দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে হাবুডুবু খাচ্ছে শ্রীলঙ্কা। দেশটিতে খাদ্যদ্রব্যের সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বর্তমানে আকাশচুম্বী। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তেলের জন্য চারিদিকে চলছে হাকাকার। চারদিকে এক মহা সংকটময় অবস্থা বিরাজ করছে। যে যেখানে পারছে, সেখান থেকেই সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভ করে যাচ্ছে। শনিবার রাতেও রাজধানী কলম্বোতে ব্যাপক বিক্ষোভ করা হয়। তবে প্রেসিডেন্ট গোটা বায়া রাজাপাকসে কোনো অবস্থাতেই পদত্যাগ করবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন।
জনবিক্ষোভের মুখে গত শুক্রবার দেশটির বিরোধী দল সামাগি জনা বালাওয়েগায়া (এসজেবি) এর নেতা সাজিথ প্রেমদাসা বলেছেন যে, সরকার যদি জনগণের সমস্যা এবং অর্থনৈতিক সংকট নিরসনে পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষেকে অভিশংসনে (ইমপিচ) আমরা প্রস্তুত রয়েছি। ইতিপূর্বে গত মঙ্গলবার শ্রীলঙ্কা পার্লামেন্টের ৪১ জন সদস্য সমর্থন প্রত্যাহার করায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায় বর্তমান দেশটির ক্ষমতাসীন সরকার। প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসেকে বরখাস্ত করার দাবি উঠেছিল বিরোধী শিবিরের পক্ষ হতে। তবে প্রেসিডেন্ট সেই প্রস্তাবে সায় না দেওয়ায় তার বিরুদ্ধেই অনাস্থা আনার ঘোষণা দিয়েছে বিরোধী দল।
বর্তমান শাসকজোট ‘শ্রীলঙ্কা পিপল্স ফ্রিডম অ্যালায়েন্স’-এর অন্দরেও রাজাপক্ষে ভাইদের নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে বলেও দাবি করেন সাজিথ প্রেমাদাসা। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে যে পরিবারটি দেশ চালাচ্ছে, তাদের দিয়ে বেহাল আর্থিক পরিস্থিতি উন্নতি সম্ভব নয়। সেইসঙ্গে শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্ট-নির্ভর শাসনব্যবস্থার বদলে পার্লামেন্টের হাতে বেশি ক্ষমতা দিয়ে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা শক্তিশালী করার প্রস্তাব করেছেন তিনি।
সাজিথ আরও বলেন, অতীতে একাধিকবার প্রেসিডেন্টের স্বৈরাচারী আচরণ দেখেছে শ্রীলঙ্কা। আমরা তার পুনরাবৃত্তি চাই না।
কলম্বোতে শনিবারের বিক্ষোভেও তার আঁচ পাওয়া যায়। সেখানে ব্যতিক্রমী কিছু ব্যানার দেখা গেছে। তাতে লেখা ছিল- ‘সেভ আস ফ্রম দ্য পলিটিক্যাল টেরোরিস্টস’। অর্থাৎ রাজনৈতিক দুবৃর্ত্তদের হতে আমাদের রক্ষা করুন। রাজাপক্ষে পরিবারকে লক্ষ্য করে এতে আরও লেখা ছিল- ‘ইউ আর ওর্স দ্যান দ্য করোনা ভাইরাস’। অর্থাৎ- আপনি করোনা ভাইরাসের চেয়েও জঘন্য। সবার ক্ষোভ এখন রাজাপক্ষে ভাইদের বিরুদ্ধেই।
২০১৯ সালের নির্বাচনে বড় জয় নিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন গোতাবায়া রাজাপক্ষে। তবে তারপর শক্তভাবে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সামাল দিতে পারেননি। শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে তারল্য সংকটও দেখা দিয়েছে। চীন, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ঋণদাতাদের কাছে শ্রীলঙ্কার ঋণের পরিমাণ ২ হাজার ১০০ কোটি পাউন্ড। অপরদিকে দেশটির রিজার্ভে রয়েছে মাত্র ১৭০ কোটি পাউন্ড। বৈদেশিক মুদ্রার অভাবে তারা জ্বালানি তেল, ওষুধ এবং প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনতেও পারছে না।
শ্রীলঙ্কার মানুষ বর্তমানে দিশেহারা। প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়েছে রাজধানী কলম্বো শহর জুড়ে। শহরের অনেক এলাকা বর্তমানে অচল। তরুণ বিক্ষোভকারীদের যুক্তি এখন একটাই- এই সরকার অযোগ্য। দেশকে তারা ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়েছেন। তারা প্রতিশ্রুতি রাখেননি। মানুষ আর মোটেও কষ্ট পেতে রাজি নয়। এমনকি শোনা যাচ্ছে যে, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একাংশও আন্দোলনকারীদের সমর্থন করছে। এ অবস্থায় দেশটির অনেক নাগরিকই মনে করছেন যে, শ্রীলংকা হয়তো গৃহযুদ্ধের দিকে ধাবিত হতে পারে। -অনলাইনের তথ্য অবলম্বনে।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকার চেষ্টা করি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।