রাস্তার ফুল বিক্রেতা সারিতা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন গবেষক!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ জন্মের পর হতেই ফুলের সান্নিধ্য পেলেও কাটা-ই ছিল তারজন্য সহচর। জীবনের সেই ঘাত-প্রতিঘাত পার করে রাস্তায় রাস্তায় ফুল বিক্রি করা মেয়েটি এখন যুক্তরাষ্ট্রের ইউভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ায় পিএইচডি করার সুযোগ পেয়েছেন!

মুম্বাইয়ের ২৮ বছর বয়সী সারিতা মালির কাছে সবকিছুই যেনো কল্পনাই মনে হয়। এনডিটিভির কাছে তিনি তুলে ধরেন ফুল-কাটাময় জীবনের সেইসব গল্প।

সারিতা এখন দিল্লির জহরলাল নেহেরু ইউনিভার্সিটিতে হিন্দি সাহিত্যের ওপর পিএইচডি করছেন। একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমএ ও এমফিল ডিগ্রিও অর্জন করেন। আগামী জুলাইয়ে জমা দেবেন পিএইচডির থিসিস।

Related Post

নিজের জীবন সংগ্রামের গল্প তুলে ধরতে গিয়ে সারিতা বলেছেন, প্রতিটি মানুষের জীবনেই উত্থান-পতন রয়েছে বলে আমি মনে করি। প্রত্যেকেরই নিজের লড়াইয়ের কোনো না কোনো গল্প রয়েছে। সৌভাগ্য কিংবা দুর্ভাগ্যবশত যাই বলেন না কেনো; আমি এমন এক সমাজে জন্মেছি যেখানে সমস্যা ছিল আমার জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

গণেশ চতুর্থী, দিওয়ালি বিভিন্ন বড় বড় ধর্মীয় উৎসবে বাবার সঙ্গে সারিতা ফুল বিক্রি করতেন। স্কুলের দিনগুলোতে এই কাজটিই তিনি করেছেন। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর যখনই ছুটি পেতেন তখন তিনি ফুলের মালা-মুকুট বানাতেন।

সারিতা জন্মের পর থেকেই শুধু ফুলই দেখে এসেছেন। তার জীবনের দুই পিঠ একদিকে ফুল বিক্রি করে বেঁচে থাকার এক সংগ্রম, অপরদিকে ছিল আশা বা আকাংখা।

বাবা-মা ও সারিতা

বাবা-মা, একটি বড় বোন এবং ছোট দুই ভাইকে নিয়ে সারিতা মালির পরিবার। একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তিই হলেন তার বাবা। দুই বছর আগে করোনা প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর সারিতার বাবার কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এর আগ পর্যন্ত ফুল বিক্রিই ছিল তাদের উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন। লকডাউনে ফুল বিক্রির কাজ বন্ধ হয়ে গেলে গ্রামের বাড়ি জৈনপুরে চলে যান তার বাবা।

সারিতার জানান, এতো নানা রকম সমস্যায় জর্জরিত জীবনে কঠোর পরিশ্রম করে গেছেন তিনি। লক্ষ্যের প্রতি অবিচল ও পরিবারের সমর্থনই তাকে সাফল্যের চূঁড়ায় নিয়ে আসতে সাহায্য করেছে।

মূলত তার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয় জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়। সারিতা জানিয়েছেন, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর আমার জীবনের মোড় একেবারে ঘুরে যায়। এখানে ভর্তি না হলে এখন কোথায় থাকতাম তা আমি নিজেও জানি না। আমার মতো প্রান্তিক পর্যায় থেকে উঠে আসা অনেক শিক্ষার্থীকে জওহরলালের মতো বিশ্ববিদ্যালয় অনেক আশা দেখাচ্ছে।

