দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এ বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর সঠিকভাবে হিজাব না পরার অভিযোগে ইরানের নীতি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন ২২ বছর বয়সী কুর্দি তরুণী মাশা আমিনি। এর তিন দিন পর ১৬ সেপ্টেম্বর আমিনির পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু ঘটে।
পরিবার এবং বহু ইরানির ধারণা, পুলিশের নির্যাতনে মারা যান আমিনি। তবে ইরান সরকার এবং দেশটির পুলিশ এই দাবি অস্বীকার করে আসছে। এমন অবস্থায় ইরানজুড়ে তুমুল বিক্ষোভ শুরু হয়। টানা দুই মাসেরও বেশি সময় যাবত চলে এই বিক্ষোভ।
দেশটিতে এবারের বিক্ষোভের উল্লেখযোগ্য বিষয়ই হলো, বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিচ্ছেন নারীরা। সেইসঙ্গে বিক্ষোভে নারীদের অংশগ্রহণ ছিল চোখের পড়ার মতোই। নারীরা রাস্তায় নেমে হিজাব পুড়িয়ে এই ঘটনার প্রতিবাদ জানায়। অনেকেই প্রকাশ্যে চুল কেটে বিক্ষোভে শামিল হন। তাছাড়াও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও হিজাববিরোধী প্রতিবাদ ছিল তুঙ্গে।
বিক্ষোভ দমাতে দেশটির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি কড়া হুঁশিয়ার বার্তা দিয়েছেন। থেমে ছিল না দেশটির সেনাবাহিনী। এরপরেও সব হুমকি উপেক্ষা করে দেশটির রাস্তায় নামে হাজার হাজার প্রতিবাদকারী। দেশটিতে এবারের বিক্ষোভে স্লোগান ছিলো, ‘নারী, জীবন, মুক্তি’-যা মূলত দেশটিতে ধর্মীয় মৌলবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান এবং সমতার আহ্বান।
বিক্ষোভকারীরা জানিয়েছে, তারা যদি এখনই এর বিরুদ্ধে রুখে না দাঁড়ান তাহলে একদিন তাদেরও একইভাবে ভাগ্য বরণ করতে হতে পারে। দেশটিতে এলিট রাজনীতিকদের দুর্নীতি, ৫০ শতাংশের বেশি মুদ্রাস্ফীতির কারণে দারিদ্রের ঊর্ধ্বগতি, পারমাণবিক আলোচনায় অচলাবস্থা ও সামাজিক এবং রাজনৈতিক স্বাধীনতার অভাব তরুণসহ একটি বিরাট জনগোষ্ঠীকে হতাশ করে তুলছে। যার মধ্যেই ইরানজুড়ে এমন নজিরবিহীন বিক্ষোভ দেশটির সরকারকে প্রবলভাবে চাপে ফেলেছে।
ইরানে ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের ইরানি সমাজে নারীরাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। বিপ্লবের পর দেশটির নারীদের হিজাব পরতে বাধ্য করা হয়। সেইসঙ্গে নারীরা তাদের অনেক অধিকারও হারিয়ে ফেলেন। যার মধ্যে রয়েছে ভ্রমণ এবং কাজের অধিকার ও ৭ বছরের বেশি বয়সী সন্তানকে রাখার বিষয়।
বিবিসির খবরে বলা হয়, অবশেষে প্রবল বিক্ষোভে মুখে ইরান সরকার পিছু হটেছে। দেশটি শেষ পর্যন্ত তাদের নীতি পুলিশ বিলুপ্ত করেছে। দেশটির অ্যাটর্নি জেনারেল একটি ধর্মীয় সম্মেলনে বলেছেন যে, ইসলামি নীতি-নৈতিকতা নিয়ে খবরদারি করার জন্য তৈরি এই বিশেষ পুলিশ বাহিনীকে ভেঙে দেওয়া হয়েছে।
অ্যাটর্নি জেনারেলকে উদ্ধৃত করে বার্তা সংস্থা এএফপি, গার্ডিয়ানসহ ডজন খানেক আন্তর্জাতিক মিডিয়া খবর দিয়েছে যে, হিজাব বাধ্যকতামুলক করে জারি করা ওই আইনটি সরকার পুনর্বিবেচনা করছে। দেশটি বাধ্যতামূলক হিজাব আইন তুলে নিতে পারে- এমন আভাসও পাওয়া যাচ্ছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।
তবে দেশটির সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিলেও চলমান বিক্ষোভ নিভে যাওয়ার তেমন কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে বিবিসির ফার্সি বিভাগের সাংবাদিক। কারণ হলো, বিক্ষোভকারীরা নতুন করে তিন দিনের ধর্মঘটও ডেকেছে।
এছাড়াও বিক্ষোভ দমাতে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনীর তাণ্ডবে দেশটিতে যে চার শতাধিক বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন বলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা দাবি করেছে তাও এক প্রকার মেনে নেয় ইরান। যদিও দেশটির পক্ষ হতে বলা হয়েছে, নিহতের সংখ্যা অন্তত দুই শতাধিক। তাই এখন সময়ের অপেক্ষা দেশটিতে ইসলামি প্রজাতন্ত্রের মেয়াদ আর কতদিন থাকতে পারে?
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকার চেষ্টা করি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।