দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ উত্তর কোরিয়ার কারাগারে বন্দিদের উপর ভয়াবহ নির্যাতন এবং মানবাধিকার লংগনের ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। সম্প্রতি সেখানকার কারাগারের একটি ক্যাম্পে একজন মাকে তার সদ্যপ্রসুত সন্তানকে ডুবিয়ে মারতে বাধ্য করার মত ভয়ংকর ঘটনা ঘটেছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে ইউ.এন কমিশনের অনুসন্ধানী রিপোর্টে এইসব নির্যাতনের খবর প্রকাশ করা হয়েছে। উত্তর কোরিয়ার সুপরিচিত বিদ্রোহী Shin Dong-hyuk এর আঙুল কেটে ফেলা হয়েছিলো কারাগারে সেলাই মেশিন ফেলে দেওয়ার শাস্তি হিসাবে। তার সেই দুঃসহ স্মৃতিচারণে জানা যায়, ক্ষুধার্ত কারাবাসীরা গার্ডদের নিক্ষেপ করা জীবিত ইদুর, মৃত ছাগলের কাঁচা ক্ষুর পর্যন্ত খেতেন। সামান্য গম চুরি করায় সাত বছরের একজন বালিকাকে আঘাত করে মেরে ফেলা হয়েছে এমন সাক্ষ্যও দিয়েছেন তিনি।
সিন, উত্তর কোরিয়ার ক্যাম্প-১৪ নামে পরিচিত কারাগারে জন্মগ্রহণ করেন এবং তাকে তার মা এবং ভাইয়ের মৃত্যুদন্ড দেখতে বাধ্য করা হয়। সিন মাত্র পাঁচ বছর বয়সে মানুষের মৃত্যুদন্ড স্বচক্ষে দেখেন।
৩৪ বছর বয়সী জি হিও এর সাক্ষ্য থেকে জানা যায় আরো বীভৎস নির্যাতনের ঘটনা সম্পর্কে।কারাগারে প্রচুর নারীদের প্রহার করা হয় এবং গর্ভপাতে বাধ্য করা হয়। তার বক্তব্য থেকে জানা যায় কিভাবে একজন মাকে তার সন্তানকে মেরে ফেলতে বাধ্য করা হয়েছিলো।
জি হিও বলেন, সেদিন প্রথম একটি সদ্যপ্রসুত বাচ্চা দেখেছেন তিনি এবং এইকারণে সুখী হয়েছিলেন তিনি। হঠাৎ বুটের শব্দ শোনা গেলো, কারারক্ষীরা আসলেন এবং ঐ মাকে বাচ্চাটিকে এক বাটি পানিতে ডুবানোর নির্দেশ দিলেন। মা’টি বাচ্চাটিকে বাঁচানোর জন্য ক্ষমা ভিক্ষা করেছেন কিন্তু তারা শুনেনি বরং তাকে পিটাতে থাকে। শেষপর্যন্ত মা বাচ্চাটিকে পানিতে ডুবিয়ে দেন এবং একসময় একটি বুদবুদ উঠার মাধ্যমে বাচ্চাটির কান্না এবং জীবনের সমাপ্তি ঘটে।
বন্দিদের ওপর এত ভয়াবহ নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞের মাধ্যমে মানবাধিকার লংগনের যে ঘটনা ঘটেছে তা অস্বীকার করেছে উত্তর কোরিয়া, যদিও উত্তর কোরিয়ার কারাগারগুলোতে প্রায় দেড় – দুই লাখ বন্দী রয়েছে যাদের উপর অত্যাচারের স্টিম রোলার চালান কারারক্ষীরা। বলা যায়, এই শতাব্দীতে এসে এরকম অমানবিক ঘটনা সভ্যতার জন্য কলংকজনক ব্যাপার।
তথ্যসূত্রঃ বাজ ফিড