদের অনেকেই আজও বেঁচে আছেন। এদের একজন হলেন ভাস্কর গুটজন বোর্গলাম। তিনি জানিয়েছেন, আসল কাজ এখনও বাকি আছে। তিনি চেয়েছিলেন মূর্তিগুলোকে কোমর পর্যন্ত তৈরি করতে, আর মূর্তির মাথার পেছন দিক থেকে রাজকীয় সিঁড়ির ব্যবস্থা রাখতে।
আরও অনেক বিখ্যাত মানুষের মূর্তিও রাখার ইচ্ছা ছিল গুটজনের। তিনি চেয়েছিলেন আমেরিকার সম্পূর্ণ ইতিহাস, প্রতিটি মূর্তির পরিচয় এবং স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রটি এ পাথরে খোদাই করে রাখতে। কিন্তু এসব করতে অনেক টাকা লাগবে বলে সরকারি কর্মকর্তারা রাজি হননি। ফলে তার প্রত্যাশাও অপূর্ণ থেকে গেছে। গুটজন রঙের বাক্স নিয়ে রঙ করতেন আর শ্রমিকদের বলে দিতেন কোথায় মেশিন চালাতে হবে। এ কাজের জন্য শ্রমিকরা পারিশ্রমিক পেতেন ঘণ্টায় ৫৫ সেন্ট। তবে সত্যিই যদি রশমোর পাহাড়ের মূর্তিগুলোকে পা পর্যন্ত বানানো যেত তাহলে প্রতিটি মূর্তির উচ্চতা হত ৪৬৫ ফুট। স্ট্যাচু অফ লিবার্টির চেয়েও দেড়গুণ উঁচু। এই ছিল ‘মাউন্ড রশমো’র পাহাড়ের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস। প্রতিদিন বহু পর্যটক এই পাহাড়ের পাদদেশে আসেন। তারা এই মূর্তিগুলো দেখে অবিভূত হন। সূত্র: অনলাইন