২০১০ সালে সারিতা প্রথম কাজিনদের কাছ থেকে জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে জানতে পারেন। তখন অনেককিছুই তার কাছে অপরিচিত ছিল। সেই সময় ইন্টারনেটও তার কাছে সহজলভ্য ছিল না। এমনকি স্নাতক সম্পন্ন করার পূর্ব পর্যন্ত তার কোনো স্মার্টফোন ছিল না। কাজিনরা হঠাৎ একদিন তাকে কটাক্ষ করে বলেছিলেন যে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে কী করবে সে! এই কথায় সারিতা মনে বড়ই আঘাত পান। তারপর তিনি স্নাতক প্রথম বর্ষ হতেই জেএনইউতে ভর্তির জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকেন। পরীক্ষা দিয়ে ২০১৪ সালে তিনি এখানে মাস্টার্সে ভর্তির সুযোগ পেয়ে যান।

দিনের পর দিন তিনি অনেক পরিশ্রম করেছেন ও সেখান থেকে অনেক কিছু শিখেছেনও- জানিয়েছেন সারিতা।

তার এই জীবন সংগ্রামে তিনি চারপাশের মিশ্র প্রতিক্রিয়ার মুখোমুখিও হয়েছেন বহু। ‘অনেকেই আমাকে দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছেন, অনেকেই বলেছেন, আমার বাবা সামান্য কাজ করে, অথচ আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছি। আবার অনেকেই প্রশ্ন করছেন যে, বছরের পর বছর ধরে আমি কী পড়াশোনা করছি ইত্যাদি ইত্যাদি’, জানিয়েছেন সারিতা মালি।

‘এখন মাঝে মা-মধ্যেই আমার মনে হয় আমি যেনো স্বপ্ন দেখছি। তবে এখন আমার কাঁধে অনেক দায়িত্ব বলে আমি মনে করি।’

সারিতা জেএনইউ’র কনিষ্ঠ গবেষকদের মধ্যে একজন। ২২ বছর বয়সে এমফিলের জন্য এখানে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি।

‘যখনই আমি পেছনের লড়াইয়ের কথা মনে করি, আমি যে সমাজ থেকে এসেছি সেদিকে তাকাই- আমার এই জার্নিটা যেনো বিশ্বাসই হয় না। জেএনইউতে আসার পর আমার বিশ্বাস জন্মেছে যে, চাইলে আমরা অনেক কিছুই অর্জন করতে পারি’, বলেন স্বপ্ন জয় করা এই অদম্য তরুণী।

করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়

# সব সময় ঘরে থাকার চেষ্টা করি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।

This post was last modified on মে ২৩, ২০২২ 12:12 অপরাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার

Recent Posts

গাড়ির ধাক্কায় স্কুটার থেকে ছিটকে সেতুর পিলারের খাঁজে আটকে পড়লেন এক তরুণী!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভারতের উত্তরপ্রদেশের নয়ডায় বরাতজোরে প্রাণে রক্ষা পেলেন এক তরুণী। গাড়ির…

% দিন আগে

ভারতের মুর্শিদাবাদের ঐতিহাসিক ফুটি মসজিদ

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ শুভ সকাল। শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ খৃস্টাব্দ, ১২ আশ্বিন ১৪৩১…

% দিন আগে

মাইগ্রেনের যন্ত্রণা ও মানসিক চাপ সামলাতে চুমুক দিতে পারেন কয়েকটি উষ্ণ পানীয়ে

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মাইগ্রেনের ব্যথায় ‘পেনকিলার’ জাতীয় ওষুধ দেওয়া হয়। তবে দীর্ঘদিন ধরে…

% দিন আগে

মার্ক জাকারবার্গের হাতের বিলাসবহুল ঘড়ির দাম কতো জানেন?

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার ও থ্রেডস অ্যাপের মূল প্রতিষ্ঠান মেটার…

% দিন আগে

উত্তরায় জসীমউদ্দিনে বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড ডোমিনোজ পিৎজা’র ৩৪তম শাখার উদ্বোধন

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় পিৎজা চেইন এবং দেশের শীর্ষ পিৎজা ব্র্যান্ড…

% দিন আগে

৯ বছর পরে বলিউডে ফিরছেন অন্য এক আদনান সামি!

দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ৯ বছর পরে বলিউডে ফিরছেন অথচ অন্য এক আদনান সামি!…

% দিন আগে