দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ রাজধানীর যানজট নিরসনে এক নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে। সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। রবিবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টা থেকে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে যান চলাচল শুরু হয়।
আজ (রবিবার) সকাল ৯টায় টোল প্লাজাগুলো থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, প্রথম ৩ ঘণ্টায় এই উড়াল সড়ক ব্যবহার করেছে ২,১১৭টি গাড়ি।
যে কারণে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মাধ্যমে কাওলা থেকে ফার্মগেট পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে মাত্র ১০ মিনিটে অতিক্রম করা যাচ্ছে।
যদিও এক্সপ্রেসওয়েতে মহানগরের কোনো যাত্রীবাহী বাসকে চলাচল করতে দেখা যায়নি। তবে অফিসগামী বাস ও বিআরটিসি বাসকে চলাচল করতে দেখা যায। এছাড়াও সকাল থেকে অফিসগামী ব্যক্তিগত গাড়ি ও কাভার্ডভ্যানকে চলাচল করতে দেখা যায়।
গতকাল শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বিমানবন্দর সংলগ্ন কাওলা অংশে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারপর প্রথম যাত্রী হিসেবে টোল দিয়ে কাওলা থেকে ফার্মগেটের উদ্দেশে রওনা দেন প্রধানমন্ত্রী। বিকেল ৪টার দিকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে থেকে নামে প্রধানমন্ত্রীর গাড়ি।
রাজধানীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে নিরবচ্ছিন্ন চলাচল নিশ্চিত করার জন্য এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্প ২০০৯ সালে হাতে নেওয়া হয়। ২০১১ সালের ১৯ জানুয়ারি প্রকল্পটি নির্মাণে চুক্তি স্বাক্ষর হয়। তবে জমি বুঝে না পাওয়া ও নকশা জটিলতায় এর নির্মাণ কাজে কেটে গেছে অনেক বছর। অবশেষে ২০২০ সালের ১ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ।
শুরুতে এক্সপ্রেসওয়েটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছিলো ৮ হাজার ৭০৩ কোটি টাকা। কিন্তু প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সর্বশেষ ট্যাক্স এবং ভ্যাটসহ নির্মাণ ব্যয় সর্বশেষ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার কোটি ৭০ লাখ টাকা। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কার্যক্রম এখনও পুরোপুরি শেষই হয়নি। তবে রাজধানীর যানজট কমাতে প্রকল্পের বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট অংশ খুলে দেওয়া হলো। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করে কাওলা থেকে ফার্মগেটে পৌঁছানো যাবে মাত্র ১০ মিনিটে। পুরো কাজ শেষ হলে ২০ মিনিটেই পাড়ি দেওয়া যাবে কাওলা হতে কুতুবখালী পর্যন্ত। তবে কাজ অব্যাহত রয়েছে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org
