দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সম্প্রতি ‘ব্রিটিশ জার্নাল অব ডার্মাটোলজি’-র একটি রিপোর্টে দেখা গেছে ৮.৮ শতাংশ কোভিড রোগীর ত্বকে কিছু উপসর্গ দেখা দিয়েছে। জেনে নিন এমন কয়েকটি উপসর্গ সম্পর্কে।
করোনা হলে কেও আটকাতে পারবেন না- এমন মনোভাব অনেকেরই রয়েছে। তবে যতো তাড়াতাড়ি রোগটি ধরা পড়বে, ততোই দ্রুত সেরে ওঠার সম্ভাবনাও থাকে। তাই রোগের উপসর্গগুলি দ্রুত চিনে নেওয়াটা জরুরি। করোনা হলে জ্বর-সর্দি যেমন থাকে, তেমন আরও কিছু শারীরিক সমস্যাও দেখা দিতে পারে। পেশিতে টান ধরা থেকে পেটের গোলমাল, এ সবও করোনারই উপসর্গ। তেমন আরও এক ধরনের উপসর্গ হলো চর্মরোগ। সম্প্রতি ‘ব্রিটিশ জার্নাল অব ডার্মাটোলজি’-র একটি রিপোর্টে দেখা গেছে ৮.৮ শতাংশ কোভিড রোগীর ত্বকে কিছু কিছু উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। মূলত ৫ ধরনের র্যাশের কথা বলা হয়েছে। জেনে নিন সেগুলো:
কোভিড ডিজিটস
এটি সবচেয়ে বেশি সংখ্যক করোনা রোগীর মধ্যেই দেখা গেছে। পায়ের আঙুল ফুলে লাল কিংবা বেগুনির মতো রং হয়ে দেখা দিচ্ছে। সাধারণত এমন সমস্যা খুব ঠাণ্ডার সময় হয়ে থাকে। তবে করোনায় আক্রান্ত হলে তা দেখা দিতে পারে যে কোনও মৌসুমেই। ফোলা আঙুলগুলিতে হালকা চুলকানির সমস্যাও হয়। হাঁটাচলা করতেও বেশ কষ্ট হয়।
এগজিমা
অনেক সময় প্রদাহ সৃষ্টি হওয়ার কারণে খুব শুষ্ক হয়ে যায় ত্বক। তখন র্যাশ বেরোয়। চামড়া ফেটে যাওয়ার প্রবণতাও তখন দেখা দিতে পারে। গলা, বুক ও হাতে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় এই সমস্যাটি। এগজিমা যে সব সময় করোনা সংক্রমণের সময়ই দেখা দিচ্ছে, তা কিন্তু নয়। বহু রোগী ‘করোনা নেগেটিভ’ হয়ে যাওয়ার পরও এই সমস্যাতে ভুগছেন।
হাইভ্স
হঠাৎ করেই কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সারা গা র্যাশে ভরে যায়। এই ক্ষেত্রে হাত, পায়ে লালচে চাকা চাকা ভাবও দেখা দেয়। চিকিৎসকরা বলেছেন, এই সমস্যাটি সংক্রমণের বেশ শুরুর দিকেই দেখা দিতে পারে। আর তা থাকে বেশ অনেক দিন ধরে।
মুখে র্যাশ
হঠাৎ করেই ঠোঁট খুব শুষ্ক হয়ে যায়। ফেটেও যেতে শুরু করে। ঠোঁটের চারপাশে লালচে র্যাশ দেখা দিতে পারে। স্পেনের একটি সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী দেখা যায়, এই ধরনের সমস্যা অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা দিতে শুরু করে করোনার বাকি সব উপসর্গ দেখা দেওয়ার ২/৩ দিন আগে থেকেই। তবে তার অর্থ যে জ্বর-সর্দি হওয়ার পর কারওরই মুখের র্যাশ আর বেরোয় না, এমন কিন্তু নয়।
পিটুরাইয়াসাস রোসিয়া
পেট, বুক কিংবা পিঠে গোল করে চাকা চাকা র্যাশ বেরোতে শুরু করে দেয়। হাত ও থাইয়েও হতে পারে এমন র্যাশ। সাধারণত এই র্যাশ অনেকটা এলাকায় ছড়িয়েও যায়। সংক্রমিত হওয়ার ৪/৫ দিনের মধ্যে এগুলি দেখা দিতে পারে। থাকে বেশ অনেক দিন ধরে। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকার চেষ্টা করি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।