দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভিটামিন ডি ও ক্যালশিয়ামের ওষুধ খেয়ে কিছুদিন সামাল দেওয়া গেলেও, সেটি কিন্তু হাড়ের ক্ষয় প্রতিরোধ করার স্থায়ী সমাধান নয়।
বয়স বাড়লে হাড়ের ক্ষয় হওয়া একেবারেই স্বাভাবিক। তা প্রতিরোধ করতে গেলে নিয়মিতভাবে ক্যালশিয়ামে সমৃদ্ধ খাবার ও শরীরে পর্যাপ্ত রোদ লাগাতে হবে। বাইরে থেকে ভিটামিন ডি ও ক্যালশিয়ামের ওষুধ খেয়ে কিছু দিন সামাল দেওয়া যেতে পারে, তা হাড়ের ক্ষয় প্রতিরোধ করার স্থায়ী কোনো সমাধান নয়। নির্দিষ্ট একটা বয়সের পর ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে গেলে, তার প্রভাবে মহিলাদের হাড় দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। তাই অস্টিয়োপোরসিসের ঝুঁকি তখন অনেকটাই বেড়ে যায়। হা়ড়ের প্রধান উপাদান হলো ক্যালশিয়াম ও ফসফরাস। তাছাড়াও, নানা ধরনের খনিজের সম্মিলিত প্রয়াসে হাড়ের স্বাস্থ্যও উন্নত হয়। এই সব উপাদানের মধ্যে যে কোনও একটির মাত্রা কমে গেলে হাড় তখন ভঙ্গুর হয়ে পড়ে।
কাদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি সবথেকে বেশি?
# ঋতুনিবৃত্তির পর মহিলাদের শরীরে ইস্ট্রোজেন হরমোনের পরিমাণ অনেক কমে যায়। যার প্রভাবে ক্যালশিয়ামের পরিমাণ থকন কমতে শুরু করে। সুতরাং অস্টিয়োপোরসিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও থেকে যায়।
# যারা দিনের অনেকটা সময় ঘরের মধ্যে কাটান, তাদের অস্টিয়োপোরসিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও বেশি। এ ছাড়াও, তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীদেরও অনেক সময় শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে বসে কাটাতে হয়, তাই তারাও এমন সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারেন যে কোনও সময়।
# যারা রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস কিংবা বাতের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের এই রোগ খুব দ্রুত আক্রমণ করতে পারে।
অস্টিয়োপোরসিস কী প্রতিরোধ করা সম্ভব?
সাধারণত অস্টিয়োপোরসিস বেশি বয়সে ধরা পড়ে বলেই হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকার কোনও কারণই নেই। কম বয়স থেকে নিয়মিত শরীরচর্চা করলে ও ভিটামিন ডি, ক্যালশিয়ামে সমৃদ্ধ খাবার খেলে এই রোগ কিছুটা হলেও ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব। সেইসঙ্গে, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলকেই চিকিৎসকরা নিয়মিতভাবে রক্তে ভিটামিন ডি এবং ক্যালশিয়ামের মাত্রার পরীক্ষা করাতে পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org