দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গরমে বাইরের অশুদ্ধ পানি কিংবা খাবার থেকেও দেহে পৌঁছে যেতে পারে টাইফয়েডের জীবাণু। এই রোগটির লক্ষণ, প্রতিরোধ, চিকিৎসা সম্পর্কে জানুন এই প্রতিবেদনে।
গরমে এক নাজুক অবস্থা। সকালে ঘরের বাইরে বেরনোই দুষ্কর। বেলা বাড়তে না বাড়তেই রাস্তাঘাট ফাঁকা। ঘরেও শান্তি নেই। ফ্যান থেকে এক হাত দূরে গেলেই ঘেমে নেয়ে একেবারে গোসল। এমনকী রাতে বিছানায় শান্তির ঘুমও হারাম। বিছানা থেকে যেনো আগুন বেরচ্ছে। এতোটাই গরমের দাপট চলছে।
এমন গলদঘর্ম পরিস্থিতিতে পানিই হলো আমাদের পরম ভরসা। গলায় পানি ঢালতে পারলেই যেনো পাওয়া যাচ্ছে আরাম। শরীরের ভিতর পর্যন্ত পৌঁছে যাচ্ছে শান্তির এক বার্তা। সে কারণে জুস, শরবত, ঠাণ্ডা পানির দোকানে লাইন পড়ে যাচ্ছে।
তবে একটি কথা মনে রাখবেন, এই সময় বাইরের পানি বা কাটা ফল খাওয়ার জন্য অনেকেই বর্তমানে আক্রান্ত হচ্ছেন টাইফয়েডে। এই রোগটি সবসময়ই কিন্তু মারাত্মক। তাই প্রথম থেকেই সতর্ক থাকা দরকার।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে যে, সালমোনেল্লা টাইফি নামক এক ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থেকে মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। এই ব্যাকটেরিয়াটি আমাদের আশপাশেই রয়েছে। তাই চোখ-কান খোলা রাখতে হবে।
কী লক্ষণ থাকে?
আমেরিকার সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন জানিয়েছে, টাইফয়েডের লক্ষণগুলি হলো:
# দুর্বলতা
# পেটে ব্যথা
# মাথা ব্যথা
# ডায়ারিয়া কিংবা কোষ্ঠকাঠিন্য
# কাশি
# খিদে না পাওয়া
তবে এই অসুখের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ উপসর্গই হলো জ্বর। এক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তির খুব জ্বর আসে। জ্বর কিছুতেই যেনো কমতে চায় না। এমনকী ওষুধ খাওয়ার পরও শরীরের তাপমাত্রা কমেই না।
কাদের ঝুঁকি বেশি?
সাধারণত আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশেই এই অসুখ বেশি দেখা যায়। এই রোগের প্রকোপ একটি অঞ্চল জুড়েও দেখা যেতে পারে। অর্থাৎ একটা পাড়া কিংবা ওয়ার্ডে অনেকের একসঙ্গে এই অসুখে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়াও বাইরের পানি-খাবার যারা খান তাদের এই রোগের খপ্পরে পড়ার আশঙ্কাও বেশি থাকে। সেইসঙ্গে যাদের ইমিউনিটি কম তাদেরও সবধানে থাকাটা জরুরি। এখানে বলে রাখা দরকার, আপনার আশপাশে যদি কারও টাইফয়েড হয়ে থাকে, তবে আজ থেকেই পানি ফুটিয়ে খাওয়া শুরু করুন। খাবার ভালো করে রান্না করুন। কোনও কিছু যেনো কাঁচা না থাকে।
কী সমস্যা হতে পারে?
টাইফয়েডের ঠিক সময় চিকিৎসা না হলে প্রাণ নিয়েও টানাটানি পড়তে পারে। সেক্ষেত্রেও এই সমস্যাগুলো হতে পারে-
# অন্ত্র ফুটো হয়ে যেতে পারে।
# হার্টের পেশিতে প্রদাহ হতে পারে।
# নিউমোনিয়া হতে পারে।
# কিডনি-ব্লাডার ইনফেকনশন হতে পারে।
# প্যাংক্রিয়াসে প্রদাহও হতে পারে।
এইসব প্রতিটি শারীরিক সমস্যাই প্রাণঘাতী। তাই লক্ষণ দেখা মাত্রই চিকিৎসকের পরামর্শ মতো চিকিৎসা শুরু করুন যতো দ্রুত সম্ভব। তথ্যসূত্র: এই সময়।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকার চেষ্টা করি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।