দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গরমের এই সময় ডিম খাওয়া কী আদৌ ঠিক? এই খাদ্য খেলে কি শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যেতে পারে? এই সকল জরুরি প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ।
মাঝে মধ্যেই বৃষ্টির কারণে গরমের তীব্রতা একটু কমলেও এখনই যে তাপপ্রবাহের হাত থেকে নিস্তার নেই, তা বলাই যায়! অবস্থা এমন যে, এসি ছাড়া থাকাই দায় হয়েছে! তাই সবাই এখন এসি কেনার পিছনেই ছুটছেন। ইলেকট্রনিক্সের দোকানে শীতাতপ যন্ত্র কেনার ভিড় যেনো দিনে দিনে বাড়ছে তো বাড়ছেই। পরিস্থিতি এমন একটা জায়গায় পৌঁছেছে যে, অনেকেই এসি কিনতে চেয়েও পাচ্ছেন না। অর্থাৎ চাহিদা থাকলেও জোগানই নেই- এমন অবস্থা হয়েছে।
এমন জ্বালাপোড়া গরমে ঘরের বাইরে পা দিলেই যা তা অবস্থা। ঘেমে নেয়ে স্নান হয়ে যাচ্ছেন সকলেই। এমন পরিস্থিতিতে ডায়েটে মন না দিলেও শরীর খারাপ নিশ্চিত।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই গরমে শরীর সুস্থ রাখতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই ডায়েটে পরিবর্তন আনতেই হবে। এমন খাবার খেতে হবে যা শরীর ঠাণ্ডা রাখার ক্ষেত্রে বেশ কার্যকরী। সেইসব খাবার এড়িয়ে চলতে হবে যা দেহে হিট বাড়িয়ে দেয়।
অনেকেই মনে করেন যে, এই তীব্র গরমে ডিম খেলেই নাকি বেড়ে যায় শরীরের তাপমাত্রা। এই তথ্য কী আদৌ বিশ্বাসযোগ্য? এই বিষয়ে জানিয়েছেন কোলকাতার বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ কোয়েল পাল চৌধুরি।
ডিমের পুষ্টিগুণ
ডিম পুষ্টিগুণের ভাণ্ডার। এতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ ও প্রোটিন। দিনে দু’টি ডিম খেলে পাওয়া যায় প্রায় ১২.১ গ্রাম প্রোটিন। এছাড়াও এতে রয়েছে কোলেস্টেরল, ক্যালশিয়াম, আয়োডিন, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রণ, জিঙ্ক, পটাশিয়াম, ফসফরাস, ক্যারোটিনয়েডস ইত্যাদি। তাই ডিম হচ্ছে স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটি জিনিস। এই খাবার ছোট্ট শিশু থেকে শুরু করে একদম বৃদ্ধ পর্যন্ত সবাই অনায়াসে খেতে পারেন। সেই দিক থেকে দেখতে গেলে গরমে ডিম খাওয়া কোনও রকম সমস্যার কিছু নয়। বরং পুষ্টির ঘাটতি মেটে এই সস্তার খাবারটি খেলে।
ডিম খেলে শরীর হিট হয়?
ঘরের বাইরে প্রচণ্ড গরম। তাই শরীরের তাপমাত্রা এমনিতেই বেড়েই যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে খাবার নিয়ে সচেতন থাকাটাও জরুরি। তবে দিনে ১ থেকে ২টি ডিম খেলে তেমন কোনও সমস্যার আশঙ্কাও নেই, এমনটি জানিয়েছেন পুষ্টিবিদ কোয়েল পাল চৌধুরি। তবে অনেকেই দিনে ৫ থেকে ৬টি বা তারও বেশি সংখ্যায় ডিম খেয়ে নেন। এই কারণে প্রোটিন মেটাবলিজমে ব্যাঘাত ঘটে ও দেহের উষ্ণতাও বাড়তে পারে। এমনকি হজমের সমস্যাও দেখা দিতে পারে। তাই অত্যধিক সংখ্যায় ডিম খাওয়া মোটেও উচিত নয়।
কী ভাবে ডিম খাওয়া উচিত?
যে কোনও ঋতুতেই হোক না কেনো ডিম সিদ্ধ করে খাওয়াই ভালো। ডিম সিদ্ধ করে খেলে শরীরও সুস্থ থাকে। এতে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কাও কমে। চাইলে আপনি পোচ করে কিংবা ভেজেও ডিম খেতে পারেন। তবে এর থেকে তেমন একটা উপকার আসবে না। বরং দেহে ফ্যাটের মাত্রা আরও বাড়বে।
অনেকেই মনে করেন, হাফ বয়েল ডিম খেলে নাকি বেশি উপকার পাওয়া যায়। যদিও বিষয়টি একবারেই তেমন নয়। অর্ধসিদ্ধ ডিম খেলে বরং নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।। এমনকি ডায়রিয়া হওয়ার আশঙ্কাও থেকে যেতে পারে।
ডিম, মাছ, মাংস একসঙ্গে নয়
একসঙ্গে ডিম, মাছ, মাংস খাওয়া মোটেও উচিত নয়। এতে একসঙ্গে অনেকটা প্রোটিন শরীরে চলে যায়। তখন প্রোটিন বিপাকে সমস্যাও হতে পারে। এর থেকে দেহে হিটও তৈরি হয়। এমনকি নাইট্রোজনের সমতাও বিগড়ে যেতে পারে। তাই চেষ্টা করুন প্রতিটি মিলেই যে কোনও এক ধরনের প্রোটিন রাখার। অর্থাৎ ব্রেকফাস্টে ডিম, দুপুরে চিকেন আর রাতে মাছ। এভাবে নিজের মতো করে ভাগ করে নিতে পারেন।
পর্যাপ্ত পানিপান করুন
কোয়েল পাল চৌধুরির মনে করেন, এই গরমে শরীরকে ভিতর থেকে ঠাণ্ডা রাখতে হলে আপনাকে খেতে হবে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি। বাইরে বের হলে ৩ থেকে ৪ লিটার পানিপান করা অবশ্যই জরুরি। তবে শরীর ঠাণ্ডা রাখতে পারবেন। এছাড়াও পানির পাশাপাশি ডাবের পানি এবং স্যালাইন পান করতে পারেন, তাতে উপকার হবে। তথ্যসূত্র: এই সময়।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয়
# সব সময় ঘরে থাকার চেষ্টা করি।
# জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হলে নিয়মগুলো মানি, মাস্ক ব্যবহার করি।
# তিন লেয়ারের কাপড়ের মাস্ক ইচ্ছে করলে ধুয়েও ব্যবহার করতে পারি।
# বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর পোশাক ধুয়ে ফেলি। কিংবা না ঝেড়ে ঝুলিয়ে রাখি অন্তত চার ঘণ্টা।
# বাইরে থেকে এসেই আগে ভালো করে (অন্তত ২০ সেকেণ্ড ধরে) হাত সাবান বা লিকুইড দিয়ে ধুয়ে ফেলি।
# প্লাস্টিকের তৈরি পিপিই বা চোখ মুখ, মাথা একবার ব্যবহারের পর অবশ্যই ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
# কাপড়ের তৈরি পিপিই বা বর্ণিত নিয়মে পরিষ্কার করে পরি।
# চুল সম্পূর্ণ ঢাকে এমন মাথার ক্যাপ ব্যবহার করি।
# হাঁচি কাশি যাদের রয়েছে সরকার হতে প্রচারিত সব নিয়ম মেনে চলি। এছাড়াও খাওয়ার জিনিস, তালা চাবি, সুইচ ধরা, মাউস, রিমোট কন্ট্রোল, মোবাই, ঘড়ি, কম্পিউটার ডেক্স, টিভি ইত্যাদি ধরা ও বাথরুম ব্যবহারের আগে ও পরে নির্দেশিত মতে হাত ধুয়ে নিন। যাদের হাত শুকনো থাকে তারা হাত ধোয়ার পর Moisture ব্যবহার করি। সাবান বা হ্যান্ড লিকুইড ব্যবহার করা যেতে পারে। কেনোনা শুকনো হাতের Crackle (ফাটা অংশ) এর ফাঁকে এই ভাইরাসটি থেকে যেতে পারে। অতি ক্ষারযুক্ত সাবান বা ডিটারজেন্ট ব্যবহার থেকে বিরত থাকাই ভালো।